ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হরতাল ও অবরোধে নাটোরে চামড়া বাজারে ধস

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

হরতাল ও অবরোধে নাটোরে চামড়া বাজারে ধস

সংবাদদাতা, নাটোর, ২০ জানুয়ারি ॥ বছরের শুরু থেকেই টানা অবরোধ ও হরতালে চরম বিপাকে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নাটোরের কাঁচা চামড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা। পরিবহন সংকটে তাদের গোডাউনে থাকা কাঁচা চামড়া যেমন ঢাকায় পাঠাতে পারছেন না তেমনি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চামড়া আমদানিও করতে পারছেন না। এতে চামড়া শিল্পে ধস নামার পাশাপাশি বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। এছাড়াও এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত জেলার প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক চরম কষ্টে অর্ধাহারে ও অনাহারে দিনাতিপাত করছে। সরেজমিনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নাটোরের চকবৈদ্যনাথ এলাকার চামড়ার বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, যে সময় নাটোরে চামড়ার আড়তগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট উপস্থিতি থাকার কথা, সেই সময় টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে অনেকটা ফাঁকা আর নিস্তব্ধ অবস্থা বিরাজ করছে। নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই চামড়ার বাজারে নেই কোন প্রাণ। চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সায়দার আলী খান, মঞ্জুরুল আলম হিরু, হালিম শেখসহ ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানী ঈদের পর থেকে চামড়া বেচা কেনা শুরু হয়। দেশে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে তার অনেকটা যোগান দেয় এই চামড়া শিল্প। কিন্তু দফায় দফায় হরতাল, অবরোধে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। যেখানে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ ট্রাকে চামড়া বোঝাই হয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা সেখানে নিরাপত্তার অভাবে তারা একটি ট্রাকও পাঠাতে পারছেন না। কারণ এক একটি ট্রাকে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার চামড়া যায়। অবরোধকারীরা যদি ট্রাকে হামলা চালায় তবে প্রাণ হানির সঙ্গে সঙ্গে তারা বিপুল অংকের ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এ অবস্থায় তারা চামড়া পচে নষ্ট হওয়াসহ নানা আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় দিনযাপন করছেন। তারা জানান, অবরোধের কারণে বন্ধ রয়েছে চামড়া আমদানি-রফতানির কাজও। এতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প স্থান হারাবে। ফলে দেশও অর্থনৈতিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া কোন কাজ না থাকায় হাজার হাজার শ্রমিক তাদের কর্মসংস্থান না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা চামড়া শিল্পকে রক্ষা করতে চামড়া পরিবহনকে হরতাল, অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন।
×