ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভয় পাওয়ার দল আওয়ামী লীগ নয় ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

ভয় পাওয়ার দল আওয়ামী লীগ নয় ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, দু’চারটি বোমা মেরে নাসিমকে ভয় দেখানো যাবে না। আওয়ামী লীগ গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে, যুদ্ধ করে এখানে এসেছে। ভয় পাওয়ার দল আওয়ামী লীগ নয়। খালেদা জিয়া ঘরে বসে টাকা দিয়ে বোমা মেরে কিছুই করতে পারবেন না। পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে সন্ধানীর অনুষ্ঠানস্থলের অদূরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটার পর ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোহাম্মদ নাসিম একথা বলেন। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের উপস্থিতিতে চারটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে। বিএনপির অবরোধের মধ্যে মঙ্গলবার বেলা সোয়া দু’টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধ্যানী আয়োজিত ওই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ডোগ দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজি সেলিম ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ হাবিবে মিল্লাত। বেলা দু’টার দিকে মোহাম্মদ নাসিম অন্য অতিথিদের নিয়ে আসন গ্রহণ করেন। বেলা সোয়া দু’টার দিকে অতিথিদের ফুল দেয়া হচ্ছিল। এ সময় একে একে চারটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তখন সবাই আতঙ্কিত হয়ে ছুটতে থাকলে মাইকে সবাইকে শান্ত থাকতে বলা হয়। খবর পেয়ে বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশের লালবাগ জোনের ডিসি আহমেদ মফিজ ঘটনাস্থলে যান। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি। কলেজ এলাকার আশপাশের ছাদগুলোতে পুলিশের তল্লাশি চালাতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেডিক্যাল কলেজের কর্মচারীরা জানান, মন্ত্রীসহ অতিথিরা মঞ্চেই ছিলেন। উদ্বোধনী পর্বে কোরান তেলাওয়াত শেষ হতে না হতেই মঞ্চের ১০ থেকে ১৫ হাত পেছনের দেয়ালে বিকট শব্দে বোমা দুটি বিস্ফোরিত হয়। দর্শক সারিতে থাকা অনেকেই এ সময় আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে আরও দুটি হাতবোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। মঞ্চের পেছনে দেয়ালে এবং মেডিক্যালের দোতলা নতুন ভবনে আরেকটি বিস্ফোরণের দাগ তৈরি হয়েছে। পাশের তিন তলা ভবন থেকে হাতবোমাগুলো ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে বলে মেডিক্যালের কর্মচারীদের ধারণা। লালবাগ পুলিশের উপকমিশনার মফিজউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, আমরা পুরো এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছি। বিস্ফোরণ ঘটলেও পরে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান মফিজউদ্দিন আহমেদ। এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধ সংহিসতায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে যান মোহাম্মদ নাসিম। চিকিৎসার ব্যয় সরকার বহন করবেন বলে তিনি জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। এ সময়ে মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া নিজ কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় অবরুদ্ধ থেকে আরাম-আয়েশ করছেন। আর বাইরে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারছেন। এ ঘটনা তার জিঘাংসার প্রতিফলন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ডাকা অবরোধ প্রত্যাখ্যান করে মানুষ যার যার কাজে নেমে পড়ায় তিনি এখন গণমানুষের বিরুদ্ধে নেমেছেন। এই অপকর্ম চালিয়ে কোনদিন তারা দাবি আদায় করতে পারবে না। বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতি প্রতিরোধের জন্য জণগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর এই সদস্য বলেন, জঙ্গী লালনকারী সন্ত্রাসী বাহিনীর সঙ্গে কোন আলোচনা বা সংলাপের সুযোগ নেই। তারা ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি ব্যর্থ হয়েছিল, এবারও ব্যর্থ হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হবে। এ সময় অন্যদের মধ্যে ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, বিএমএ মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এম ইকবাল আর্সলান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডাঃ বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডাঃ দিলীপ কুমার রায়, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×