ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

৫১ পরিবার মানবেতর রাত কাটাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

৫১ পরিবার মানবেতর রাত কাটাচ্ছে

এইচএম এরশাদ, ঘুমধুম সীমান্ত থেকে ফিরে ॥ পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ির উত্তর ঘুমধুম বড়ুয়া পাড়া গ্রামের সংখ্যালঘু ৫১ পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য স্থানীয় এক প্রভাবশালী মেম্বারের আক্রোশের শিকার হয়ে মানবেতর রজনী কাটাচ্ছে। টাকার জোরে স্থানীয় মাস্তান বাহিনী দিয়ে কেড়ে নিয়েছে ৫১ পরিবারের ভিটা-বাড়ি ও সহায় সম্বল। তারা সর্বস্ব হারিয়ে বর্তমানে পথে বসেছে। উচ্ছেদ কাজ বাস্তবায়ন করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। প্রায় ৮০ বছর ধরে বসবাসকারী ভিটা থেকে বিনা নোটিসে উচ্ছেদ করে দেয়ায় তারা এখন বড় অসহায়ত্ব বোধ করছে। গরিব সংখ্যালঘু ওই পরিবারগুলো বিচার না পেয়ে ক্ষোভে উদ্বাস্তু হয়ে প্রাণ বাঁচাতে নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে মিয়ানমারে পাড়ি দিতে জমায়েত হয়েছে ঘুমধুম সীমান্ত অঞ্চলে। প্রচ- শীতে কাতর ছোট শিশু-কিশোর ও মহিলারা শুধু কাঁদছে। ঘুমধুমের বাসিন্দারা ওসব ব্যক্তিদের মুখে ৩ দিন ধরে অন্ন তুলে দিচ্ছে। বিজিবি কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে অসহায় এসব পরিবারের কাছে শীতের কম্বল বিতরণ করেছেন সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ খালেকুজ্জামান। জানা গেছে, ভিটে বাড়ি হারিয়ে ক্ষোভে রবিবার দুপুরে ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে পাড়ি জমাতে চাইলে বিজিবি সদস্যরা ৩০ পরিবারের শতাধিক সংখ্যালঘু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনকে গতিরোধ করে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেয়। ভিটে ছাড়া করা এসব পরিবারের সদস্যদের দুঃখ একটা- কেনইবা তাদের উচ্ছেদ করার আগে নোটিস দিয়ে জানানো হয়নি। এটি করা হলে তারা অন্তত এ শীতে কোথাও আশ্রয় খোঁজার ব্যবস্থা নিতে পারতেন। শনিবার হঠাৎ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে পুলিশ ও কিছু মাস্তান বাহিনীর লোকজন তাদের ঘর-বাড়িগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঘুমধুম ইউপি সদস্য সুব্রত বড়ুয়া ২০১০ সালে আদালত থেকে ২৫ একর জমি দীর্ঘমেয়াদী নিলাম খরিদ করেন। কিন্তু জমিতে দখলে যেতে না পারায় আদালতে উচ্ছেদ মামলা করেন তিনি। উক্ত মামলার প্রেক্ষিতে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। ও সময় শতাধিক বাড়ি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। তবে উচ্ছেদকল্পে ওইসব পরিবারের কাউকে পূর্ব নোটিস দেয়া হয়নি বলে জানিয়ে সচেতন মহল বর্তমানে প্রচ- শীতে এতগুলো পরিবারকে বিনা নোটিসে উচ্ছেদ করাটা অমানবিক বলে মত প্রকাশ করেছেন। অচিরেই তাদের পুনর্বাসন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
×