ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শুক্রবার সারাদেশের শহীদ মিনারে অবস্থান নেবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট

প্রকাশিত: ০৩:২৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

শুক্রবার সারাদেশের শহীদ মিনারে অবস্থান নেবে সম্মিলিত  সাংস্কৃতিক জোট

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও সহিংস হামলা রুখে দিতে সর্বস্তরের মানুষকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা। আগামী ২৩ জানুয়ারি শুক্রবার সারাদেশের শহীদ মিনারে সংস্কৃতি প্রতিরোধ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করবে সংগঠনটি। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কেন্দ্রের (টিএসসি) মূলভবনের সামনে আয়োজিত ‘আর নয় প্রতিবাদ, গড়ে তোল প্রতিরোধ’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই আহ্বান জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সমাবেশের পর একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে শাহবাগ গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে এবং জোটের অন্যতম নেতা রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেনÑ জোটের সহসভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর, নাট্যব্যক্তিত্ব মান্নান হীরা, ঝুনা চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আক্তারুজ্জামান, জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলাম যেমন মানুষের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছিল, স্বাধীনতাকামীদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও সেই চিত্র দেখা যাচ্ছে। রাজনীতিতে তাদের নামের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু রুপ, আদর্শ ও কর্মকা-ের কোন পরিবর্তন হয়নি। এরা সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভক্ত করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত জোটের কাছে গণতন্ত্র মুখ্য নয়। জ্বালাও-পোড়াও, সহিংস হামলার মাধ্যমে এরা দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বন্ধ করতে চায়, দেশকে অচল করে পাকিস্তান বানাতে চায়। এদেরকে প্রতিহত করতে দেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সরকারকে আরও কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, হিটলারের নাৎসী বাহিনীকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তেমনিভাবে জামায়াতকেও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় অতিদ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। হরতাল-অবরোধ আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলোকেও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। জোটের সহসভাপতি এবং ইউআইটিএসের ভিসি কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। হয় যুদ্ধাপরাধী-রাজকারদেরকে থাকতে হবে, নইলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে থাকতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়তে হলে সবাইকে কঠোর হতে হবে। দেশের মানুষকে জয় বাংলা সেøাগানের মাধ্যমে জাগিয়ে তুলে রাজনৈতিক নৈরাজ্যকে প্রতিহত করতে হবে। জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ বলেন, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও যদি স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়, তাহলে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না। চোরাগোপ্তা হামলা করে, পেট্রোল বোমা মেরে, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট যে বীভৎস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে তা আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই গণহত্যা-অত্যাচার-নির্যাতনের চিত্রকে স্মরণ করিয়ে দেয়। অনেক প্রতিবাদ হয়েছে, আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, এখন সময় এসেছে দেশের সব সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্যে দেশের সাংস্কৃতিক কর্মীরা রাজপথে নেমেছে এবং আগামীতেও থাকবে।
×