ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে পুলিশ পাহারায় ॥ জ্বালানি তেল সরবরাহ

প্রকাশিত: ০৩:০৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

উত্তরাঞ্চলে পুলিশ পাহারায় ॥ জ্বালানি তেল সরবরাহ

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ রাজনৈতিক কর্মসূচীতে টানা অবরোধ ও হরতালে আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমে চাষ ও সেচের জন্য ডিজেলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কায় পুলিশ ও বিজিবির প্রহরায় উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় ডিজেল সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের আশঙ্কা অপর্যাপ্ত তেলের অজুহাতে তেলের মূল্য না বেড়ে যায়। উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলায় বিপিসির (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন) পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির ‘পার্বতীপুর রেলহেড পিওএল ডিপো’ থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়। গত কয়েকদিন পূর্বে চলমান অবরোধের কারণে নাশকতার আশঙ্কায় জ্বালানি তেল সরবরাহকারী ডিলারগণ পার্বতীপুর রেলহেড ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উঠানো বন্ধ রাখে। এ অবস্থায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে গন্তব্যস্থলে তেলবাহী লরি পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দিলে ডিলাররা তেল উত্তোলনে রাজি হয়। পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুল আলম জানান, ৮টি জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহের কারণে সার্বক্ষণিক পুলিশ রাখা হয়েছে। পুলিশ দিয়ে ডিলারদের কাছে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে। পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহেনুল ইসলাম জানান, পার্বতীপুর রেলহেড অয়েল ডিপো থেকে যাতে করে ডিলারদের কাছে নির্বিঘেœ তেল সরবরাহ হয় সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্য ও র‌্যাব সদস্যরাও রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান। এদিকে দিনাজপুরের সদর উপজেলার কৃষক সেলিম রেজা জানান, হরতাল ও অবরোধের নামে কয়েকদিন পূর্বে তেল পাওয়া যাচ্ছিল না। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই অজুহাতে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে ডিলাররা। কৃষক স্বপন চন্দ্র দাস জানান, ইরি-বোরো মৌসুমের প্রধান উপকরন সেচ। আর সেই সেচ দিতে প্রয়োজন হয় জ্বালানি তেলের। যদি এই অবস্থায় হরতাল-অবরোধ চলতে থাকে তাহলে তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। গত বছরও এই অজুহাতে বেশি মূল্য দিয়ে তেল ক্রয় করতে হয়েছে বলে জানান তিনি। পার্বতীপুর অয়েল ডিপো সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তিন অয়েল কোম্পানির ২শ’ ২২টি ডিজেল ও পেট্রোল পাম্প এবং ৩শ’ ৩৮টি এজেন্ট রয়েছে। অবরোধ ও হরতালের মধ্যেও টানা অবরোধের কারণে কৃষকদের কথা ভেবে ডিলার ও এজেন্টেদের ৬শ’ ৭০টি ট্যাংকলরিতে এখন পর্যন্ত ৬০ লাখ ৭৪ হাজার লিটার ডিজেল তেল সরবরাহ করা হয়েছে। পার্বতীপুর ডিপোতে দায়িত্বরত ম্যানেজার শাহজাহান হাওলাদার জানান, এ পর্যন্ত ডিপোতে তিন কোম্পানির ডিজেল মজুদ রয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ লিটার ও পেট্রোলের মজুদ রয়েছে প্রায় ৯৩ হাজার লিটার। পাশাপাশি ডিপোতে প্রবেশের জন্য ২০ লাখ লিটার ডিজেল তেল নিয়ে ট্যাংকলরি রওয়ানা দিয়েছে। উত্তরাঞ্চলের ৮টি জেলায় কৃষি কাজের জন্য ব্যবহৃত ডিজেল তেলের হিসেব সংরক্ষণ করে পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইলিয়াস ফারুক জানান, এ পর্যন্ত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপোতে ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩২ লিটার ডিজেল মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি ৮টি জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে ৯৯ হাজার ২১৩ লিটার ডিজেল তেল মজুদ রয়েছে। জ্বালানি তেলের অভাবে কৃষকরা সেচ সঙ্কটে পড়বে না বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।
×