ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দায় নিতে চান না খালেদা!

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

উবাচ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিবিরের মেস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ককটেলসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম! বোমা তৈরির সময় পুরান ঢাকায় ছাত্রদল নেতার বাসায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। নিজের বানানো বোমায় নিহত হন তিনি। আহত হন শিশুসহ একাধিক ব্যক্তি। যাঁরা এখন ঢাকা মেডিক্যালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এছাড়াও সারাদেশে নাশকতার সময় গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের অসংখ্য নেতাকর্মী! বাস্তবতা এমন হলেও ২০ দলের নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছেন, পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা, বাসে আগুন দিচ্ছে পুলিশ ও সরকারী দল! অর্থাৎ সব অপকর্মের দায় চাপালেন সরকারের ঘাড়ে। একি বললেন তিনি। যাকে বলে নির্লজ্জ মিথ্যাচার। নিজ দলের নেতাকর্মীদের দায় অবলীলায় চাপিয়ে দিলেন অন্যের ঘাড়ে। নাশকতা জন্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া শিবির ও ছাত্রদলের কর্মীদের তাঁর সামনে হাজির করা হলে হয়ত তখনও বলবেন, এরা ২০ দলের লোক নয়। ওদের চিনি না। হয়ত জামায়াত শিবিরের কর্মীদের নাশকতার নির্দেশ দেয়ার কথা তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন। তাইতো সম্প্রতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন। খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশব্যাপী নাশকতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত। তিনি বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস এখনও সরকার সুপরিকল্পিতভাবে এসব নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে। এর মাধ্যমে বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, গ্রেফতার ও অত্যাচারের পথ প্রশস্ত করেছে। তিনি সরকারকে হিংসা ও নাশকতা, অন্তর্ঘাত ও জুলুমের পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন- অত্যাচার, দমন অভিযান, গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার কর্মীদের মুক্তি দিন। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারের ওপর থেকে সব বাধা তুলে নিন। জনগণের ভোট দেয়ার যে অধিকার কেড়ে নিয়েছেন তা ফিরিয়ে দিন। এ কি কথা খন্দকার মাহবুরের মুখে! স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলমান সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচী চালিয়ে যেতে অনড় ২০ দলের নেত্রী খালেদা জিয়া। হাজারো প্রতিবাদ, আলোচনা-সমালোচনা, মানুষের মৃত্যু ও নৃশংসতার পরেও টনক নড়ে না! যেন পাষাণ হৃদয়। যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়াই একমাত্র লক্ষ্য। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠেছে বিএনপির রাজনীতি কার স্বার্থে? জনস্বার্থে যদি হতো তাহলে দেশজুড়ে তা-ব কেন। আন্দোলন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান যখন কঠোর তখন একটু ভিন্ন প্লাটফরম থেকে শান্তির বুলি আওড়ালেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও আইনজীবী এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আন্দোলনরত দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সমঝোতা চান তিনি। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে এ দাবি তোলা হয়। তিনি চান অর্থবহ রাজনৈতিক সমঝোতা। এ কী বলছেন তিনি? যিনি কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে, দিয়েছেন আক্রমণাত্মক বক্তব্য। বিএনপির জনবিরোধী কোন কাজেই কখনই প্রতিবাদ করেনি। বরং সমর্থন যুগিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পক্ষ নিয়েছেন। তাঁর মুখে একি কথা। কেন শান্তি চান তিনি। কেউ কেউ বলছেন, ২০ দলের চলমান ধ্বংসাত্মক কর্মসূচীর শূন্য ফলাফল চিন্তা করেই হয়ত; উপায়ান্তর না দেখে ভিন্ন ফোরাম থেকে রাজনৈতিক সমঝোতার দাবি তোলা হয়েছে। খন্দকার মাহবুব বলেন- দমন, পীড়ন, মামলা, হামলা দিয়ে বিরোধীদল তথা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবি উপেক্ষা করে ‘জনসমর্থনহীন’ সরকার টিকে থাকতে পারবে না। