ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংলাপ চান রিজভী

অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ খালেদার

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ খালেদার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দল ও জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি এ কর্মসূচীতে দলীয় নেতাকর্মীদের সক্রিয়ভাবে মাঠে থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে জিয়া ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল গুলশান কার্যালয়ে সাক্ষাত করতে গেলে বেগম জিয়া এ আহ্বান জানান। জিয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডাঃ ফরহাদ হালিম ডোনার সাংবাদিকদের জানান বেগম জিয়া ভাল আছেন। তাকে দেখে দৃঢ় প্রত্যয়ী মনে হয়েছে। এদিকে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার এক বিবৃতিতে কার্যকর সংলাপের ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি অর্থবহ নির্বাচনের জন্য, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কছে ফিরিয়ে দিতে সরকারকে কার্যকর সংলাপের আয়োজন করতে হবে। বিজিবির মহাপরিচালকের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে বিজিবি প্রধানের এ ধরনের বক্তব্য নজিরবিহীন, অমানবিক ও আতঙ্কজনক। সরকার বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের লোক বসিয়ে এসব বাহিনীকে গণশত্রুতে পরিণত করা হয়েছে। বিজিবির দায়িত্ব সীমান্ত পাহারা দেয়া। প্রায় প্রতিদিনই দেশের লোককে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ফেলানীর লাশ যখন কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে তখন এ ধরনের মহাপরিচালকরা নিশ্চুপ থাকেন। কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে এরা দ্রুত তৎপরতা দেখায়। দলের সহ-দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে রিজভী আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। ক্ষমতায় গেলে কারও প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবে না। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়া ও একটি অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্যই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার এই আন্দোলনে রত আছি। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধ আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে রিজভী বলেন, সরকার এখন খাদের কিনারে রয়েছে। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে দমাতে বর্তমান অবৈধ সরকার জনগণের টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন সরকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। ভোটারবিহীন সরকার এতই অনাচার করেছে যে, জনগণের ক্রোধের ভয়ে দলীয় লোকদের দিয়ে গঠিত আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর প্রহরায় ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। তাই সঙ্কট নিরসন করতে তারা ভয় পাচ্ছে। শান্তি, স্থিতি ও স্বস্তির রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টিতে তারা অনাগ্রহী। এ কারণেই একটি স্বচ্ছ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে ভয় পায়। তিনি বলেন, যৌথবাহিনীর নামে গ্রামেগঞ্জে নিরীহ জনগণের ওপর চালানো হচ্ছে আক্রমণ। র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী মানুষ হত্যার নির্দেশনা নিয়ে চলমান আন্দোলনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। ১৯৭২Ñ৭৫-এর রক্ষীবাহিনীর প্রেতাত্মা নিয়ে এই যৌথবাহিনী গ্রামেগঞ্জে বীভৎস তা-ব চালাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ-কানসাটের কয়েকটি গ্রামে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, বাড়িঘর ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। আতঙ্কে দিশেহারা মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। বাপকে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ছেলেকে কিংবা ছেলেকে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে পিতাকে অথবা ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরিবারের মা-বোনদের সঙ্গে করা হচ্ছে ভয়ঙ্কর অসদাচরণ। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে এই মুহূর্তে কার্যকর সংলাপের ব্যবস্থা করুন। উৎপীড়ন, পরিকল্পিত নাশকতা, প্রকাশ্য গুলি করে অবরোধকারীদের হত্যা আর ধরপাকড়ের পথ থেকে সরে আসুন। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি দিন। যতক্ষণ পর্যন্ত না বিজয় অর্জিত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন। কামরুল হাসান নাসিম মানসিক বিকারগ্রস্তÑ কৃষক দল ॥ এদিকে আসল বিএনপি ঘোষণা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো কামরুল হাসান নাসিমকে মানসিক ভারসাম্যহীন ও বিকারগ্রস্ত বলে উল্লেখ করেছে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ সংগঠনের থেকে বলা হয় এই নামের কোন ব্যক্তি অতীতে কোন দিন কৃষক দলের কোন পদে ছিল না। এখনও নেই। তাঁকে যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই প্রতিহত করারও হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। বিবৃতিতে বলা হয় বিকারগ্রস্ত ওই ব্যক্তি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তথাকথিত সংবাদ সম্মেলন করে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছে। জনৈক কামরুল হাসান নাসিম নামে এক ব্যক্তির সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি কৃষক দলের নজরে এসেছে। তিনি নিজেকে বাংলাদেশ কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে পরিচয় দেয়ায় কৃষক দল এ ব্যাপারে বিবৃতি দেয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে।
×