ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বৈধ বালু উত্তোমেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসবলনের মহোৎসব

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

বৈধ বালু উত্তোমেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসবলনের মহোৎসব

হাসিব রহমান, ইলিশা মেঘনা থেকে ফিরে ॥ ভোলার মেঘনার বিভিন্ন ডুবো চরে চলছে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। প্রভাবশালী ওইসব বালু ব্যবসায়ীদের খুঁটির জোর এতো বেশি যে প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পারেনি। এমনকি হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাকেও তারা তোয়াক্কা করছে না। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ওই বালু ব্যবসায়ীরা বীরদর্পে মেঘনায় বালু উত্তোলন করছে। এভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ আসন্ন বর্ষা মৌসুমে নদীভাঙ্গন চরম আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা মেঘনা, রামদাসপুর এলাকায় দিনের বেলায় অন্তত ৫-৬টি ড্রেজার দিয়ে এ সব বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে বেশকিছু শ্রমিক। মেঘনায় জেগে উঠা ছোট-বড় চর, ডুবোচর কেটে ফেলছে। এতে নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে শীত মৌসুমেও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় মোসলে উদ্দিন, আমির, রায়হানসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, সরকার মেঘনার ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় কোটি কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ করলেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ওই প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অথচ যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। জেলে রাফিজল ও সোহাগ বলেন, মেঘনায় বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে তেমন মাছ ধরা পড়ছে না, ড্রেজারের বিকট আওয়াজে শব্দ দূষণ ও পানির গতি পাল্টে যাওয়ার ফলে হয়ত এই মাছের সঙ্কট দেখা দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলেরা। এভাবে চলতে থাকলে মাছের প্রজনন ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। ইলিশা এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বজলু, কবির হোসেন, সিরাজ, আব্বাসসহ অনেকেই বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হঠাৎ করেই নদী ভাঙ্গন বেড়েছে। বালু উত্তোলনকারীরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম ভাঙিয়ে বালু উত্তোলন করায় তাদের কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা গ্রামে মোঃ ফরিদ উদ্দিন গত ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করে ভূমি মন্ত্রণায়লের সচিব, ভোলা জেলা প্রশাসকসহ ১৭ জন কর্মকর্তাকে বিবাদী করে। ওই আবেদনের প্রেক্ষিত বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয় গঠিত বেঞ্চ ৬ মাসের জন্য বালু উত্তোলন বন্ধের রুল জারি করেন। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছেন, ভোলার কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি ড্রেজার ভাড়া করে এনে বালু উত্তোলন করছে। শুধু ইলিশা মেঘনা এলাকায়ই নয় বোরহানউদ্দিনের গঙ্গাপুর, মাঝের চর, দৌলতখানের বিচ্ছিন্ন চরসহ বেশকিছু স্থানে ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করছে প্রভাবশালীরা।
×