ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফা স্বীকৃতি পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

ফিফা স্বীকৃতি পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর মাত্র সাত দিন। তারপরই পর্দা উঠবে বহুল আলোচিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আসরের খেলা। বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে বাফুফে সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ এই ফুটবল আসর সম্পর্কে একাধিক ‘আপডেট’ খবর জানান। এগুলো হলো- এ আসরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা বাদে বাকি চারটি দেশই পাঠাবে তাদের অনুর্ধ-২৩ বা অলিম্পিক দল। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব নিতে শনিবার ভোরে ঢাকা আসছেন ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। তিনি আসার পরই তাঁর সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করবে বাফুফে। এ টুর্নামেন্টের খেলাগুলোকে আন্তর্জাতিক ম্যাচের স্বীকৃতি দেবে ফিফা। টুর্নামেন্ট উপলক্ষে দুই স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ এগিয়ে চলছে পূর্ণদমে। টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকবে বর্ণিল আতশবাজি। ছয় দলের মধ্যে চারটিই অনুর্ধ-২৩ দল ॥ প্রথমে ঠিক হয়েছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ৬ দলের ৫টিই হবে জাতীয় দল। কিন্ত টুর্নামেন্ট শুরুর সপ্তাহ খানেক আগে এল নতুন খবর- ৪ দেশ নিশ্চিত করেছে তারা জাতীয় দল পাঠাবে না। তারা পাঠাবে অনুর্ধ-২৩ দল। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, বাহরাইন এই চার দেশ পাঠাচ্ছে তাদের অনুর্ধ-২৩ বা অলিম্পিক দল। শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশ জাতীয় দল অংশ নেবে এ টুর্নামেন্টে। প্রথমে কথা ছিল শুধু বাহরাইনই তাদের অলিম্পিক দল পাঠাবে। এ প্রসঙ্গে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘তাদের এমন সিদ্ধান্তের কারণ আমরাও জানি না। তবে মনে হয় যেহেতু মার্চ মাসে এশিয়ার ৪৭ দেশ বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অলিম্পিক দলগুলো অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার্সে অংশ নেবে। সে কারণেই হয়ত তারা অলিম্পিক দল পাঠাচ্ছে।’ তবে ৪ দেশ অলিম্পিক দল পাঠালেও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট জমজমাটই হবে বলে আশা করছেন সোহাগ, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক, ‘অলিম্পিক দলেও কিন্তু ন্যূনতম জাতীয় দলের তিন খেলোয়াড় থাকে। তাই আশা করছি বাংলাদেশও শ্রীলঙ্কা জাতীয় দল এবং ৪টি দেশের অলিম্পিক দলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এবং সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে দর্শকরা মানসম্পন্ন ম্যাচই উপভোগ করবেন।’ ক্রুইফ আসছেন শনিবার ॥ বাবা মারা যাওয়ায় পিছিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ আসা। আসবেন কি না, এ নিয়ে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তার। তবে অবসান হতে যাচ্ছে সব অনিশ্চয়তার। শনিবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছাবেন ডাচ্ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফ। বাবার মৃত্যুর পর আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি রয়েছে ক্রুইফের। যা শেষ হবে বৃহস্পতিবার। শুক্রবার রাতে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা হবেন তিনি। শনিবার ঢাকায় পৌঁছে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেবেন তিনি। ফিফার স্বীকৃতি পাচ্ছে এই টুর্নামেন্ট ॥ উল্লেখ্য, ফিফার আইন অনুসারে স্বীকৃতি পাওয়া আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো কিন্তু একই শ্রেণীর নয়। এগুলোর মধ্যে আবার শ্রেণীবিভাগ আছে। এগুলো হচ্ছেÑ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ টায়ার। ‘টায়ার’ বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে স্বীকৃত প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ। তাছাড়া প্রীতি ম্যাচ খেললে সেটা হবে ‘ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীত ম্যাচ।’ আবার কোন প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট হলে সেটা হবে ‘ফিফা আন্তর্জাতিক ম্যাচ।’ আগামী ২৯ জানুয়ারি থেকে ঢাকা ও সিলেটে তৃতীয় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টটি শুরু হতে যাচ্ছে, সেই ম্যাচগুলোকে ‘টায়ার-১’ এর স্বীকৃতি দেবে ফিফা। এই ম্যাচগুলো ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের মর্যাদা পেলে সেটা প্রতিটি দেশের ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বর্তমান ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৬৫ এবং এএফসি র‌্যাঙ্কিং হচ্ছে ৩৪। সোহাগ বলেন, ‘এ বিষয়ে ফিফা আমাদের প্রাথমিক সম্মতি জানিয়েছে। আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে ফিফা আমাদের চূড়ান্তভাবে বিষয়টি অনুমোদন দিয়ে দেবে। টুর্নামেন্টের ভেন্যুগুলোর অবস্থা ॥ টুর্নামেন্টের ভেন্যু দুটির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সোহাগ বলেন, ‘আমরা মাঠগুলো নিয়ে কাজ করছি। টুর্নামেন্টের মূল ভেন্যুর বাইরেও ঢাকা এবং সিলেটে ৩টি করে প্র্যাকটিস ভেন্যু নিশ্চিত করা হবে। ঢাকার জন্য আমরা ইতোমধ্যে বাফুফের আর্টিফিসিয়াল টার্ফ, শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের মাঠ, রহমগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির মাঠ এবং ব্রাদার্স ইউনিয়নের মাঠÑ এই চারটি মাঠ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত করেছি।’ চলছে ফ্লাডলাইট সংস্কারের কাজ ॥ সিলেট টুর্নামেন্টের আয়োজনের জন্য এখন প্রধান প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ফ্লাডলাইট। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে যে পরিমাণ ফ্লাডলাইটের দরকার, তা এখন পর্যন্ত যোগাড় করা সম্ভব হয়নি। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থা হয়ে যাবে বলে জানান সোহাগ। একই অবস্থা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটেরও। আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রস্তাব ॥ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুব একটা সুবিধের নয়। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজন করাটা কতটা নিরাপদ? ‘বিষয়টি নিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো স্থগিত করার অনুরোধ জানানোর কথা আছে বলে শুনেছি।’ জানান সোহাগ। সমাপনীতে থাকছে আতশবাজি ॥ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন আর সমাপনীতে আকর্ষণীয় আনুষ্ঠানিকতা রাখার পরিকল্পনা আছে বাফুফের। ৮ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রফি তুলে দেয়ার পরই শুরু হবে জাঁকজমক অনুষ্ঠান। যার অন্যতম আকর্ষণ হবে আতশবাজি। সিলেটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে ৩০ মিনিটের। সমাপনীতে ম্যাচের বিরতির সময় মাঠে চারদিকে ঘুরে গান গাইবেন দেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পীরা। থাকবে পারফর্মেরদের শারীরিক কসরত। সমাপনী অনুষ্ঠান হবে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ মিনিটের। এর মধ্যে ১৫ মিনিটের মতো হবে আতশবাজি।
×