ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এনামুল-সৌম্যের লক্ষ্য দক্ষতা বাড়ানো

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

এনামুল-সৌম্যের লক্ষ্য দক্ষতা বাড়ানো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবারই প্রথম বিশ্বকাপের মতো বড় একটি মঞ্চে খেলার সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশের দুই তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটার এনামুল হক বিজয় আর সৌম্য সরকার। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বৈরী পরিবেশে এ দুই তরুণের ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যাটিংয়ের টপঅর্ডার। এনামুল দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে অভিজ্ঞতায় কিছুটা এগিয়ে থাকলেও মাত্র একটি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে সৌম্যের। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে নতুন করে কোন কৌশল রপ্ত করতে চান না এ দু’জন। নিজস্ব দক্ষতাটা আরও বাড়াতে অনুশীলনে বিশেষ মনোযোগ দিতে চান এ দুই তরুণ। উদ্বোধনী জুটির ওপরই নির্ভর করে দলের ব্যাটিং কোন একটি ম্যাচে কেমন হবে। সে কারণে এনামুলের লক্ষ্য যতক্ষণ সম্ভব উইকেটে টিকে থাকা। বাউন্সি ও গতিময় উইকেটের জন্য এখন শর্ট অব লেন্থের বলে হুক-পুলের অনুশীলন করছেন তিনি। একই কাজ করে যাচ্ছেন সৌম্যও। তবে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি পেস বোলিং করার যোগ্যতা থাকায় সেটা নিয়েও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তাঁর লক্ষ্য একাদশে সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করা। মঙ্গলবার এসব অনুশীলন শেষে এসব কথা বলেন এ দুই তরুণ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে সোমবার থেকে ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দল অনুশীলন শুরু করে। তবে প্রথম দিন হালকা ব্যায়াম, শারীরিক সামর্থ্য পরীক্ষাতেই শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো স্কিল ট্রেনিং। ব্যাটসম্যান ও বোলাররা ঘাম ঝরিয়েছেন দীর্ঘক্ষণ মাঠের অনুশীলনে। বিশেষ ব্যবস্থায় অনুশীলন করেছেন এনামুলরা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং করার সময় নতুন বলটা অনেক কঠিন থাকে। পরিস্থিতিটা কিভাবে পার করা যায় এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি আমার জন্য। আমি মনে করি অনুশীলনে এটা উন্নতি করা সম্ভব। আমি অনুশীলন করছি এবং অস্ট্রেলিয়াতে গিয়ে বেশকিছু অনুশীলন ম্যাচ আছে ওখানে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব। যখন আমি উইকেটে থাকি বল নষ্ট করলেও আমার মনে হয় দলের রানও আড়াই শ’র ওপরে থাকে। আমার উইকেটে থাকাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি উইকেটে থাকার চেষ্টা করব। ওখানে উইকেটটা একটু স্কিড করে। ব্যাটে খুব দ্রুত আসে। এ জন্যই এটা (উইকেটে পাথর ব্যবহার) করা। এটা করলে আমাদের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে।’ অনুর্ধ-১৯ দলের হয়ে যুব বিশ্বকাপ খেলেছেন এনামুল অস্ট্রেলিয়ায় এবং সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন ওই আসরে। এবার বড়দের বিশ্বকাপ। নিজের লক্ষ্য নিয়ে এনামুল বলেন, ‘এটা একটা ভাল বিষয় বলতে পারেন। সাকিব ভাই বিগব্যাশ খেলছে। আমাদের দলে বেশকিছু খেলোয়াড়ের অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা আছে ২০১২ সালে। এটা আমাদের জন্য একটা ভাল দিক। আগে থেকে একটু প্রস্তুতি নেয়ার জন্য সুবিধা হয়েছে। একজন ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার যখন খেলে তখন সবাই ভাল খেলার লক্ষ্য থাকে। জিম্বাবুইয়ে সিরিজটা আমাদের সবার ভাল গেছে। সে হিসেবে রাড়তি একটা আত্মবিশ্বাস থাকে। বিশ্বকাপের মতো আসরে নিজেকে আর বড় করে পরিচিত করা। বড় বড় স্কোর করা। সর্বোচ্চ রান করার লক্ষ্যটা নিয়ে ওইভাবে এখনও চিন্তা করিনি।’ এনামুল জানিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে সুপার লীগে উইকেট বেশ ভাল ছিল। এ কারণে তাঁর দাবি প্রস্তুতি ভাল হয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ায় আরও ১৪ দিনের একটা ক্যাম্প আছে যাতে ঘাটতি হবে না। একেবারেই নবাগত ক্রিকেটার সৌম্য। মাত্র এক ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞতা। বিশ্বকাপের মূল দলে ঠাঁই পেয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মেন দলে আছে যেহেতু চেষ্টা থাকবে সুযোগ পেলে ভাল খেলার।’ যুব বিশ্বকাপেও খেলে ভাল নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে অবশ্যই কাজে লাগবে, অভিজ্ঞতা যেহেতু আছে। সেটা যুব বিশ্বকাপ ছিল আর এটা বড়দের বিশ্বকাপ। চেষ্টা করব উইকেট এবং আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে। যদিও দুই বছর আগে ছিল সেটা, তারপরও অভিজ্ঞতা যেহেতু আছে সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’ তবে নিজের ব্যাটিংয়ের ধরনে কোন পরিবর্তন ঘটাতে চান না। মূলত টপঅর্ডারে ব্যাটিং করলেও দল যেখানে খেলাবে সেখানেই খেলতে সক্ষম বলে দাবি এ তরুণের। সৌম্য বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে ওইরকম কিছু পরিবর্তন করা লাগে না। যেহেতু ক্রিকেটের সব নিয়মকানুন একই। শুধু উইকেটটা একটু আলাদা। বেসিক পরিবর্তন করলে আলাদা কিছু হবে না। নিজের বেসিকে থাকলে আমার মনে হয় ভাল হবে। শর্ট বল নিয়ে আমি এরই মধ্যে অনুশীলন শুরু করেছি। বাকি সময়গুলোতেও আমি শর্টবলগুলো অনুশীলনের চেষ্টা করব। উচ্চতার জন্য একটু হলেও সুবিধা পাব। আমি সব সময় ওপরে ব্যাটিং করি। তবে দলের স্বার্থে আমাকে যেখানে খেলানো হবে সেখানেই খেলব।’ ব্যাটসম্যান ছাড়াও আলাদা একটা পরিচয় আছে সৌম্যের। পেস বোলিং করতে পারেন। তবে গতিটা কম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বলের পেসটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি চেষ্টা করছি অনুশীলনের মাধ্যমে সামঞ্জস্য আনতে। মূল বোলারদের পর বোলিং মেশিন দিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমার বলে যেহেতু বেশি পেস নাই। জায়গা মতো বল করতে হবে। কিংবা সেøায়ারটা ঠিকমত দিতে পারলে ভাল হবে।’
×