ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিলবোর্ডে ঢাকা পড়েছে জেট বিমান, ভিরমি খায় পর্যটক

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

বিলবোর্ডে ঢাকা পড়েছে জেট বিমান, ভিরমি খায় পর্যটক

মাকসুদ আহমদ আকাশপথের যান যখন রাজপথে, পর্যটক আর কৌতূহলী মানুষের মনে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন। ক্যামেরা ক্লিক করলে বিমানের বদলে উঠে আসে ভ্যানগাড়ি আর টং দোকানের ছবি। এজন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ। বিলবোর্ডে ঢাকা পড়েছে আকাশযান ‘জেট বিমান’। শুধু বিমানের ছবি তোলার জো নেই। সচরাচর বিমানবন্দর বা প্রশিক্ষণ স্পট ব্যতীত জেট বিমান চোখে পড়ে না। তবে পরিত্যক্ত একটি জেট বিমান স্থাপন করা হয়েছে চট্টগ্রাম নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে। তবে এ সৌন্দর্যের আকর্ষণ কেড়ে নিয়েছে ফুটপাথের হকাররা। নিজেদের আখের গোছাতে গিয়ে সৌন্দর্যকে ধূলিসাত করলেও প্রশাসন নির্বিকার। কারণ, প্রশাসনও টু পাইস কামাই করছে সৌন্দর্যবর্ধক আকর্ষণের দোহাই দিয়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিশ্বরোডের শুরুতেই নান্দনিক এ স্পটটি। ৫/৬ বছর আগেও দূর থেকে বিমানটিকে দর্শনীয় মনে হত। কিন্তু সেই দর্শনীয় স্থানটি এখন আর দর্শনীয় নেই। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বিমানটি উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে টং দোকানগুলোকে, অথবা বিলবোর্ডের ফাঁকে আটকে পড়েছে। কৌতূহলী পর্যটকদের ছবি তোলার সুযোগটুকুও নেই। ক্যামেরা ক্লিক করলেই প্রথমেই উঠে আসে টং দোকান কিংবা বিলবোর্ড। বিমানটি পড়ে যায় অবৈধ স্থাপনার পেছনে। পুরো বিমানের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করার কোন সুযোগ নেই। এ নিয়ে পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম নৌ, বিমান ও সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রিক। প্রায় কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দফতরও। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এবং বন্দর ভবন দুটিই অনেকটা লাগোয়া। বন্দর ভবনের আগেই ঢাকা-চট্টগ্রাম বিশ্বারোডের যাত্রা শুরু চট্টগ্রামের বন্দর ভবন সংলগ্ন সড়কের মোড়ে। আর এ মোড়ে স্থাপন করা হয়েছে পরিত্যক্ত একটি জেট বিমান। চট্টগ্রাম বন্দরমুখী এ জেট বিমানটি স্থাপন করা হয়েছে প্রায় বছরদশেক আগে। মূল সড়কের সঙ্গে লাগোয়া এ স্থাপনাটি ব্যস্ততম এলাকায়। ফলে শুঁটকির দোকান থেকে শুরু করে চায়ের টং দোকান সবই গড়ে উঠেছে এ স্পটে, স্পটটি হারিয়েছে তার সৌন্দর্য। সৌন্দর্যবর্ধক জেট বিমানটি যেখানে স্থাপন করা হয়েছে তার চারদিক ঘিরে লোহার গ্রিল লাগানো হলেও একপাশে রয়েছে ফুটপাথ। আর এ ফুটপাথকে ঘিরে গড়ে উঠেছে ভাসমান হকারদের টং দোকান ও নানা ব্যবসার পসরা। শুধু ফুটপাথই নয়, জেট বিমানটির ওপর দিয়ে লাগানো হয়েছে কয়েকটি সুবিশাল বিলবোর্ড। দূর থেকে এ বিমানটিকে চিহ্নিত করা যায় না। কাছে এলেই কেবল বোঝা যায়। পর্যটকদের জন্য বিমানটি স্থাপন করা হলেও চত্বর ঘিরে জমজমাট ব্যবসা হকার ও পুলিশের। দর্শনীয় এ স্পটটি প্রথম দিকে প্রশাসনের ভয়ে দখলমুক্ত ছিল। কিন্তু এরপর ভাসমান ভ্যানগাড়িতে গড়া টি স্টল ও টং দোকান। লোকে-লোকারণ্য থাকায় দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ এসব দখলদাররা। দেখার কেউ নেই, থাকলেও বলার নেই। প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর পুলিশের রোধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। মাসোয়ারা দিয়ে বন্দর থানায় চলছে চুটিয়ে ব্যবসা। যেন হকারদের কাছে মাথানত করে টু-পাইস কামাই করছে পুলিশ।
×