ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টার্গেট শিক্ষিত নারীরা

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

টার্গেট শিক্ষিত নারীরা

জাতিসংঘ ইসলামিক স্টেট (আইএস) দলের হাতে অসংখ্য বেসামরিক লোকের মৃত্যুদ- কার্যকর হওয়ার ঘটনার নিন্দা করেছে। দৃশ্যত শিক্ষিত নারীরাই বিশেষভাবে ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছে। আরেক ঘটনায় আইএস এক ভিডিওতে মঙ্গলবার জাপানকে ২০ কোটি ডলার মুক্তিপণ দিতে বলেছে, নইলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দু’জাপানী জিম্মিকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু টোকিও সন্ত্রাসবাদের কাছে আত্মসমর্পণ না করার সঙ্কল্প ব্যক্ত করেছে। মধ্যপ্রাচ্য সফরের সর্বশেষ পর্যায়ে জেরুজালেমে অবস্থানরত জাপানী প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দু’জিম্মিকে অবিলম্বে অক্ষত অবস্থায় মুক্তি দিতে জিহাদীদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। খবর এএফপির। জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর জানায়, জিহাদী দলটি ইরাকস্থ এর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় মানব জীবনের প্রতি পৈশাচিক নির্মমতা দেখাচ্ছে। দলটি গত সপ্তাহে দস্যুবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত দু’পুরুষের মৃত্যুদ- কার্যকর করা এবং ব্যভিচারের অভিযোগে এক নারীকে পাথর ছুড়ে হত্যা করার দৃশ্য প্রচার করে। আইএস ইরাকের এবং প্রতিবেশী যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার বিরাট ভূখ- নিয়ন্ত্রণ করছে। ওই দফতরের মুখপাত্র রাবিনা শামদাসানি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, মসুলসহ আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে সম্প্রতি অন্য অসংখ্য নারীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে বলে জানা যায়। তিনি বলেন, শিক্ষিত পেশাদার নারীরা বিশেষত সরকারী পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছিলেন এমন নারীরা বিশেষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন বলে মনে হয়। শামদাসানি বলেন, চলতি বছরের মাত্র প্রথম দু’সপ্তাহেই তিন মহিলা আইনজীবীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয় বলে রিপোর্টে আভাস পাওয়া যায়। তিনি বলেন, জিহাদীরা অন্যান্য লোকজনকেও হত্যা করেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, মসুলের এক তথাকথিত আদালতে সমকামিতার দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার পর দু’ব্যক্তিকে একটি ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। য কেবল নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, এমন নয়। আইএসের কঠোর ইসলামী শরিয়া আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত বা অবাধ্যতার দায়ে সন্দেহভাজন এমন যে কাউকে ‘নির্মম ও অমানবিক শাস্তি’ দিচ্ছে। সম্প্রতি মসুলের মধ্যাঞ্চলে আইএস যোদ্ধাদের চিকিৎসা করতে অস্বীকার করার অভিযোগে চার চিকিৎসককে হত্যা করা হয়। জিহাদীদের ওয়েবসাইটে প্রচারিত দৃশ্যে কালো পোশাকপরা এক জঙ্গীকে দু’ জাপানী জিম্মি কেনজি গোতো ও হারুনা ইউকাওয়ার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছুরি উঁচিয়ে ধরে ইংরেজীতে কথা বলতে দেখা যায়। জাপানীরা কমলা রংয়ের জাম্পস্যুট পরা ছিল। জঙ্গী বলে, এখন আপনাদের জীবন বাঁচাতে ২০ কোটি ডলার দেয়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আপনাদের সরকারের ওপর চাপ দিতে আপনাদের হাতে ৭২ ঘণ্টা সময় আছে। সে জানায়, জাপানী প্রধানমন্ত্রী আইএসের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সমর্থন করতে তার মধ্যপ্রাচ্য সফরের শুরুতে অসামরিক সহায়তা দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দেন, তারই শাস্তি হিসেবে এ মুক্তিপণ দিতে হবে। কিন্তু আবে বলেন, জাপান চরমপন্থীদের কাছে নতিস্বীকার করবে না এবং তিনি তার সাহায্যদানের প্রতিশ্রুতিকে সম্মান দেখানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি জেরুজালেমে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাদের কোন ক্ষতি না করে তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে আমি জোর দাবি জানাচ্ছি। ওয়াশিংটন এ দাবি সমর্থন করে। পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে জাপানকে পুরোপুরি সমর্থন করে। আবে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদের কাছে মাথানত করবে না এবং আমরা যাতে এক সঙ্গে কাজ করতে পারি, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তিনি জানান যে, তিনি শনিবার কায়রোতে যে সাহায্য দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার লক্ষ্য হলো ইরাক ও সিরিয়ার সংঘর্ষের ফলে উদ্বাস্তু ও গৃহহীন হয়ে পড়া লোকজনকে সহায়তা করা। তিনি বলেন, এ অবস্থান অপরিবর্তনীয়। তিনি এ সাহায্যকে লড়াইয়ের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষের বাঁচার জন্য অপরিহার্য বলে বর্ণনা করেন।
×