ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক নিয়ে চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের বৈঠক নিয়ে আওয়ামী লীগ মোটেও চিন্তিত নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। শুক্রবার বিকেলে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে হানিফ বলেন, কূটনীতিকরা সামাজিক কারণে বিভিন্নজনের বাসায় যেতেই পারেন। তাই এসব বৈঠক নিয়ে আওয়ামী লীগ চিন্তিত নয়। বিএনপি কূটনীতিকদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু কূটনীতিকরা ভাল করেই জানেন যে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের দল। সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপিকে আগে নষ্ট রাজনীতি এবং নাশকতা-জঙ্গীবাদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ করতে হবে, তারপর সংলাপের ব্যাপারে ভেবে দেখা হবে। আমরা আশা করি বিএনপি তাদের অতীত ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার জন্য নষ্ট রাজনীতি বন্ধ করে ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে আসবে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলার প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, ক্ষমতার জন্য বিএনপি উন্মাদ হয়ে গেছে। এজন্য তারা নিজেদের নেতাকর্মীদের হত্যা করতেও কুণ্ঠাবোধ করছে না। বিএনপির অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা থেকেই রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাঁকে ‘বলির পাঠা’ বানানো হয়েছে। দেশব্যাপী বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ কর্মসূচী আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, অবরোধের নাটক করে দেশবাসীকে ১১ দিন অবরুদ্ধ রেখেছেন বেগম জিয়া। অবরোধের নামে হাতবোমা, পেট্রোল বোমা মেরে নৃশংস কায়দায় মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মানুষ আর খালেদা জিয়ার অবরোধের নাটক দেখতে চায় না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত এক বছর ধরে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা করে আসছে। এ সময় দেশের স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। দেশের যখন উন্নয়ন হচ্ছে আর ঠিক তখনই বিএনপি দেশের অগ্রগতি স্থবির করে দিতে তাদের পাকিস্তানী প্রভুদের নির্দেশে অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা শুরু করেছে। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে হানিফ বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হবে। এর আগে অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা সৃষ্টি করে কোন লাভ নেই। বরং অবরোধ-হরতালে ক্ষয়ক্ষতির সমস্ত দায় বিএনপিকেই নিতে হবে। এর জন্য খালেদা জিয়াকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কেউ বাদ যাবে না। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ফরিদুন্নাহার লাইলী, এনামুল হক শামীম, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিজিবি ডিজির বক্তব্যে দেশবাসীর সমর্থন রয়েছে- সুরঞ্জিত ॥ বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, দু’চারটা ককটেল মেরে, কিছু মানুষকে হত্যা করে একটি নির্বাচিত সরকারকে হঠানো যায় না। নাশকতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনদিনই সংলাপ হবে না। আর দেশে বেশি দিন এই নাশকতা চলতেও দেয়া যায় না। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমি আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বিএনপির এ আন্দোলন শুধু ব্যর্থই হবে না, শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হবে। এক সপ্তাহের মধ্যেই বিএনপির এ আন্দোলন আপনা আপনিই স্থিমিত হয়ে যাবে। বিজিবি মহাপরিচালক বোমাবাজদের ঠেকাতে অস্ত্র ব্যবহারের যে কথা বলেছেন তাতে দেশবাসীর সমর্থন রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানুষের প্রাণ রক্ষা করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তব্য। এজন্য তারা গুলি করতে পারে। হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় নগর আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, সাম্যবাদী দলের হারুন চৌধুরী, আবদুল হাই কানু, হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মানুষকে পুড়িয়ে মারা কী রাজনীতি- ড. হাছান ॥ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, হরতাল-অবরোধের নামে ককটেল-পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা ও সাধারণ মানুষকে দগ্ধ করা মানুষের রাজনীতি হতে পারে না। শুক্রবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবরোধের সময় বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের নিক্ষিপ্ত বোমায় দগ্ধ রোগীদের দেখতে এসে ক্ষোভের সঙ্গেই এ কথা বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দগ্ধ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি বাইরে থেকেও কোন ওষুধ তাদের কিনতে হবে না। দগ্ধদের অনুদান দেয়া হয়েছে, এ অনুদান অব্যাহত থাকবে। এর আগে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২ দগ্ধ রোগীর হাতে পাঁচ হাজার টাকা করে তুলে দেন হাছান মাহমুদ। এ সময় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী উপস্থিত ছিলেন।
×