ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি বন্ধ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি বন্ধ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ২৪ জানুয়ারি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’টি মিসিং লিংক ছিল পদ্মাসেতু ও মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতু। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই কালনা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এশিয়ান হাইওয়েসহ আন্তঃদেশীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে আর কোন বাধা থাকল না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। শনিবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত ভিডিও-কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কালনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত নড়াইল, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও-কনফারেন্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণ করে তিনি দক্ষিণাঞ্চলের গোপালগঞ্জ-পিরোজপুর মহাসড়কে দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত পাটগাতী শেখ লুৎফর রহমান সেতু, টুঙ্গিপাড়ায় বিআরটিসির ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও গোপালগঞ্জ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, গোপালগঞ্জসহ এ অঞ্চলের মানুষ সব সময়ই অবহেলিত। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এসব অবহেলিত মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সারা দেশের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমাদের কাজ, সেই স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৪ ভাগ কমিয়ে এনেছি। আগামী চার বছরে আরও ১০ ভাগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও বিআরটিসির ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের মাধ্যমে শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও এদেশের মানুষের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু চাকরিই নয়, প্রশিক্ষিত উদ্যোক্তাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ঋণ প্রদান করছে সরকার; যার মাধ্যমে তারা চাকরির জন্য ধর্ণা না দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেদের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন সার্বিক উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। কিন্তু এটা দুঃখজনক যে, বিএনপি-জামায়াত এ উন্নয়নের গতি রোধ ও মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করার জন্য নানা ধরনের নাশকতা চালাচ্ছে। কোন কারণ ছাড়াই তারা এখন আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে। যাত্রীসহ বাসে আগুন দিচ্ছে। অবরোধের নামে বিআরটিসির ৩-৪শ’ বাস পোড়ানো হয়েছে। ৫০-৬০ জন বাস-চালককে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি আড়াই বছরের শিশুও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এ ধরনের আন্দোলন আমরা কখনও দেখিনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেন, যাদের হাতে মানুষ খুন হয়, তারা কার স্বার্থে রাজনীতি করেন। গোপালগঞ্জ থেকে ভিডিও-কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনে অংশ নেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনী এলাকা টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি শেখ মোহম্মদ আবদুল্লাহ, বাগেরহাটের সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হক, নড়াইল জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ বোস, জেলা প্রশাসক আব্দুল গাফ্ফার খান, পিরোজপুর জেলা প্রশাসক একিউএম সামিউল হাসান ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান। এ সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম ভূঁঞা, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার বসু, জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রাজা মিয়া বাটু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর, সাধারণ সম্পাদক এসএম হুমায়ূন কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমান হাওলাদার, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান মিয়া, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ আব্দুল হালিম, সাধারণ-সম্পাদক আবুল বাশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা, সাবেক চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস, পৌর মেয়র সরদার ইলিয়াস হোসেন ও গোপালগঞ্জ পৌর মেয়র রেজাউল হক সিকদার রাজুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরণ রায় জানান, আসছে এপ্রিল মাসেই কালনা সেতুর সমীক্ষার কাজ শুরু হবে।
×