ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডো ভাসছেন প্রশংসার স্রোতে তবে...

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

রোনাল্ডো ভাসছেন প্রশংসার স্রোতে তবে...

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তাঁকে নিয়ে মাতামাতি সবসময়। সেটা কারণে কিংবা অকারণে। স্বভাব অনেকটাই ফুটবল কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার মতো। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা। ফুটবলে নামডাকের কমতি নেই; রূপটাও আগুন ঝড়ানো। তাই তো মুহূর্তেই সুন্দরী রমণীরা তার বাহুডোরে আস্তানা গাড়তে ভিড় জমায়। হ্যাঁ, বর্তমান বিশ্ব ফুটবলের সেরা তারকা ও সুদর্শন যুবক পর্তুগীজ তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কথাই আলোকপাত করা হচ্ছে। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে এই তরুণের উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে ওপর ভর করে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিল পর্তুগীজরা। এরপর রিয়াল মাদ্রিদ তাকে দলে ভেড়ায় ট্রান্সফারের নয়া ইতিহাস গড়ে। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে এসে পারফর্মেন্সটা আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে সি আর সেভেনের। স্বাভাবিকভাবেই ২০১০ বিশ্বকাপেও তাঁর ওপর অগাধ প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বিপথগামী হওয়া শুরু ক্রিশ্চিয়ানোর! ফুটবল ভুলে একের পর এক নারীকে নিয়ে ফূর্তিতে মেতে ওঠেন। প্রায় সময়ই তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায় নাইট ক্লাবে। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় পর্বে হেরে পর্তুগীজরা তার মাসুলও গুনে। চার বছর পর ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপেও ব্যর্থ হন তিনি। কিন্তু ব্যর্থতা এই একটিই। তাছাড়া গেল বছরে সব সাফল্য নিজের পদতলে আঁচড়ে ফেলেছেন ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। যে কারণে আবারও ফিফা ব্যালন ডি’অর নিজের করে নিয়েছেন রোনাল্ডো। সোমবার জুরিখে টানা দ্বিতীয়বার ফিফা সেরার এ্যাওয়ার্ড পান তিনি। এরপর থেকে রোনাল্ডোকে নিয়ে চলছে মাতামাতি। গোটা বিশ্বের প্রশংসার স্রোতে ভাসছেন তিনি। এর মধ্যেও অবশ্য ঘাটতি যে নেই তা নয়। অনেকেই সি আর সেভেনের সাফল্য নিয়ে কটাক্ষ করেছেন! এই যেমন পোল্যান্ডের তারকা রবার্ট লেভানডোস্কি বলেছেন, তিনি রোনাল্ডোকে ভোট দিয়ে ভুল করেছেন। আর জার্মানরা তো কিছুতেই মানতে পারছেন না ম্যানুয়েল নিউয়ের কেন সেরা হলেন না। এসব নিয়ে এখন আলোচনা-সমালোচনায় মুখর ফুটবলবিশ্ব। অনেকেই আশা করেছিলেন এবার প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে ফিফা ব্যালন ডি’অর জেতবেন নিউয়ের। ব্রাজিল বিশ্বকাপে নিজ দেশে জার্মানির হয়ে ও ক্লাব দল বেয়ার্ন মিউনিখের হয়ে অসাধারণ সাফল্যই তাকে নিয়ে আশাবাদী করে তুলেছিল অনেককে। বিশেষ করে জার্মানদের। দিয়াগো ম্যারাডোনা পর্যন্ত বলে দিয়েছিলেন, নিউয়ের না পেলে অন্যায় হবে। সেই অন্যায়ই অবশেষে হয়েছে! আপসোসের বিষয় হচ্ছে, প্রথম তো দূরে থাক জার্মান গোলরক্ষক দ্বিতীয়ও হতে পারেননি। তৃতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাঁকে। যে কারণে হতাশ বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ফিফা ব্যালন ডি’অরের এই ফল মেনে নিতে পারছেন না জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ জোয়াকিম লো। হতাশার সুরে তিনি বলেন, ম্যানুয়েলের জন্য আমি কিছুটা হতাশ। কারণ, বিশ্বকাপে ম্যানুয়েল একেবারে ভিন্ন রকম গোলকিপিং দেখিয়েছে এবং এমনটা এর আগে কখনও ঘটেনি। জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো সাবেক অধিনায়ক ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারও নিউয়েরের ব্যালন ডি’অর না জেতটা মানতে পারছেন না। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এটা অন্যায্য, অন্যায়। পোল্যান্ডের অধিনায়ক রবার্ট লেভানডোস্কি বলেছেন, রোনাল্ডোকে ভোট দিয়ে তিনি ভুল করেছেন। বেয়ার্নের হয়ে খেলা এই তারকা ক্লাব সতীর্থ নিউয়েরকে না দিয়ে সি আর সেভেনকে ভোট দেন। অথচ এখন তিনি বলছেন, নিউয়েরকেই তার মূল্যবান ভোটটি দেয়া উচিত ছিল। এ প্রসঙ্গে লেভানডোস্কি বলেন, নিউয়েরকে রেখে রোনাল্ডোকে ভোট দেয়া আমার ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। যদি সুযোগ থাকত তবে, আমি নিউয়েরকে ভোটটি দিতাম। কিন্তু আমি গত আগস্ট মাসেই আমার ভোটটি রোনাল্ডোকে দিয়ে দিয়েছি। ক্লাব সতীর্থকে ভোট দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন পোলিশ স্ট্রাইকার। বলেন, নিউয়েরের কাছে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি অবাক হয়েছি তাকে দ্বিতীয় হতে না দেখে। রোনাল্ডোর সঙ্গে তার ব্যবধান অনেক হলেও নিউয়ের দ্বিতীয় হওয়ার যোগ্য ছিল। সে অসাধারণ গোলরক্ষক।
×