ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হয়ে ফের ঢাকায় ডি ক্রুইফ

ডাচ্ কোচের লক্ষ্য সেমিফাইনাল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

ডাচ্ কোচের লক্ষ্য সেমিফাইনাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে অন্তত সেমিফাইনালে দেখতে চান বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। এ আসরে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের নিয়ে কতটা আশার আলো দেখছেন? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘টুর্নামেন্ট নিয়ে আমি আশাবাদী। ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা জিততে চাই এবং সেমিফাইনাল খেলতে চাই।’ কথাগুলো যার, তিনি অনেক নাটকীয়তা আর রোমাঞ্চের জন্ম দিয়ে হল্যান্ড থেকে আকাশপথে অবশেষে ঢাকার মাটিতে কদম ফেলেছেন শনিবার ভোরে। ঠিকই ধরেছেন, বলা হচ্ছে লোডভিক ডি ক্রুইফের কথা। দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান প্রশিক্ষকের দায়িত্ব নিতে আসা এই ডাচ্ কোচ। বাবার মৃত্যুর কারণে সময় মতো বাংলাদেশে আসতে পারেননি। দেরি হয়ে গেছে অনেক। তাই ঢাকায় নেমে কালবিলম্ব না করেই ক্রুইফ সোজা চলে যান সাভারের জিরানির বিকেএসপিতে। সেখানে পৌঁছেই কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন তিনি। তারপর বিকেলে নেমে পড়েন জাতীয় ফুটবল দলের ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে, যাদের কোচ তিনি ছিলেন আগেও। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ শুরু হতে মাত্র ৪ দিন বাকি। এমন সময় দলের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। এই অল্প সময়ে কোচিং করাটা কতটা কাজে দেবে? এ প্রসঙ্গে ক্রুইফ বলেন, ‘এটা কোন সমস্যা না। দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই আমার পরিচিত। এদের সঙ্গে আমি আগেও কাজ করেছি। ইন্টারনেটে আমি সবসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। সহকারী কোচ সাইফুল বারী টিটুর সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছি। সেই অনুযায়ীই এতদিন অনুশীলন চলেছে।’ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের গ্রুপ প্রতিপক্ষ মালয়েশিয়া এবং শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে মালয়েশিয়াকে শক্ত প্রতিপক্ষ মানছেন ক্রুইফ, ‘মালয়েশিয়া কঠিন দল। শ্রীলঙ্কা পরিচিত দল। তাদের সঙ্গে আমরা কয়েকমাস আগেও খেলেছি। তবে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে তারা ভিন্ন রকম হতে পারে।’ শুক্রবারই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি এবং ন্যাশনাল টিমস কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল শনিবার ক্রুইফের আসার কথা জানিয়েছিলেন। বাফুফে সূত্রে এর আগে জানা গিয়েছিল, দলের দায়িত্ব নেয়ার আগে ক্রুইফের সঙ্গে স্বল্পমেয়াদের জন্য সমঝোতামূলক আনুষ্ঠানিকতা সারা হবে। এরপরই তিনি কাজে নেমে পড়বেন। ক্রুইফের সঙ্গে বাফুফের নতুন করে এ সমঝোতা হয়েছে তাÑ সর্বোচ্চ ২ সপ্তাহের জন্য। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ বাংলাদেশ যতক্ষণ টিকে থাকবে ক্রুইফের চাকরির মেয়াদও হবে ততক্ষণ। ক্রুইফ আসার আগেরদিন শুক্রবার বাফুফের সহসভাপতি তাবিথ আউয়াল তার গুলশান বাসভবনে বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সামনে রেখে অন্য বিদেশী কোচ আনলে খেলোয়াড়দের বুঝতেই সময় চলে যাবে। তাই ক্রুইফকেই ফেরানো হলো।’ তবে এশিয়ান গেমস ও বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য অন্য কোচিং স্টাফ আনা হবে। এখন পর্যন্ত অনেকের সঙ্গেই কথা চলছে তবে এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ কোচিং স্টাফ নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এশিয়ান কোন কোচকে আনার পরিকল্পনাও আছে বাফুফের। আগে ক্রুইফের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তিনি তাঁর বকেয়া পেলে তবেই ঢাকায় আসবেন। জানা গেছেÑ ইতোমধ্যেই ক্রুইফের বকেয়া পাওনার প্রায় ৭০ ভাগই তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে বাফুফে। বাকি ৩০ ভাগ পরিশোধ করতেও বাফুফের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। এই ৩০ ভাগ টাকা আটকে আছে ব্যাংকের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার কারণে। এই টাকাও অচিরেই ক্রুইফ পেয়ে যাবেন বলে জানান সোহাগ। ফুটবলপ্রেমীরা অনেকেই বলছিলেন, ক্রুইফ শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশে আসবেন না। তিনি আসলে তার বকেয়া পাওনা টাকা আদায় করার জন্যই বাফুফেকে প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় দলের কোচ হবেন শুধু বঙ্গবন্ধু কাপের জন্য। বাফুফে যেহেতু তাকে তার পাওনা টাকার বেশিরভাগই পাঠিয়ে দিয়েছে, কাজেই বাবার মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে ক্রুইফ শেষ পর্যন্ত আর আসবেন না! এখন দেখার বিষয়, ক্রুইফকে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দ্রোণাচার্য্য বানিয়ে আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে কেমন রেজাল্ট পায় বাফুফে।
×