ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করলে কঠোরতম ব্যবস্থা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

করলে কঠোরতম ব্যবস্থা ॥ শিক্ষামন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থার কথা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সংক্রান্ত সংসদ সদস্যদের প্রশ্নবাণের জবাবে তিনি জানান, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। যারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকা- ঘটানোর কেউ সাহস না পায়। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী অভিযোগ করেন প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও শিক্ষামন্ত্রী স্বীকার করেন না। জবাবে মন্ত্রী নাহিদ বলেন, আমরাই প্রথম প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশ করেছি। তদন্ত করে পরীক্ষাও বন্ধ করেছি। তিনি বলেন, আগে বলেছিলাম পরীক্ষার দিনই প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হবে। কিন্তু দেশের বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে তা সম্ভব হচ্ছে না। কেন না পরীক্ষার দিন আমি বান্দরবানের থানচিতে প্রশ্ন পাঠাব কিভাবে? চট্টগ্রামের দুর্গম অঞ্চল সন্দীপে প্রশ্ন পাঠাব কীভাবে? তাছাড়া সে সময় যদি বিদ্যুত না থাকে তাহলে কী করা হবে? এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেকে আমাকে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র ছাপানো হোক। এটা করলে প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধ করা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেখানে একটি গ-ির মধ্যে থেকে যেটা করা সম্ভব, আমাদের পক্ষে তা সম্ভব নয়। সবকিছু বিবেচনা করেই আমাদের কর্মকা- পরিচালনা করতে হয়। তিনি বলেন, টিভি টক শোতে বলা হয় আমরা প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও আমরা প্রকাশ করি না। আমরা স্বীকার করিনি যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে-এ কথাটি সঠিক নয়, অসত্য। বরং প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে সরকার আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখানে প্রকাশ্য সব বলতে পারব না। যারা প্রশ্ন তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও কঠোর নজরদারিতে রাখছে সরকার। জাসদের সংসদ সদস্য শিরীন আক্তারের সম্পূরক প্রশ্নের শিক্ষামন্ত্রী জানান, হরতাল-অবরোধ, নাশকতা করে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে, যা গত ৬ মাস আগেই চূড়ান্ত করা। এটা জেনেও বিএনপি-জামায়াত জোট এই ধরনের হরতাল-অবরোধ নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা চায় না সন্তানদের হাতে বই তুলে দেয়া হোক, পরীক্ষা দিয়ে মানুষের মতো মানুষ হোক। শিক্ষার্থীরা তো আওয়ামী লীগ কিংবা জাতীয় পার্টির নয়, বিএনপিসহ সব দলের সন্তান। তবে কেন তাদের জিম্মি করে ভবিষ্যত নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে? এ সময় মন্ত্রী হরতাল-অবরোধ বন্ধে বিএনপি নেত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ করছে তাদের বলব আপনারা কর্মসূচী গোটান। বন্ধ করুন এ ধরনের অপতৎপরতা, নাশকতা। আর সচেতন মানুষ যারা আছেন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসুন-প্রতিহত করুন বিএনপি-জামায়াত হোটের সব ধরনের সহিংসতা-অরাজকতা ও নাশকতা। এক বছরে ২৫৩ সিদ্ধান্তের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ১৭৬- সংসদে মতিয়া ॥ বর্তমান সরকারের গত এক বছরে (২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি হতে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৪৩টি মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বৈঠকে ২৫৩টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার ১৭৬টি সিদ্ধান্তই বাস্তবায়ন হয়েছে। আর ৭৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানান সংসদ কার্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই এক বছরে মন্ত্রিসভা ১৪টি আইনের খসড়া নীতিগতভাবে এবং ২৯টি আইনের খসড়া চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে। তাছাড়া এই সময়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৫টি নীতিমালা এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যে ২৯টি চুক্তি/সমঝোতা স্মারক অনুমোদিত হয়েছে। মতিয়া চৌধুরী জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়িত হয়। যে কারণে সরকারের মেয়াদের প্রথম দিকে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনেক সিদ্ধান্তই বাস্তবায়নাধীন থাকে। শেষের দিকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং শেষ দিকে বাস্তবায়নের হার অনেক বেশি হয়। বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে শেষে মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
×