ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার থেকে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমদানির সুযোগ চাওয়া হবে

প্রকাশিত: ০২:৫৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৫

মিয়ানমার থেকে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আমদানির সুযোগ চাওয়া হবে

এম শাহজাহান ॥ মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে এলসির মাধ্যমে আমদানির সুযোগ চায় বাংলাদেশ। এছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে উপকূলীয় নৌযান চলাচল চুক্তি, ব্যাংকিং সমস্যার সমাধান, বর্ডার হাট স্থাপন এবং দেশটির কৃষি ও মৎস্য খাতে বিনিয়োগের সুযোগ চাওয়া হবে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যৌথ বাণিজ্য কমিশনের (জেটিসি) আসন্ন বৈঠকে এ প্রস্তাবগুলো তুলে ধরবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি খসড়াপত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ না হলেও আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের যে কোন সময় ঢাকায় জেটিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আভাস দেয়া হয়েছে। গত বছর এ বৈঠক মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সূত্র মতে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বর্তমান প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে বাণিজ্য ঘাটতিতে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে সিমেন্ট, ওষুধ, টেক্সটাইল, ফেবিক্স, নিটওয়ার সামগ্রী, ফার্নেস অয়েল, চামড়ার ব্যাগ, এ্যালুমিনিয়ামের তৈরি তৈজসপত্র, কসমেটিকস, স্টেশনারি সামগ্রী, চামড়ার তৈরি জুতা, সিরামিক সামগ্রী, আলু ইত্যাদি রফতানি হচ্ছে। বিপরীতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ, ডাল, মাছ, শাকসবজি, গবাদিপশু, ভেজিটেবল অয়েল, মসলা, কফি, কাঠ, রাবার ও প্লাস্টিক সামগ্রী আমদানি করা হয়। তবে এবারের খসড়া প্রস্তাবে মিয়ানমার চিংড়ি, ইলিশ, শুকনা মাছ, সুপারি ও লবণে শুল্কমুক্ত সুবিধার দাবি করেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওষুধ, এমএস রড, সিমেন্ট, টিভি, ফ্রিজসহ গৃহস্থালি পণ্যের বাণিজ্য সুবিধা চাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। গত বৈঠকেই বাংলাদেশ যেসব পণ্যে বাণিজ্য সুবিধা চেয়েছে, সে ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে মিয়ানমার। এছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করতে চায় বাংলাদেশ। সে লক্ষ্যে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজ কুমার রায় জনকণ্ঠকে বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। দিন দিন দেশেটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ছে। কিন্তু এখন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে যেসব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন তা হয়নি। তবে এবারের জেটিসি বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। সূত্র জানায়, এবারের বৈঠকে পিটিএর পাশাপাশি উপকূলীয় নৌযান চলাচল চুক্তি, ব্যাংকিং খাতের সমস্যা দূরীকরণ, এলসির (ঋণপত্রের) মাধ্যমে বাণিজ্য, কৃষি ও মৎস্য খাতে সহযোগিতা, বর্ডার হাট স্থাপন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে। এদিকে, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অন কোস্টাল এ্যান্ড মেরিটাইম শিপিং এবং এ্যাগ্রিমেন্ট অন কোস্টাল এ্যান্ড মেরিটাইম শিপিং’ বিষয়ে এমওইউর খসড়া তৈরি করে গত জেটিসি বৈঠকে মিয়ানমারকে দেয়া হয়। তবে বর্তমানেও সামুদ্রিক ও নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা এক রকমভাবে চালু রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে। কিন্তু এর আইনী কাঠামো অতটা মজবুত নয়। জানা গেছে, মিয়ানমারে প্রচুর অনাবাদি কৃষি জমি রয়েছে। এসব জমিতে বিনিয়োগ করার ব্যাপারে বাংলাদেশী কিছু উদ্যোক্তাদের আগ্রহ রয়েছে। দেশটির আরাকান রাজ্যে অনাবাদি জমিতে চুক্তির ভিত্তিতে চাষাবাদ সম্ভব বলে মনে করে বাংলাদেশ।
×