ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরিকল্পিতভাবে শুভকে হত্যার অভিযোগ পরিবারের

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

পরিকল্পিতভাবে শুভকে হত্যার অভিযোগ পরিবারের

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ সরকারী উর্ধতন এক কর্মকর্তার একমাত্র ছেলে মোস্তামসির আশরাফ শুভকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের পরিবারের দাবি, ব্যবসার অংশীদারিত্ব দখলের জন্য আশরাফকে হত্যা করা হয়। এই অভিযোগ শুভর কথিত বান্ধবী ও ব্যবসায়িক অংশীদার জান্নাতী হোসেন নেহা নামের মাদকাসক্ত এক নারীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি সরকারের একাধিক সংস্থা তদন্ত করছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। ৩৪তম বিসিএসের (প্রিলিমিনারি) পাস করা মেধাবী ছাত্র শুভকে হত্যার পর দুর্ঘটনার ঘটনা সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে শুভর পরিবার। গত ১১ জুলাই গভীর রাতে রাজধানীর মহাখালীর বিএএফ শাহীন কলেজের কাছে তেজগাঁও থানা পুলিশের একটি পিকআপভ্যানের সঙ্গে কথিত সংঘর্ষে প্রাণ হারান আরেকটি প্রাইভেটকারে থাকা মোস্তামসির আশরাফ শুভ (২৭)। ওই সময় শুভর গাড়িতে চালকের আসনে ছিলেন তারই বান্ধবী ও ব্যবসায়িক অংশীদার জান্নাতী হোসেন নেহা নামের এক তরুণী। নিহতের পরিবারের দাবি, শুভকে অন্য কোথাও হত্যার পর লাশ প্রাইভেটকারের সিটে বসিয়ে হত্যার নাটক রচনা করা হয়েছে। কারণ প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলেও ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়া শুভর শার্টের ভাঁজ পর্যন্ত অক্ষত ছিল। এমনকি ঘটনাস্থলে মেলেনি নিহতের জুতাও। আবার কথিত দুর্ঘটনায় গাড়ির দরজার প্রায় অর্ধেক সিটের ভেতরে চলে গেছে। তারপরও কারো গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। বড় ধরনের দুর্ঘটনা বলা হলেও ঘটনাস্থলে কোন রক্তের চিহ্ন পায়নি পুলিশ। বিচিত্র এই ঘটনা দুর্ঘটনা না দুর্ঘটনার নাটক সে বিষয়টি সন্দেহ সৃষ্টি করেছে সব মহলে। ঘটনার পর নিহতের চাচা হান্নান খান বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় জান্নাতী হোসেন নেহা, তার বাবা ডিএম দেলোয়ার হোসেন, ভাই জোবায়ের ও জুনায়েদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে। ওই দুর্ঘটনার পর বিশেষ কারণে মামলার তদন্ত করছে সিআইডি পুলিশ। সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, পুলিশের পিকআপের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণেই শুভর মৃত্যু হয়েছে বলে আলামতে পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন জান্নাতী শুভর গাড়ির ড্রাইভারকে আগেই পাঠিয়ে দেয় এবং সে নিজে গাড়ি ড্রাইভিং করে। শুভর পরিবার এটিকে দুর্ঘটনা না বলে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে আদালতে জান্নাতীসহ তার পরিবারের পাঁচজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করার পর থেকেই আসামিরা নিখোঁজ। তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না পুলিশ। এভাবে নিখোঁজ হওয়াটা সন্দেহজনক। তিনি আরও বলেন, সাক্ষীর অভাবে এই মামলার তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না। সূত্র জানায়, জান্নাতী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে রাজউক কলেজ থেকে বহিষ্কার হন। পরবর্তী সময়ে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী মাধ্যমে পড়াশোনা করেছেন। বিভিন্ন ডিজে পার্টিতে যাওয়া, ইয়াবা, শিশা খাওয়াসহ উচ্ছৃঙ্খল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।
×