ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতিকর্মীরা সহিংসতা প্রতিরোধে সোচ্চার

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

সংস্কৃতিকর্মীরা সহিংসতা প্রতিরোধে সোচ্চার

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের মাধ্যমে দেশে চলমান সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে সংস্কৃতিকর্মীরা এই আহ্বান জানান। গত ২০ জানুয়ারি দেশব্যাপী এই কর্মসূচীর ঘোষণা দেয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। একই সময়ে গতকাল দেশের প্রায় ৪৬টি জেলা এবং প্রায় ৪০টি উপজেলায় এই কর্মসূচী পালিত হয়। দেশাত্মবোধক গান, প্রতিবাদী গান, কবিতা আবৃত্তি, দলীয় সঙ্গীত, দলীয় নৃত্য ইত্যাদির মাধ্যমে এই কর্মসূচীটি পালন করা হয়। এতে উদীচী, বহ্নিশিখা, সত্যেনসেন শিল্পীগোষ্ঠী, স্বভূমিসহ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠন সংহতি জানিয়ে অংশ নেয়। আগামী ২৭ জানুয়ারি সহিংস হামলায় নিহতদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল ৫টায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হবে। এই কর্মসূচীটি একই সময়ে সারাদেশে পালিত হবে। এই অবস্থান কর্মসূচীতে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিকর্মী রামেন্দু মজুমদার, জোটের সাবেক সভাপতি নাসিরুদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, অভিনেতা ড. ইনামুল হক, কণ্ঠশিল্পী ফকির আলমগীর, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিম-লীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী প্রমুখ। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর যে ষড়যন্ত্র সেটি এখনও চলমান রয়েছে। গণতন্ত্র রক্ষার নামে দেশে এখন যেসব কর্মসূচী পালিত হচ্ছে এগুলো কোন রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, সুস্পষ্ট হত্যাকা-। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে আমরা লড়াই করে জিতেছি। এই মুষ্ঠিমেয় ষড়যন্ত্রকারীদেরও আমরা রুখে দিতে পারব। দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। রামেন্দু মজুমদার বলেন, আজকে যারা অবরোধ ডেকে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন, আন্দোলনে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছেন বলে দাবি করছেন তাদের অনুরোধ করব দয়া করে পাশের এই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে যান, আপনাদের আন্দোলনের ফসল দেখুন। কী হচ্ছে আজকে? এর নামই কি রাজনৈতিক আন্দোলন? প্রশ্ন করেন তিনি। নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, আমরা চাই যারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে সরকার তাদের শাস্তি দিবে। এটি একটি যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরাও সরকারের সঙ্গে আছে। সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলাম যেমন করে মানুষের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল, স্বাধীনতাকামীদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও সেই চিত্র দেখা যাচ্ছে। এরা সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভক্ত করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত জোটের কাছে গণতন্ত্র মুখ্য নয়। জ্বালাও-পোড়াও, সহিংস হামলার মাধ্যমে এরা দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বন্ধ করতে চায়।
×