ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বকাপে পাক-ভারত ম্যাচ নিয়ে আগাম উত্তাপ

ইতিহাস বদলে দিতে চান মিসবাহ

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৫

ইতিহাস বদলে দিতে চান মিসবাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান লড়াই মানে অন্য উত্তেজনা, বাড়তি উত্তাপ। সেটি যদি হয় বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে তবে তো কথাই নেই! কাকতালিয় দরজায় কড়া নাড়া অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে এবার একই গ্রুপে চিরবৈরী দুই পরাশক্তি। ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ ‘বি’এ দু’দলের বিশ্বকাপ মিশন শুরুই হবে নিজেদের মধ্যে লড়াই দিয়ে! বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত এবারও হট ফেবারিট, পাকিস্তান ‘চিরায়ত আনপ্রেডিক্টেবল’। তাছাড়া বিশ্বকাপে পাকিস্তান কখনই ভারতকে হারাতে পারেনি! পাকিরা এবার সে ধারা বদলে দিতে মরিয়া। শত্রুদেশকে হারিয়েই মিশন শুরু করতে চান অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক। ‘জানি বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ভারতকে হারাতে পারিনি। কিন্তু এবার সেই ইতিহাস বদলে দিতে চাই। বিরল নজির স্থাপন করতে প্রবল ইচ্ছা, আর ক্ষুধান নিয়েই নামব আমরা। টি২০ বিশ্বকাপ ধরলে শ্রেষ্ঠত্বে এ রকম লড়াইয়ে আমি তিন তিনটি ম্যাচ খেলেছি। ২০০৭-এ প্রথম টি২০ বিশ্বকাপে দুটি এবং গত ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ছিলাম। তারপরও এর পরিষ্কার কোন উত্তর আমার কাছে নেই!’ এমনিতে দু’দলের লড়াই সেয়ানে-সেয়ানে, সেখানে অনেক জয় রয়েছে পাকিস্তানের। কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে বিশ্বকাপে কেন এই অবস্থা? এই প্রশ্নের একটা ব্যাখ্যাও দেয়ার চেষ্টা করেন সময়ের বর্ষীয়ান এই তারকা ক্রিকেটার। মিসবাহ বলেন, ‘হয়ত বিশ্বকাপ বলে আমরা স্নায়ুর চাপটা নিতে পারি না। কঠিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হারাই। হয়ত অনেকের মনে এমন বিশ্বাস দাঁড়িয়ে গেছে যে বিশ্বকাপে আমরা কখনই ওদের হারাতে পারব না!’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই রকম অবস্থা তখনই হয়, যখন আপনি ম্যাচটাকে দারুণ সিরিয়াসলি নেন। মনে মনে দারুণ স্পেশাল ভাবেন। তাছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, প্রতিটা বিশ্বকাপে যেহেতু এই ম্যাচটা একবার করেই হয়েছে, সেজন্য পাকিস্তানের দিক থেকে ব্যাপরটা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। অন্তত দুটি করে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হলে স্কোরলাইনটা এমন হতো না। তবে এবার আমরা এই ছবিটা বদলে দিতে বদ্ধপরিকর।’ ১৪ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু ১১তম বিশ্বকাপের। পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি এ্যাডিলেড ওভালে পাক-ভারত মহারণ। অধিনায়ক মিসবাহ, কোচ মইন খান থেকে শুরু পাকিস্তানের নবীনতম ক্রিকেটারও ইতিহাস বদলে দিতে মরিয়া। ১৯৯২ থেকে শেষ পাঁচ বিশ্বকাপের পাঁচটিতেই মুখোমুখি হয়েছে চিরশত্রু দুই ক্রিকেট পরাশক্তি, প্রতিবারই পরাজিত দলের নাম পাকিস্তান। শক্তির বিচারে ব্যাটিং নির্ভর ভারতকে হারাতে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মিসবাহ আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় আলোচিত ভারত ম্যাচে আমাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভাল বোলিং করতে হবে। ভারতীয়দের পাওয়ারহাউস ব্যাটিং থামাতে প্রাণপণ চেষ্টাই করতে হবে। বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি বা রোহিত শর্মাদের নিয়ে আলাদা পরিকল্পনার সুযোগ নেই। ওরা প্রত্যেকেই ভয়ঙ্কর। কেউ যদি লম্বা সময় ক্রিজে থাকে, তবেই বিপদ! এক কথায় ভারতের গোটা ব্যাটিং লাইনের দিকেই বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।’ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কেন এত উন্মাদনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে পাক সেনাপতির মত, ‘দুই দেশের সমর্থক ম্যাচটাকে আবেগ দিয়ে দেখে, যেটা ভারতÑশ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা ম্যাচে হয় না। আমার মনে হয় যতটা না মাঠে দু-দলের খেলোয়াড়ি, তার চেয়ে বেশি সমর্থকদের চাওয়া পূরণের বিষয়টাই বড় হয়ে ওঠে।’ পাশাপাশি সব ছাপিয়ে দিন শেষে এটি একটি ক্রিকেট ম্যাচই, এ নিয়ে যাতে খারাপ কিছু না ঘটে তার জন্য আহ্বান জানন মিসবাহ। ‘এই ম্যাচে যারা হারেন, তাদের সমর্থক হতাশায় মুষড়ে পড়েন। আবার যারা জেতে তাদের সমর্থক আনন্দে পাগলের মতো আচরণ করে বসেন। আমি সব সমর্থকদের অনুরোধ জানাব, ১৫ তারিখের ম্যাচটাকে উপভোগ করুণ। টেনশন করবেন না, টেনশন নিয়ে যেমন সেরাটা খেলা যায় না, তেমনি খেলা উপভোগও করা যায় না। যারা ভাল করবে তাদের হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।’
×