ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

* প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ ভেন্যু সিলেটে ;###;* টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচন অর্থমন্ত্রীর ;###;* মেলবোর্নে হওয়া গ্রুপিং ড্র ;###;* বাংলাদেশের গ্রুপে মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কা ;###;* বাফুফে সভাপতি বললেন চমক দেখাবে বাংলাদেশ ;###;* নিরাপত

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের বর্ণিল লোগো উন্মোচন

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের বর্ণিল লোগো উন্মোচন

স্পোটর্স রিপোর্টার ॥ ‘অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করে আসছিলাম নিয়মিত টুর্নামেন্টগুলোর বাইরে আন্তর্জাতিক একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের। তবে এ ধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তার কারণÑ আজকাল ফুটবল বিশ্বে এ ধরনের কোন টুর্নামেন্ট হয় না। লীগ ও ঘরোয়া অন্য টুর্নামেন্টের বাইরে এএফসিরও অনেক টুর্নামেন্ট থাকে। এগুলো খেলার পর আর কোন খেলার মতো সময় পাওয়া যায় না। আমি খুব খুশি দেরিতে হলেও অবশেষে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টটি করতে পারছি। শুধু তাই নয়, এটা আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত নিশ্চিতভাবেই অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের অনুরোধ করব তারা যেন এই আসরের খেলাগুলো উপভোগ করতে স্টেডিয়ামে আসেন।’ কথাগুলো কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের। স্বাধীন বাংলাদেশের সেরা ফুটবলার, জীবন্ত কিংবদন্তি। বর্তমানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এবং সাফ ফুটবলের সভাপতির দায়িত্বে। বৃহস্পতিবার বহুল আলোচিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন তিনি। আরও যোগ করেন, ‘এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ স্বাগতিক। আমাকে যদি বলা হয় বাংলাদেশ দলের পক্ষে বাঘের মতো খেলতে, তাহলে সেটা সম্ভব না। কেননা এখন আর আমি ফুটবলার নই। তবে দলকে বাঘের মতো খেলানোর জন্য যা যা করা দরকার, তা করতে পারি। জাতীয় দলের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। এখন তাদের সময় এসেছে নিজেদের মাটিতে সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শন করার। এ রকম একটি বড় মাপের টুর্নামেন্টে যদি বাংলাদেশ ভাল খেলে, তাহলে দর্শকরা উৎসাহিত হবে, মাঠে আসবে। কিন্তু খারাপ খেললে টুর্নামেন্টের জৌলুস কমে যাবে। আমি তো বাংলাদেশ যেন চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলোÑ বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী একাধিক দল এ আসরে খেলবে। তবে বাংলাদেশ যদি অন্তত সেমিফাইনালও খেলে, তাহলেও আমি অখুশি হব না। আর আমার পরবর্তী স্বপ্নÑ বাংলাদেশ যেন এশিয়ার টপ লেভেলের দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। আমরা চাই দেশের ফুটবল আরও উত্তরোত্তর উন্নতি করবে। আর একসঙ্গে কাজ করলে তা অসম্ভব নয়।’ কোন কিছু সফলভাবে সুসম্পন্ন করতে হলে সবার আগে চাই নিখুঁত পরিকল্পনা। যাকে বলা হয় ‘মাস্টার প্ল্যান।’ তবে পরিকল্পনা যে একেবারেই অপরিবর্তিত থাকবে, এমন কোন কথা নেই। অভীষ্ট লক্ষ্যে উপনীত হতে গেলে প্রয়োজনে পরিবর্তন আনতে হয় পরিকল্পনায়। এই যেমন পরিবর্তন এনেছে বাফুফে। সেটা উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু নিয়ে। এতদিন বাফুফে বলে এসেছে আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু হবে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। তবে বৃহস্পতিবার টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানের পর বদলে গেল সেই ঘোষণা। এখন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম নয়, টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ভেন্যু হবে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। লোগা উন্মোচন অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাত করেন বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। সাক্ষাতে সালাউদ্দিন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন হাসিনাকে। প্রধানমন্ত্রী তখন সিলেট ভেন্যু সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-নেপাল ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটি উপভোগ করতে দর্শক-ঢল নেমেছিল। ২৫ হাজার আসনবিশিষ্ট স্টেডিয়ামে প্রায় দর্শক ঢুকে পড়ে ৫০ হাজার! এছাড়া স্টেডিয়ামের বাইরে ছিল অপেক্ষমাণ আরও ৫০ হাজার দর্শক! এ বিষয়টি জানতেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া টুর্নামেন্টের লোগো উন্মোচনকারী এবং টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের জন্মস্থানও সিলেট। সবমিলিয়ে শেখ হাসিনা নির্দেশ দেন সালাউদ্দিনকেÑ সিলেটেই যেন টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচটি হয়। বৃহস্পতিবার সিলেট ডিএফএর সভাপতি মাহিউদ্দিন সেলিমই এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। লোগা উন্মোচন ও ড্র অনুষ্ঠানে মুহিত এবং সালাউদ্দিন ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাফুফে সদস্য সামশুল হক এমপি, টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা এনায়েতুর রহমান বাপ্পীসহ আরও অনেকে। লোগো উন্মোচনের আগে প্রজেক্টরে প্রদর্শন করা হয় একটি ভিডিও তথ্যচিত্র, যাতে ১৯৭১ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাস, সুপারস্টার এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আদ্যোপান্ত দেখানো হয়। এছাড়া দেখানো হয় লোগোর গ্রাফিক্যাল ভিডিও। বাংলাদেশের গ্রুপে মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কা ॥ বৃহস্পতিবার গ্রুপিং ড্র হয়নি। হয়েছে আরও আগেই! সপ্তাহখানেক আগে সালাউদ্দিন গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে। সেখানেই তিনি আমন্ত্রিত দেশগুলোর সভাপতিদের সম্মতি নিয়ে গ্রুপিং ড্র করেন। যা প্রকাশ হয় বৃহস্পতিবার লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে। অর্থমন্ত্রী যা বললেন ॥ লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘বাফুফেকে ধন্যবাদ এমন একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য এবং আমাকে তাদের সঙ্গে রাখার জন্য। আগামী ৫ বছর তারা বাঙালী জাতির জনকের নামের এ টুর্নামেন্টটি আয়োজন করতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছে। তাই ভাল লাগছে। আশা করছি এই টুর্নামেন্টটি দেখতে অনেক লোক মাঠে আসবে এবং টুর্নামেন্টটি সফল হবে। বাফুফের এ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। বাংলাদেশের ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে জেলা পর্যায়ে বাফুফের কর্মকা- পরিচালিত করতে হবে।’ অর্থমন্ত্রী মজা করে আরও বলেন, ‘অল্পবয়সে প্রচুর খেলাধুলা করলেও ফুটবলটা মোটেও ভাল খেলতাম না! খেলতে গিয়ে প্রায়ই চোট পেতাম। পায়ে হলুদ-মরিচ মিশিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে নিজেই চিকিৎসা করতাম।’ পরিশেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকার যেহেতু খেলাধুলা নিয়ে গভীরভাবে আগ্রহী, কাজেই আশা করি তারা ফুটবলের উন্নয়নেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।’
×