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাব দেশকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাবে। যার জন্য সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে। সঙ্কট উত্তরণের একটিমাত্র পথ হচ্ছে, সকল দলের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা একমাত্র অবলম্বন! স্টাফ রিপোর্টার ॥ অন্ধের যষ্ঠী মানে একমাত্র অবলম্বন। এটা বাগধারার কথা। একটি বড় রাজনৈতিক জোট আছে তাদের। যাকে বলে ২০ দলের জোট। এই জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী টানা হরতালসহ অবরোধ কর্মসূচী চলছে। সমানতালে চলছে বিচ্ছিন্ন নাশকতা। জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যাত্রীবাহী বাসে নিক্ষেপ করা হচ্ছে পেট্রোল বোমা। রক্ষা পাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্কুল শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পরিবহন চালকরাও। বাস্তবতা হলো কর্মসূচী আছে কিন্তু মাঠে নেতা নেই। ২০ দলের জোট নেত্রী স্বেচ্ছায় গৃহবন্দী। হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসে আত্মগোপনে আছেন বিএনপির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত নেতা রুহুল কবীর রিজভী। অথচ দাবি করা হয় বিশাল দল। বাঘা বাঘা নেতা। সাহসী বীর পুরুষ। তাঁদের অনেকেই এখন ঢাকাতেই বসবাস করছেন। অথচ প্রকাশ্য তৎপরতা চোখে পড়ে না। তাই দেশজুড়ে বিএনপির নাশকতার মতো বিশাল কর্মকা- চালিয়ে যেতে অন্ধের যষ্ঠি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রিজভী। একটা গল্প আছে। ১০ পুত্রের গর্বিত মা তিনি। সবাই নিজের চেয়েও মাকে বেশি ভালবাসেন। মাকে নিয়ে প্রতিশ্রুতির শেষ নেই। হঠাৎ মা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলেন। সন্তানদের মার প্রতি ভালবাসার পরীক্ষা নিতে ডাক্তার বললেন, সকল সন্তানের জীবনের বিনিময়ে মাকে বাঁচানো সম্ভব। অর্থাৎ মাকে বাঁচাতে হলে সন্তানদের সবাইকে মরতে হবে। একথা শোনার পর একজন সন্তান ছাড়া মার প্রতি ভালবাসার পরীক্ষায় জয়ী হতে পারলেন না কেউই। সবাই ভয়ে পালালেন। কথায় আছে না- চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। হয়ত রিজভীর দশাও তাই হয়েছে। বিশ্বস্ত সবাই আপন প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত। পলাতক থেকে কখনও ভিডিও বার্তা কখনও বিবৃতি পাঠিয়ে আন্দোলন চালিয়ে নিচ্ছেন রুহুল। নির্দেশের অপেক্ষায় স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান। সন্ত্রাসীদের নিঃশেষ করতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশ চান তিনি। এরপরই এ্যাকশন। বুধবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতের চলমান সহিংসতার প্রেক্ষিতেই এ কথা বলেছেন শামীম। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া আপনি বোমা মেরে আমাদের ভয় দেখান? আমি শুধু বলবো- নির্দেশ দেন, পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবির দরকার নেই। শুধু একটা নির্দেশ দেন। খালেদা জিয়া ও তাঁর সন্ত্রাসীদের নিঃশেষ করতে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতাকর্মীই যথেষ্ট। শামীম ওসমান বলেন, খালেদা জিয়া এমন কি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তিনি যেভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারছেন, এখন যদি কেউ খালেদা জিয়াকেও পুড়িয়ে মারে- তাহলে কি তার বিরুদ্ধে মামলা হবে না? তাহলে খালেদার বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে না। তিনি বলেন, এরশাদ যদি পাঁচ বছর জেলে থাকতে পারেন, খালেদা জিয়া কেন জেলে যাবেন না। খালেদা জিয়ার উচিত রাজনীতি ছেড়ে নির্বাসনে যাওয়া। তারেক রহমানের মতো সন্ত্রাসী পুত্র আর যেন কারও না হয়।
×