ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নাসির-সাব্বিরের লক্ষ্য দলের সাফল্য

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

নাসির-সাব্বিরের লক্ষ্য দলের সাফল্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুইজনই অলরাউন্ডার। দুইজনই ব্যাটিংয়ে শেষ সময়ে বাংলাদেশের তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন। আবার দুইজনকে নিয়েই বোলিংয়ে ‘জুয়া’ খেলা যায়। অর্থাৎ ব্রেক থ্রু এনে দিতে পারেন দুইজনই। দুইজনই আবার দলের সেরা ফিল্ডারও। সবদিকেই দুইজনের খেলার ধরনও একই। দুইজনই আবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ মঞ্চে খেলতে নামবেন। কিন্তু মাঠে একাদশে দুইজনকেই একসঙ্গে দেখা না যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ দুইজনের একজন জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়ে আবার ফেরা ‘দ্য ফিনিশার’ খ্যাত নাসির হোসেন। আরেকজন সাব্বির রহমান রুম্মন। বিশ্বকাপের উদ্দেশে এখন চলছে প্রস্তুতি ক্যাম্প। বুধবার ক্যাম্প শেষে আবার দুইজনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে আসলেন। কিন্তু কারও মুখ দিয়েই বের হলো না নির্দিষ্ট লক্ষ্যের কথা। যেন লক্ষ্যহীন পথেই হাঁটছেন এ দুই অলরাউন্ডার। তবে সবকিছুর উর্ধে সবার আগে চান দলের জয়ই। লক্ষ্যের কথা জিজ্ঞেস করতেই নাসির হোসেন যেমন বললেন, ‘এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। আমি যেটা চাই, হারি জিতি পরের কথা যেন ধারাবাহিক ভাল ক্রিকেট খেলতে পারি।’ আর সাব্বিরের তো কোন লক্ষ্যই নেই, ‘আমার ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য নেই। আমি লক্ষ্য সেটআপ করি না। দলের পরিস্থিতি অনুযায়ী যেভাবে খেলা দরকার, সেভাবেই আমি খেলার চেষ্টা করব।’ ফর্মহীনতায় ভোগায় জিম্বাবুইয়ে সিরিজে নাসিরকে দলেই রাখা হয়নি। মনে করা হচ্ছিল বিশ্বকাপ দলেও এ অলরাউন্ডারের জায়গা হবে না। কিন্তু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে এতটাই ভাল খেলেছেন, বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে জায়গা করে নিয়েছেন। সেই নাসিরকে কী আবার মিলবে? নাসির বললেন, ‘আমি আগেও যেমন ছিলাম এখনও তেমন আছি। ফিরে পাওয়া আর না পাওয়াটা ম্যাচের ওপর নির্ভর করবে। আমি পারফর্ম করেছি প্রিমিয়ার লীগে কিন্তু লীগের ম্যাচ আর আন্তর্জাতিক ম্যাচে অনেক তফাৎ। আমি তখনই ভাবব যখন আমি আন্তর্জাতিক ম্যাচে পারফর্মেন্স করব। যখন আমি পারফর্ম করব তখন আমি বলতে পারব।’ নাসির না সাব্বির দলে থাকবেন? এ প্রশ্ন বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণার আগে ভেসে বেড়িয়েছে। দেখা গেল দুইজনই আছেন। দুইজনের মধ্যে তাই প্রতিযোগিতা কাজ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সাব্বির সেভাবে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা দুইজনই একই ক্যাটাগরির খেলোয়াড়। আমি ওভাবে কোনদিন চিন্তা করিনি আমাদের মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা আছে। আমি আমার সাধারণ খেলা খেলেছি প্রিমিয়ার লীগে। সুযোগ পাওয়া আর না পাওয়া এটা পুরোপুরি নির্বাচকদের ওপর ছিল। সুযোগ পেয়েছি দুইজন এক সঙ্গে, তাই ভাল লাগছে; এটা ভেবে এক সঙ্গে খেলতে পারব।’ নাসিরও একই কথা বললেন, ‘ওর (সাব্বির) সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছি এভাবে বলাটা ঠিক না। আমার কাজ ছিল ভাল খেলার। আমি চেষ্টা করেছি ভাল খেলার। সুযোগ পেয়েছি; ব্যক্তিগতভাবে আমার খুব ভাল লেগেছে। রুম্মন বা আমি এমন কিছুই আমার মাথায় ছিল না।’ নাসির ও সাব্বির দুইজনই ৫, ৬, ৭ নম্বর পজিশনের জন্য যোগ্য ক্রিকেটার। কিন্তু এ জায়গা কতটা চ্যালেঞ্জিং? নাসির বলেছেন, ‘আমিও বলব ৫-৬-৭ একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এই জায়গায় অনেক সময় দেখা যায় ২০ রানই অনেক বড় ব্যাপার। চেষ্টা থাকবে টিম যখন যেভাবে যা চায় সেভাবে ব্যাটিং করা। আর তেমন কোন লক্ষ্য নেই ওই জায়গায়। আমরা যখন নামি তখন হয়ত ১২-১৫ ওভার বাকি থাকে বেশির ভাগ সময়ই। অনেক সময় তাও থাকে না। এই ৫-৬ ওভারের মধ্যে আপনি কি লক্ষ্য সেট করবেন। তখন হয়ত টার্গেট থাকে ৫ ওভারে ৫০ কিংবা ৪০ রান। সেভাবেই খেলার চেষ্টা করব।’ সাব্বির এ বিষয় নিয়ে মনে করছেন, ‘৫-৬-৭ এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গা। এখানে সফল এবং ব্যর্থ দুইটা হওয়ারই সুযোগ থাকে। এমন সিচুয়েশনে আমি যখন নামব তখন হয়ত বল টু বল রান করতে হবে। চেষ্টা করব সেভাবেই খেলার জন্য। দলকে কিছু দেয়ার জন্য।’ দুইজন দলে থাকলেও হয়ত একাদশে যে কোন একজন থাকবেন। এ নিয়ে কোন প্রতিযোগিতা নেই? নাসির বললেন, ‘প্রতিযোগিতা নেই এটা বলাটা অনেক কঠিন। তাহলে তো বাকি ১৩ জনের সঙ্গেও আমার প্রতিযোগিতা।’ আর সাব্বির জানালেন, ‘আমার সঙ্গে নাসিরের কোন প্রতিযোগিতা ছিল না। নাসির আলাদা খেলে আমি আলাদা খেলি। দল জেতাটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি খেলি আর নাসির খেলুক এটা বড় ব্যাপার নয়।’ দুইজনই শেষ সময়ে ব্যাটিংয়ের ভরসা। বোলিংয়েও এ দুইজনকে নিয়ে ‘গ্যাম্বলিং’ করা যায়। নাসির বোলিং নিয়ে জানান, ‘ঘরোয়া লীগে আমি বোলিং করি সব সময়। হয়ত জাতীয় দলে অনেক অপশন থাকে। তাই বোলিং করা হয় না। তারপরও আমাদের কোচ বলেছে হয়ত আমরা দশ ওভার বোলিং করব না। যখন লাগবে হয়ত ৪-৫ ওভার বোলিং করব। আমরা ওইভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি যেন দলের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এসে ৫-৬ ওভার ভাল বোলিং করে দিতে পারি।’ সাব্বির বলেন, ‘আমরা হয়ত এমন অপশন পাই না বল করার জন্য। আমরা চেষ্টা করব যখন আমাদের গ্যাম্বলিং করা দরকার ওই ৪-৫ ওভার ভাল বোলিং করার জন্য। চেষ্টা করব ৪-৫ ওভারে দলকে ভাল কিছু দেয়ার জন্য।’ শুধু ব্যাটিং, বোলিংয়েই নয়; প্রয়োজনে ফিল্ডিংয়েও দুইজনই দলকে ভাল কিছু দিতে চান। নাসিরই যেমন বললেন, ‘ফিল্ডিং একটা বড় পার্ট দলের জন্য। ভাল ফিল্ডিং করলে দলে কিছু দেয়া যায়। আমি চেষ্টা করব ভাল ফিল্ডি করার জন্য। ব্যাটিং করলে যদি ব্যর্থ হই চেষ্টা করব ফিল্ডিং দিয়ে সেটা পুষিয়ে নেয়ার।’
×