ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেলিমা রহমানের বিবৃতি

নেতাকর্মীদের বিচার বহির্ভূত হত্যার নিন্দা ২০ দলের

প্রকাশিত: ০৫:১১, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

নেতাকর্মীদের বিচার বহির্ভূত হত্যার নিন্দা ২০ দলের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দলীয় নেতাকর্মীদের বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্দোলনরত ২০ দলীয় জোট। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডেকে বর্বর উল্লেখ করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। জোটের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকা-ের জন্য ক্ষমতাসীনদের অবশ্যই দায়ী থাকতে হবে। এর সঙ্গে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আগামীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বুধবার এক বিবৃতিতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে জনগণের আন্দোলনে ক্ষমতা হারাবার ভয়ে ভীত স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী রক্তের নেশায় উন্মাদ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত কুৎসিত হুমকি, জুলুম-নির্যাতন, অধিকার হরণ, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, অপহরণ-গুম-খুন, নাশকতা-অন্তর্ঘাত চালিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না দেখে তারা এখন তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নির্মম-নিষ্ঠুর নাটক সাজিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যার তা-বে মেতে উঠেছে। জোটের পক্ষে বিএনপির ভাইসচেয়ারম্যান সেলিমা রহমান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সদস্যদের এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করার ও বেআইনি হত্যাকা- ঘটাবার কোন অধিকার দেয়া হয়নি। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর শৃঙ্খলা, পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষভাবে আইনসম্মত কর্তব্য পালনের গৌরবোজ্জ¦ল ঐতিহ্য রয়েছে। সুবিধাভোগী, দলবাজ ও পক্ষাপাতদুষ্ট অল্পকিছু কর্মকর্তার অতি উৎসাহ ও বাড়াবাড়ির কারণে সেই সুনাম ক্ষুণœ হতে পারে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সকল বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে নিরপেক্ষভাবে আইনসম্মত পন্থায় কর্তব্য পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। তারা আমাদের প্রতিপক্ষ নন, আমরাও তাদের বিরুদ্ধে নই। আশা করি, তারা এদেশের সন্তান হিসেবে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান বজায় রেখে দেশবাসীর আশা-আকাক্সক্ষা ও অনুভূতির পক্ষে দাঁড়াবেন। কোন অন্যায় ও বেআইনি আদেশ-নির্দেশ পালনে বিরত থাকবেন। বুধবারও ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ পর্যায় থেকে শান্তিরক্ষার নামে দেখা মাত্র গুলি, বিচার ছাড়াই হত্যা এবং দলীয় সন্ত্রাসীদের আইন হাতে তুলে নেয়ার উস্কানি দেয়া হচ্ছে। যৌথ অভিযানের নামে বিভিন্ন জনপদে বিরোধীদল সমর্থকদের ওপর পাইকারী উৎপীড়ন, বাড়িঘরে হামলা-ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-লুঠতরাজ এবং পরিবারের সদস্যদের লাঞ্ছিত করার ঘৃণ্য ঘটনা ঘটছে। এসব হানাদারি কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ না করলে এর জন্য পরিস্থিতির যদি আরও নৈরাজ্যকর অবনতি ঘটে তবে তার দায়ভার পুরোপুরি হুকুমদাতা ও পরিকল্পনাকারীদেরকেই বহন করতে হবে। আটকাবস্থায় এমন বিচারবহির্ভূত হত্যকা-ের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোরও দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়েছে ভোটের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনা এবং একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার কায়েমের লক্ষ্যে জনগণের চলমান আন্দোলন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। এ আন্দোলন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন। বর্তমান অবৈধ শাসকেরা অতীতে বিরোধীদলে থাকতে আন্দোলনের নামে নাগরিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অকাতরে হত্যা করেছে। গান পাউডার দিয়ে যাত্রীবাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। লগি-বৈঠার তা-ব চালিয়ে প্রকাশ্য রাজপথে পিটিয়ে হত্যা করে মৃতদেহের ওপর উল্লাস করেছে। সমুদ্রবন্দর অচল করেছে। রেলপথে নাশকতা করেছে। রেলস্টেশন জ্বালিয়ে দিয়েছে। পেট্রোল বোমায় অসংখ্য মানুষকে দগ্ধ করেছে। ক্ষমতায় আসার পর সেদিনও ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গুলি করে মেরে গাড়িসহ পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিয়েছে। সেই সন্ত্রাস-আশ্রিত রাজনীতির ধারকরাই এখন বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে এবং তাদের নির্বাচনী প্রহসনকে বর্জন করার প্রতিশোধ নিতে অন্তর্ঘাত সৃষ্টি করে নারী ও শিশুসহ নিরাপরাধ মানুষকে পেট্রোল বোমা মেরে আগুনে পুড়িয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করছে। একই সঙ্গে এ সবের দায় বিরোধীদলের ওপর চাপিয়ে হত্যাকা- ও জুলুম-নির্যাতন জোরদার করেছে। প্রতারক ও সন্ত্রাসীদের এ সব হীনকার্যকলাপ, মায়াকান্না ও মেকি অভিনয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী মিথ্যাচারের অবতারণা করেছেন- রিজভী ॥ অপর এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর নিজ কার্যালয়ে ইট, বালি ও কাঠের ট্রাকসহ বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার পরও বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি মর্মে প্রধানমন্ত্রী জাতির সামনে মিথ্যাচার করেছেন।
×