ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাহজালালে সাত কোটি টাকার ১২০ সোনার বার উদ্ধার, উড়োজাহাজ জব্দ

প্রকাশিত: ০৭:২৬, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

শাহজালালে সাত কোটি টাকার ১২০ সোনার বার উদ্ধার, উড়োজাহাজ জব্দ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কাছে আগাম তথ্য ছিল, বিমানের দু’জন দুর্দান্ত স্মাগলার এখনও সোনার বড় বড় চালান আনছে। তারপর থেকেই নজরদারিতে রাখা হয় ওই দু’জনকে। এ অবস্থায় বুধবার সকালে সরাসরি মহাপরিচালক ডক্টর মইনুল খানের কাছে দুবাই থেকে ফোন আসে, বিমানের একটি ফ্লাইট বিপুল পরিমাণ সোনা নিয়ে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় পৌঁছবে দুপুরে। সে সূত্রেই একটি টিম নিয়ে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অপারেশন চালায় শুল্ক বিভাগ। মেলে কাক্সিক্ষত সোনা। বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের কার্গো হোল থেকে বের করে আনা হয় ১২০ সোনার বার, যার ওজন ১৪ কেজি, বাজার মূল্য ৭ কোটি টাকা। তবে অপারেশনের সময় গা-ঢাকা দিতে সক্ষম হয় বিমানের ওই দুই কর্মচারী। রাত ৮টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় গোটা বিমানবন্দর ঘিরে তাদের আটকের জন্য শুল্ক বিভাগের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছিল। মহাপরিচালক ডক্টর মইনুল খান জনকণ্ঠকে বলেন, ওই দু’জন অপারেশনের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আগেই কেটে পড়ে। তবে তারা ধরা পড়বেই। দুবাই থেকে বিমানের বিজি ০৪৬ ফ্লাইটের কার্গো হোলে করে ওই সোনা আনা হয়। বিমানটি চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় পৌঁছে দুপুরে। ৬ নং বোর্ডিংব্রিজে লাগানোর পর পর সব যাত্রী বের হয়ে যান। এরপর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতিতে শুল্ক গোয়েন্দারা ওই ফ্লাইটে অভিযান চালায়। প্রথমে যাত্রীদের প্রতিটি সিট ও টয়লেটের ভেতরে খোঁজা হয়। কোথাও না পেয়ে সর্বশেষ অনুসন্ধান চালানো হয় কার্গো হোলের ভেতরে। তখনই দেখা যায় কাঁথার ভেতরে লুকানো ১২০ সোনার বার। জব্দ করার পর সেগুলো নিয়ে আসা হয় কাস্টমস হলে। ওই এয়ারক্রাফটও জব্দ করা হয়। ডক্টর মইনুল খান বলেন, কাস্টমস এ্যাক্টের সেকশন ২ এল, ২ জি-১৫ ধারায় বলা আছে, যে যানবাহনে চোরাচালানের পণ্য ধরা পড়বে, সেটাও জব্দ করে আইনের আওতায় আনা হবে। যদি প্রমাণ হয় তাহলে ওই যানবাহনের দশগুণ মূল্য জরিমানা আদায় করা হবে। তিনি বলেন, এর আগেও বিমানের আরও একটি উড়োজাহাজ জব্দ করা হয়েছিল। তারপর বিমানকে সতর্ক করাও হয়েছিল, যাতে কোন উড়োজাহাজকে চোরাচালানে ব্যবহার করা না হয়, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। কিন্তু বিমান এ সতর্ক বার্তায় কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আর উড়োজাহাজের এমন এক অংশে সোনাগুলো লুকানো ছিল যেটা কোন যাত্রীর পক্ষে সম্ভব নয়। বিমানের লোকজনের সহায়তা ছাড়া অন্য কেউ এ কাজ করতে পারবে না। এদিকে অপর একটি সোনার চালান ধরার জন্য রাতে শাহজালালের বিভিন্ন পয়েন্টে সাঁড়াশি অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দারা। এ চালানটিও একই চক্র এনেছে বলে তথ্য রয়েছে। লাগেজ হয়রানি, এয়ার এ্যারাবিয়াকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ॥ এদিকে একই দিন যাত্রীদের লাগেজ হয়রানির দায়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এয়ার এ্যারাবিয়াকে। বিমানবন্দর মোবাইল কোর্টের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন এ জরিমানা করেন। যথাসময়ে সঠিকভাবে লাগেজ সার্ভিস না পেয়ে যাত্রীরা চরম হয়রানির শিকার হন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সরেজমিনে এ অব্যবস্থাপনা দেখতে পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেন। তিনি তাৎক্ষণিক শুনানি শেষে এয়ার এ্যারাবিয়াকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। এর আগেও ওই আদালত লাগেজ হয়রানির দরুন ইউনাইটেড এয়ারওয়েজকেও আর্থিক জরিমানা প্রদান করে।
×