ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হেক্টরপ্রতি ফলন তিন দশমিক পাঁচ টন

গম আবাদে ঝুঁকেছে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক

প্রকাশিত: ০২:৪৬, ২৩ জানুয়ারি ২০১৫

গম আবাদে ঝুঁকেছে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২২ জানুয়ারি ॥ ভাল ফলন ও দামের আশায় চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উত্তরের জনপদ রংপুর বিভাগের কৃষি অঞ্চল হিসেবে এ জেলায় এবার ব্যাপক গম আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কৃষিপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবং গত বছর ধানের কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ার কারণে এ অঞ্চলে গমের চাষাবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক বছর ধরে দেশের সর্বোচ্চ গম আবাদ হচ্ছে এই জেলায়। গমের ফলন হচ্ছে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। ফলন বেশি হওয়ায় ও ধানের কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ায় জেলায় গম আবাদ বেড়েই চলেছে। ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর ৫৮ হাজার ৪শ’ ২৭ হেক্টর জমিতে গম চাষ করে এক লাখ ৬৩ হাজার ৫শ’ ৯৬ মেট্রিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এবার কৃষকরা গম চাষ করেছেন ৬৫ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে। ডিজেল এবং অন্য সামগ্রীর দাম বেশি হওয়ায় গত মৌসুমে ধান চাষ করে লোকসানে পড়লেও এ জেলার কৃষকরা পিছিয়ে থাকেননি। তবে বোরো আবাদের চেয়ে গম চাষে খরচ কম হওয়ায় এ বছর গম চাষে ব্যাপক ফলন ও দাম ভাল পাওয়ার আশা করছেন কৃষক। বেলে-দো’আঁশ মাটি, কম সেচের ব্যবহার, দীর্ঘ সময় শীত থাকা, অতিরিক্ত কুয়াশা পড়া, ভাল ফলনে কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি উপাদানের কারণে এ জেলায় গমের আবাদ বেশি হচ্ছে। তাছাড়া বোরো আবাদের খরচ বেশি ও দাম কম পাওয়ায় কৃষক তাতে আগ্রহ পাচ্ছেন না। জেলার ৯৮ হাজার ১শ’ ৫৫ জন চাষী গম আবাদ করেন। এরমধ্যে ৮ হাজার ৯শ’ ৯০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ প্রদর্শনী প্লট করে অধিক ফলনে কৃষককে আগ্রহী করে তুলছে। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগের ৮টি জেলায় এক লাখ আট হাজার ৪শ’ ২৩ হেক্টর জমিতে তিন লাখ তিন হাজার ৫শ’ ৮৪ মেট্রিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কৃষি বিভাগের ৮টি জেলার লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে শুধু ঠাকুরগাঁও জেলায় আবাদ হয়েছে শতকরা ৬৪ ভাগ। হেক্টরপ্রতি ফলন পাওয়া যাবে ৩ দশমিক ৫ মেট্রিক টন, যার মোট ফলন পাওয়া যাবে দুই লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন। প্রতি হেক্টরে জাতীয় ফলন লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ ৩ দশমিক ১ মেট্রিক টন। কৃষকরা জানান, বোরো ধান আবাদে খরচ ও পরিশ্রম অনেক বেশি। ধানের বাজার পড়ে যাওয়ায় ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। তাই অনেক চাষী এবার বোরো ধান চাষের পরিবর্তে গমের আবাদ করেছেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ করায় আগের চেয়ে অনেকে দ্বিগুণ ফলন পাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ভুপেশ কুমার ম-ল জানান, এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে গমের ব্যাপক আবাদ হয়েছে, যা দেশের সর্বোচ্চ। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর কৃষক যে ফসল ঘরে তোলে সরকার তার ন্যায্যমূল্য প্রদানে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে এমনটাই প্রত্যাশ্যা চাষীদের।
×