ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ॥ ইরাকে সুন্নিদের প্রত্যাশা পূরণ হবে কি?

প্রকাশিত: ০২:৩৪, ২৬ জানুয়ারি ২০১৫

বিচার ব্যবস্থার সংস্কার ॥ ইরাকে সুন্নিদের প্রত্যাশা পূরণ হবে কি?

আওয়াতিফ আল আজাওয়ি ইরাকের এক সুন্নি নারী। জেলে বন্দী স্বামীকে দেখতে একটি সেভেনআপের ক্যান, দুটি স্যান্ডউইচ ও একটি গায়ে মাখার ক্রিম আঁকড়ে ধরে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকেন বাগদাদের প্রধান বিচারিক ভবনের বাইরে বাগানে। যদিও তিনি জানেন, তাঁর স্বামীর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেন, আমি এখানে সময় কাটাই। কারণ আমার মনে হয়, আমি আমার স্বামীর কাছেই আছি। বাড়িতে থাকলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়। সুন্নি নারীরা সেখানে প্রতিদিন জড়ো হন তাঁদের পরিবারের পুরুষ সদস্য সম্পর্কে জানতে। এদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে। তাওফিকা আব্বাস নামে এক নারী জানান, ২০১৪ সালের মার্চ মাসে ইরাকী সেনাবাহিনী আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আজও জানি না, তার কী হয়েছে। প্রিয়জনদের ভাগ্যে কী ঘটেছে সুন্নি নারীদের তা জানতে না পারার দুঃখ ও বেদনার প্রেক্ষাপটে দেশটির প্রেসিডেন্ট হায়দার আল-আবাদি ইরাকের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছেন। এই বিচার ব্যবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার, বিশেষ করে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন আটক রাখা, নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় ইত্যাদি দেশটির সংখ্যালঘু সুন্নি সম্প্রদায়ের প্রাথমিক অভিযোগগুলোর অন্যতম। এর চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে দেশটিকে। ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জিহাদীরা সরকারের বিরুদ্ধে সুন্নিদের ক্ষোভ ব্যবহার করে ইরাকের বিশাল অংশ দখল করতে সফল হয়েছে। সুন্নিদের ক্ষোভ নিরসনে আবাদির সামর্থ্য নির্ভর করছে বিচার বিভাগের সংস্কারের ওপর। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইরাক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইরিন এভারস বলেছেন, আবাদি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করতে পারেন তা হলো সুন্নি জনগণকে অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। সংস্কার করতে গিয়ে আবাদিকে শুধু তাঁর পূর্বসূরি নূরি কামাল আল-মালিকীর তিক্ত সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষই শুধু নয়, যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বে সৃষ্ট অস্থিরতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। নিজেকে সবার নেতা বলে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন আবাদি। তিনি তখন বিচার বিভাগ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বিচার বিভাগীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার না করা এবং নির্দোষ ঘোষণার পরও যারা কারাগারে বন্দী আছেন তাঁদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই ইস্যুতে আবাদির প্রতিশ্রুতির বেশিরভাগই পূরণ হয়নি। Ñনিউইয়র্ক টাইমস
×