ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

পদাতিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিল্পকলায় ম্যাকবেথ

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২০ জানুয়ারি ২০১৫

পদাতিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিল্পকলায় ম্যাকবেথ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কাল বুধবার পদাতিক নাট্য সংসদের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো দলটির আলোচিত প্রযোজনা ম্যাকবেথ। এটি ছিল নাটকটির ২৪তম মঞ্চায়ন। পদাতিক নাট্য সংসদের ৩৬তম এ প্রযোজনাটির রচয়িতা উইলিয়াম শেক্সপিয়ার। সৈয়দ শামসুল হকের অনুবাদ থেকে নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। নাটকের কাহিনীতে স্কটিশ সেনাপতি ম্যাকবেথ যুদ্ধ জয় করে ফিরে আসতে থাকে আপন গন্তব্যে। আর এই ফিরে আসার পথে এক রহস্যময় শক্তি তাঁর পথরোধ করে। ভবিষ্যদ্বাণী উচ্চারণ করে ওই রহস্যময় শক্তি জানায়, এক সময় ম্যাকবেথ হবে কডোর প্রধান ও রাজা এবং ব্যাঙ্কো হবে রাজার আদি পিতা। ওই ঘটনার পর ম্যাকবেথের চিঠি পেয়ে লেডি ম্যাকবেথ জানতে পারেন বিস্তারিত, জন্ম নেয় উচ্চাকাক্সক্ষা। রাজা ডানকানকে হত্যার জন্য সে ম্যাকবেথকে প্ররোচিত করে। পরবর্তীতে রাজাকে হত্যা করে সিংহাসনে বসেন ম্যাকবেথ। ঘটনাকে আড়াল ও রাজা হত্যার দায় কৌশলে এড়াতে ম্যাকবেথ একে একে হত্যা করে ডানকানের দেহরক্ষীদ্বয়, ব্যাঙ্কো ও ম্যাকডাফের স্ত্রী-সন্তানদের। রহস্যময় শক্তির প্রলোভনে ম্যাকবেথ ভুলে যায় যে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। একপর্যায়ে লেডি ম্যাকবেথ অনুতাপে দগ্ধ ও অসুস্থ হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। ইংল্যান্ডের রাজার সহায়তায় নিজ রাজ্য পুনরুদ্ধারে ডানকান পুত্রদ্বয় ম্যালকম ও ডোনালবেইন ম্যাকবেথ বাহিনীকে পরাজিত করে এবং ম্যাকডাফের অস্ত্রের আঘাতে সমাপ্তি ঘটে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকা স্বেচ্ছাচারী ম্যাকবেথের। প্রযোজনাটির ম্যাকবেথ চরিত্রে শাখাওয়াত হোসেন শিমুল ও লেডি ম্যাকবেথ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শামছি আরা সায়েকা। এছাড়া অন্যান্য ছরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ হামিদুর রহমান পাপ্পু, জাবেদ পাটওয়ারী, ইকরাম, শুভ, জনি খাদেম, রাসেল, ওয়ালিদ, জুয়েল, জয়, তন্ময়, নাজিম, মশিউর রহমান প্রমুখ। ওয়াহিদা মল্লিক জলির পোশাক পরিকল্পনায় সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন শিশির রহমান। নির্দেশনার পাশাপাশি মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন সুদীপ চক্রবর্তী। শিল্পকলায় জাতীয় পিঠা উৎসব শুরু ॥ বাঙালীর ঐতিহ্য ও যাপিত সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিঠা। তবে যান্ত্রিক সভ্যতার এই নগরীতে হারিয়ে যেতে বসেছে পিঠার ঐতিহ্য। আর সেই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হলো নয় দিনব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২১। এবারের উৎসব উদ্বোধন করেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সোমবার বিকেলে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন আইটিআই সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি ম. হামিদের সভাপতিত্বে উৎসবের উদ্বোধনীতে আলোচনায় অংশ নেনÑ নাট্যজন আতাউর রহমান, জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর, নৃত্যশিল্পী আমানুল হক, স্কয়ার ফুড এ্যান্ড টয়লেট্রিজের প্রতিনিধি ইমতিয়াজ ফারুক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উৎসব উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শাহ আলম। উদ্বোধনী বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, আমাদের খাদ্যাভ্যাসেরই একটি অংশ পিঠাপুলি। গ্রামবাংলার মা-বোনেরা তাঁদের চারপাশে যা দেখেন তা পিঠায় নান্দনিকভাবে প্রকাশ করেন। যে নক্সা তাঁরা পিঠায় ব্যবহার করেন, তা তাদের প্রাত্যহিক জীবনেরই নক্সা। তিনি আরও বলেন, একদিকে সারাদেশে চলছে পেট্রোলবোমা হামলা আর অন্যদিকে শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে পিঠাপুলির উৎসব। উৎসবের উদ্বোধনী আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সম্ভাবনাময় ও প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীরা। ভাওয়াইয়া শিল্পী সফিউল আলম রাজার ভাওয়াইয়া গানের পরিবেশনা দিয়ে শুরু হওয়া উদ্বোধনী দিনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। একদিকে পিঠা খাওয়া, কেনা ও বানানোর ধুম আর অন্যদিকে উন্মুক্ত মঞ্চের সাংস্কৃতিক আয়োজন উৎসবকে করে তোলে প্রাণবন্ত।
×