ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আইন অমান্য ॥ চরমোনাইর মুফতি জানান তালাক হয়ে গেছে

ফতোয়ায় ভেঙ্গে গেল বরিশালে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর সংসার

প্রকাশিত: ০৩:০৯, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫

ফতোয়ায় ভেঙ্গে গেল বরিশালে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর সংসার

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ আইনের তোয়াক্কা না করে ফতোয়াবাজদের দেয়া ফতোয়ার কারণেই অবশেষে ভেঙ্গে গেল জেলার গৌরনদী পৌর এলাকার দিয়াশুর মহল্লার বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা সুমনা বেগমের সুখের সংসার। তিনটি সন্তান রেখেই বরযাত্রী করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বুধবার সন্ধ্যায় বাড়িতে এনেছেন সুমনার সৌদি প্রবাসী স্বামী শাহীন সিকদার। এ নিয়ে ওই এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দিয়াশুর মহল্লার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সিকদারের সৌদি প্রবাসী পুত্র শাহীন সিকদার ফতোয়াবাজ মুফতিদের কথায় বিশ্বাস করেই তার প্রথম স্ত্রী সুমনা বেগমকে মৌখিক তালাক দিয়েই বুধবার ২৫ বরযাত্রী নিয়ে কাছেমাবাদ (হাইমার্কেট) মহল্লার বাসিন্দা জনৈক মজিদ সরদারের কন্যা খালেদা বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সূত্রমতে, ২০০৭ সালে পার্শ্ববর্তী চরদিয়াশুর গ্রামের দিনমজুর আইউব আলী হাওলাদারের কন্যা সুমনা বেগমের সঙ্গে সামাজিকভাবে শাহীনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সুখের সংসারে একে একে দুটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। বর্তমানে সুমনা দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আরও জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই গৃহবধূ সুমনা বেগম (৩০) সবসময় পর্দানশীন হয়ে চলাফেরা করতেন। সুমনা জানান, তাঁর পর্দানশীন হয়ে চলাফেরার বিষয়টি ভাল চোখে দেখতেন না স্বামী শাহীন সিকদার ও তার পরিবারের লোকজনে। সম্প্রতি শাহীন প্রবাস থেকে ছুটিতে দেশে আসেন। অতিসম্প্রতি শাহীন তার সঙ্গে মার্কেটে যাওয়ার জন্য সুমনাকে চাপ প্রয়োগ করেন। মার্কেটে যেতে না চাওয়ায় শাহীনের সঙ্গে তার (সুমনার) বাগ্বিত-ার হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শাহীন সুমনা বেগমকে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় চরমোনাই কওমী মাদ্রাসার ফতোয়া বিভাগের প্রধান মুফতির কাছে লিখিতভাবে আবেদন করে সমাধান চান প্রবাসী স্বামী শাহীন সিকদার। শরিয়ত মোতাবেক তিনজন মুফতি লিখিতভাবে অভিযোগকারী স্বামী শাহিন সিকদারকে জানান, তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হয়ে যাওয়ায় একে অপরের জন্য তাঁরা হারাম হয়ে গেছেন এবং তাঁদের বৈবাহিক কোন সম্পর্ক নেই।
×