ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাগরিক সেবা তথ্য দিতে ‘ন্যাশনাল কল সেন্টার’ হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:০০, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

নাগরিক সেবা তথ্য দিতে ‘ন্যাশনাল কল সেন্টার’ হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ফাইবার অপটিক কেবলের মাধ্যমে ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারী সংস্থাকে অবিভক্ত নেটওয়ার্কে নিয়ে আসা হবে। প্রযুক্তি খাতে দক্ষ পেশাজীবী তৈরির জন্য ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এই প্রশিক্ষণের আওতায় এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজারের বেশি তথ্য প্রযুক্তিবিদ তৈরি করা হয়েছে। তারা বিশ্বমানের সনদ পেয়েছেন। এই সনদ বিশ্বের সব দেশেই সমান গুরুত্ব বহন করবে। ২০১৫ সালের মধ্যে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ ফাইবার অপটিক্যাল কেবলের আওতায় চলে আসবে। ২০১৭ সালের মধ্যে দেশের নিজস্ব স্যাটেলাইটের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে চীন সরকার দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহযোগিতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই টাকা দিয়ে গোটা দেশেই তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখার উন্নয়ন করা হবে। সোমবার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা গভ নেট ও ইনফো সরকার’ প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রায় সব উপজেলা বর্তমানে ফাইবার অপটিক কেবলে সংযুক্ত হয়েছে। ফলে দেশের ১৮ হাজার ১৩২টি সরকারী সংস্থ অচিরেই অবিভক্ত নেটওয়ার্কের আওতায় আসবে। এছাড়া কম্পিউটার কাউন্সিল থেকে সচিবালয় পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করে সংযোগ দেয়া হয়েছে। সচিবালয় উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবার আওতায় এসেছে। দেয়া হয়েছে ওয়াইফাই সুবিধাও। ৩৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে তথ্য প্রযুক্তি পেশাজীবী হিসেবে গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২০ হাজার জনকে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ, ১০ হাজার জনকে টপ আইটি প্রশিক্ষণ এবং সাড়ে চার হাজার জনকে ফার্স্ট ট্র্যাক ফিউচার লিডার হিসেবে গড়ে তোলা হবে। হাইটেক পার্কের অন্তর্ভুক্ত স্টিল এনহান্সমেন্ট কর্মসূচীর আওতায় দুই হাজার ৪শ’ ৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এক হাজার জনের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে, বাকিদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। এছাড়া লার্নিং আর্নিং প্রকল্পের আওতায় আরও ২৬ হাজার জনকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সারাদেশের সব মানুষকে একটি নাম্বারে নাগরিক সেবা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘ন্যাশনাল কল সেন্টার’ তৈরি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোরিয়া সরকারের সহায়তায় আইসিটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কোরিয়া সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সারাদেশের সব সরকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটকে একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্মের আওতায় নিয়ে এসে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাবলিক ওয়েব পোর্টাল ‘জাতীয় তথ্য বাতায়ন’ চালু করা হয়েছে। ঠিক একই ভাবে একটি নাম্বারের মাধ্যমে নাগরিক সেবার নতুন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এটি সম্পন্ন করতে পারলে নাগরিক সুবিধা পাওয়া আরও সহজ হবে। ১৯৮০ সালে চীন ৩০ বছরের একটি তথ্য প্রযুক্তি পরিকল্পনা তৈরি করে। সে অনুযায়ী তারা কাজ করে। একই ভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ২০০০ সালে ১৫ বছরের জন্য একই ধরনের মাস্টারপ্ল্যান করে। দুটি দেশই তাদের পরিকল্পনা তৈরি করে ও তা বাস্তবায়ন করে। আমরাও একই ভাবে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যেতে চাই। বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমজিআই’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল এ্যাপস এবং গেমসের বাজার হবে ৩.৫ থেকে ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বিশাল বাজারে সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে মোবাইল এ্যাপস ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রায় তিন হাজার ৫শ’ মোবাইল এ্যাপস ডেভেলপার তৈরি করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদফতরের জন্য ইতোমধ্যে ২৫টি মোবাইল এ্যাপস উদ্বোধন করা হয়েছে। আরও ৫৭৫টি মোবাইল এ্যাপস তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের মার্কেটে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মোবাইল গেমস সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। মোবাইল এ্যাপস কর্মসূচী বিকাশের স্বার্থে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। একটি যুগোপযোগী সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি একটি পূর্ণাঙ্গ সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি স্থাপন করা হবে। সারাদেশে ১০টি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হবে। আমাদের দেশে উৎপাদিত এবং বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সফটওয়্যারগুলোর মান নির্ধারণের জন্য সফটওয়্যার সার্টিফিকেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। নতুন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার জন্য ইনকিউবেশন স্থাপন করা হবে।
×