ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে কৃষক আটকা পড়েছে দাদন জালে

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

দিনাজপুরে কৃষক আটকা পড়েছে দাদন জালে

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুর জেলায় আবারও দাদন ব্যবসা জমে উঠেছে। বিশেষ করে আমন আবাদে মার খাওয়া কৃষকরা দাদন জালে নির্বিচারে আটকা পড়ছেন। এতে বাদ পড়ছেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং চাকরিজীবীরাও। কেউ রাখছেন জমি-জিরাতসহ ভিটেমাটি বন্ধক, কেউবা বেতন উত্তোলনের চেক বই। আবার কেউ কেউ ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নিজেকে অজানা শঙ্কার মধ্যে ফেলছেন। উল্লেখ্য, প্রতি বছরের ভাদ্র মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত দিনাজপুর জেলাসহ উত্তরাঞ্চলে অভাব দেখা দেয়। অগ্রহায়ণ মাসে ধানকাটা-মাড়াই শুরু হলে অভাবও কেটে যায়। কিন্তু এবার আমন ধান তেমন না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কেননা আর মাত্র কয়দিন পরই বোরো মৌসুম শুরু হবে। কিন্তু ঘরে ধান আছে এমন কৃষক এ জেলার কোথাও নেই। আর এ সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীরা। তারা চড়া সুদে অভাবী মানুষের মধ্যে ঋণ দিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে কৃষকের আবাদি জমি, ভিটেমাটি যা আছে সবটাই তারা লিখে নিচ্ছে। এই যখন কৃষকের অবস্থা ঠিক তখনই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও দাদন জাল থেকে বেরুতে পারছেন না। কেননা কৃষি প্রধান এ অঞ্চলে সব ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দুই হলো কৃষি ও কৃষককে ঘিরে। তাই কৃষকের অবস্থা খারাপ হওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন মহাবিপাকে। তাইত তারাও চড়া সুদে দাদনের টাকা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চড়া সুদে দাদনের অর্থ নেয়া সহজসাধ্য নয়। এজন্য ঋণপ্রত্যাশী মানুষকে আগে মন জয় করতে হয় চিহ্নিত দাদন ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্টসংখ্যক দালালের। দালালদের মনোনীত ব্যক্তিরাই সাধারণত ঋণ পেয়ে থাকেন। কেউ ঋণপ্রাপ্তির যোগ্য হিসেবে দালালদের কাছে বিবেচিত হলে কৃষকের কাছ থেকে জমিজমা লিখে নেয়া হয়। আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়া হয় এবং চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বেতন উত্তোলনের চেক বইয়ের প্রতিটি পাতায় আগাম স্বাক্ষর নেয়া হয়। যাতে পরে কেউ টু শব্দটি পর্যন্ত করতে না পারেন। এসব আনুষ্ঠানিকতা শেষে শতকরা ৩০ থেকে ৬০ ভাগ মাসিক সুদে ঋণপ্রত্যাশীরা ঋণ পেয়ে থাকেন। ছবি খাঁ স্মরণে বরিশালে বইমেলা স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলের মগ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বিজয়ী কৃতিমান পুরুষ ছবি খাঁর স্মরণে জেলার গৌরনদী উপজেলার সাকোকাঠী এলাকায় তিন দিনব্যাপী বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের শুক্রবার বিকেলে উদ্বোধন করা হয়েছে। আগরপুর উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংঘের আয়োজনে সাকোকাঠী ফাতেমা ফাউন্ডেশন হাসপাতাল চত্বরে তিনদিনের অনুষ্ঠানমালার প্রতিদিন দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদ, কবি ও সাহিত্যিক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা অংশগ্রহণ করবেন। এ ছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বনামধন্য শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন ও নাটক মঞ্চস্থ করবেন। তিন দিনব্যাপী বইমেলা উপলক্ষে ওই এলাকায় এখন উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ গৌরনদীকে নিয়ে কবি শিকদার রেজাউল করিমের লেখা ‘বৃহতি গৌরনদী’ বই থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ১৬শ’ খ্রীস্টাব্দে সম্রাট আকবরের শাসনামল থেকে পরবর্তী প্রায় ৬৬ বছর তৎকালীন বাকলার (বর্তমান বরিশাল)’এ মগ সম্প্রদায় যুদ্ধ করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। তৎকালীন সময়ে মগের জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনসহ ত্রাসের রাজত্বে বাকলার আকাশে কোন পাখি পর্যন্ত উড়েনি। মোঘল সেনারাও অসংখ্যবার মগের সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাজিত হয়। সম্রাট আকবরের পরবর্তী সময় সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে কিংকর ভূঁইয়ার পুত্র মদন মোহন ও ছবি খাঁকে বাকলার ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ছবি খাঁ বাকলার ফৌজদার হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর নিজের নেতৃত্বে নিজেই গড়ে তোলেন বিশাল সৈন্যের দল। এক পর্যায়ে তিনি মগের বিরুদ্ধে শেষবারের মতো যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ছবি খাঁর সেই যুদ্ধে বাকলা থেকে মগদের বিতাড়িত হতে হয়।
×