ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অবরোধের বলি রিক্সাচালক আব্বাস ॥ ঘোর অন্ধকারে পরিবার

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধের বলি রিক্সাচালক আব্বাস ॥ ঘোর অন্ধকারে পরিবার

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে ॥ অবরোধকারীদের ধাওয়ায় ট্রাকের ধাক্কায় নিহত রাজশাহীর রিক্সাচালক আব্বাস উদ্দিনের পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার। জীবিকার চাকা ঘোরানো একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে এখনও নির্বাক স্ত্রী মিনা বেগম। রিক্সাচালক আব্বাসের বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার বেড়া গ্রামে। তছির উদ্দিনের ছেলে আব্বাস উদ্দিন এক বছর ধরে ঢাকায় রিক্সা চালাতেন। প্রতিমাসে বাড়িতে এসে স্ত্রীর হাতে তুলে দিতেন মাস খরচের টাকা। একদিন কিংবা দুইদিন পর আবার চলে যেতেন ঢাকায়। এভাবেই দুই ছেলেকে নিয়ে সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। তবে খুব স্থায়ী হলো না তাদের সুখ। অবরোধকারীদের ধাওয়ায় ট্রাক উল্টে ধাক্কা দেয় আব্বাসের রিক্সাটিকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় আব্বাস। রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গত মঙ্গলবার ঘটে মর্মান্তিক এ ঘটনা। আব্বাসের স্ত্রী মিনা বেগম জানান, মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে বাড়ি এসে দুইদিন থাকার পর ফের ঢাকা যায় সে। তবে জীবিত ফিরল না সে, এলো তার লাশ। সেই সঙ্গে সুখের সংসারে নেমে এলো ঘোর অন্ধকার। স্ত্রী মিনা বেগম স্বামীর এ চলে যাওয়াকে কিছুতেই মানতেই পারছেন না। একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে দিশাহারা তিনি। মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে রিক্সা নিয়ে জীবিকার উদ্দেশ্যে বের হয় আব্বাস। কিছুক্ষণ পরেই অবরোধকারীদের ধাওয়ায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আব্বাস উদ্দিনকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। বাড্ডা থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে অজ্ঞাত হিসেবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে পাঠায়। এরপর আব্বাস যে গ্যারেজ থেকে রিক্সা ভাড়া নিয়ে চালাত, পুলিশ সে গ্যারেজ থেকে ঠিকানা সংগ্রহ করে দুর্গাপুর থানায় যোগাযোগ করে এবং পরিবারকে আব্বাসের মৃত্যুর সংবাদটি জানায়। গত বুধবার দুর্গাপুর গ্রামের বাড়িতে আব্বাসের লাশ এসে পৌঁছে। ওইদিনই পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। বাবার মৃত্যুর পর অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছেন বড় ছেলে মিঠুন। গ্রামজুড়ে চলছে মাতম। বাকরুদ্ধ মিনা আহাজারি করতে করতে বলেন, এখন তাদের কি হবে, কে দেখবে তাদের। ছোট ছেলে নবম শ্রেণীর ছাত্র মিলন বাবার অকালমৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। তাদের জিজ্ঞাসা, বাবার মৃত্যুর দায় নেবে কে?।
×