ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গণশত্রু প্রতিরোধে গণরোষ

প্রকাশিত: ০৩:০৪, ১৫ জানুয়ারি ২০১৫

গণশত্রু প্রতিরোধে গণরোষ

কোন কারণ ছাড়াই নির্বিবাদে নির্বিচারে মানুষ হত্যা, সম্পদ বিনষ্ট, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আবার উচ্চকণ্ঠে ‘বকোয়াজ’ চালিয়ে যাচ্ছে যারা, তারা কোনক্রমেই গণমানুষের বন্ধু বা স্বজন নয়। তারা মূলত গণশত্রু। যে কোন স্তরের মানুষই তা শুনে আপ্লুত হবে- এমন যারা ভেবে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, তারা গণবিরোধী চেতনায় লালিত। জনগণের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে, তারা জনগণের হিতাকাক্সক্ষী নয়, হতে পারে না। মানুষ মারার লাইসেন্স নিয়ে তারা যেন নানা পন্থায় নিরীহ জনগণকে খুনের পর খুন করে যাচ্ছে। দশ বছর আগে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলায় হত্যা করতে না পারাদের ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। সেই তারাই এখন প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে গণমানুষের প্রাণ সংহারে নেমেছে। ওদের অপকর্ম বিষয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। না হলে এভাবে বোমাবাজি, অগ্নিসংযোগ, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে মৃত্যুর মহামিছিলে সাধারণ মানুষের সারি বাড়ানোর মতো নারকীয় কর্মকা- অবলীলায় চালিয়ে যাচ্ছে কিভাবে? রাজনীতি করা যাদের কাজ, দেশ ও জনগণ হচ্ছে তাদের মূল বিষয়। জনগণের মঙ্গল ও কল্যাণ সাধনা যাদের ব্রত হওয়ার কথা, সেই তারা দলীয় কর্মী, ভাড়াটে সন্ত্রাসী আর জঙ্গীদের লেলিয়ে দিয়ে দেশজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকা- অব্যাহত রেখে সাধারণ নিরীহ মানুষের প্রাণ সংহারে উল্লসিত হয়ে উঠছে। এরাই ২০০১ সালে দেশজুড়ে যে তা-ব চালিয়েছিল কিংবা ২০১৩ সালে দেশ ধ্বংসের জন্য যে লীলাখেলা শুরু করেছিল, গণরোষে পরাস্ত হলেও তা থেকে একবিন্দু সরে আসেনি। ১৯৭১ সালে দেশের সাধারণ কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, যুবক, পুলিশ, বিডিয়ার ও সেনাবাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে আবার পাকিস্তানী চেতনায় ফিরে যেতে নয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তির কাজ বিঘ্ন ঘটাতে যারা নানা ফন্দি ফিকির এখনও চালিয়ে যাচ্ছে, তারা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। তাই তারা সম্পদহানিও ঘটাচ্ছে। দেশের জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু সরকার যদি এসব নাশকতা, সন্ত্রাস, জঙ্গীপনা রোধে আরও কঠোর না হয়, তবে জনগণই এগিয়ে আসবে প্রতিরোধ গড়তে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে বলেছেন মানুষ হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে। পাড়া, মহল্লায় চিরুনি তল্লাশি চালিয়ে বোমাবাজ, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীদের চিহ্নিত করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এই আহ্বান যে সময়োপযোগী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদের নির্মূল করতে জনগণই এগিয়ে আসবে। আর এক্ষেত্রে সরকার হয়ে উঠুক সহায়ক শক্তি- এমনটাই গণপ্রত্যাশা।
×