ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে জিতবে আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫

এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে জিতবে আওয়ামী লীগ

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ দেশের বেশিরভাগ জনগণ মনে করছেন যদি এই মুহূর্র্তে নির্বাচন হয় তা হলে আওয়ামী লীগই জিতবে। পাশাপাশি ৭২ শতাংশ মানুষ বর্তমান সরকারকে সফল বলে মনে করছেন। অন্যদিকে ব্যর্থ মনে করছেন ২৪ শতাংশ। এর মধ্যে ৪৭ শতাংশ মানুষ নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনের পক্ষে। আর ৪৯ শতাংশ বিপক্ষে। এখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার কথা বলেছেন ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ। বিএনপির কথা বলেছেন ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ। জাতীয় পার্টিকে ভোট দেয়ার কথা বলেছেন ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। জামায়াতে ইসলামীর কথা বলেছেন ১ শতাংশ। বিএনপি জোটের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ইসলামী দলগুলোর কথা বলেছেন দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কথা বলেছেন ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। এখনও সিদ্ধান্ত নেননি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। না ভোটের কথা বলেছেন ২ দশমিক ৫ শতাংশ। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে পছন্দ করেন ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ, খালেদাকে ২২ দশমিক ১ ভাগ। কারও পক্ষে নন এমন ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। এইচএম এরশাদের কথা বলেছেন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরবর্তী নেতা হিসেবে তারেক রহমানের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষে ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যান্য ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। সম্প্রতি ঢাকা ট্রিবিউনের পক্ষে সামাজিক ও বাজার গবেষণা সংস্থা আইআরসি লিমিটেড পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে। ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬০০ মানুষের ওপর টেলিফোনে এই জরিপ চালানো হয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি মানুষ। ৬ মাস আগে একই প্রতিষ্ঠানের চালানো জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ জনগণ চায় বর্তমান সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করুক। তখন জরিপে অংশ নেয়া ২৫ শতাংশ জানান, তাঁরা এক বছরের মধ্যেই নির্বাচন দেখতে চান। সরকারের ব্যর্থতা নেই ॥ অর্থাৎ মোট ৭১ দশমিক ৭ শতাংশই মনে করছে বর্তমান সরকার সফল। অন্যদিকে সরকারকে ব্যর্থ মনে করছে ২৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ। ৩ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। সাফল্যের তালিকায় শিক্ষা ॥ বড় সাফল্যের তালিকায় উঠে এসেছে শিক্ষা। পরের অবস্থানে রয়েছে অবকাঠামো। ২৪ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করে শিক্ষা খাতে সরকার সফল। ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন ফ্লাইওভার, ব্রিজ, সড়ক-মহাসড়কের মতো অবকাঠামোর উন্নয়নে সরকার সফল। ৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন বিদ্যুত সঙ্কটের ক্ষেত্রে ইতিবাচক উন্নতি হয়েছে এবং ৭ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে। ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, দারিদ্র্য কমেছে। কৃষিতে উন্নয়ন হয়েছে বলে মনে করেন ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। সরকারের সফলতার তালিকায় আইথা ডিজিটাল বাংলাদেশকে রেখেছেন ২ দশমিক ৮ শতাংশ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বা শাস্তির কথা বলেছেন ২ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা বলেছেন ১ দশমিক ৮ শতাংশ। স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির কথা বলেছেন ১ শতাংশ। অর্থনীতিতে সরকারকে সফল মনে করেন প্রায় ৭৪ শতাংশ মানুষ। এর মধ্যে অত্যন্ত সফল মনে করে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মনে করে এক্ষেত্রে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। আর সরকারকে সরাসরি ব্যর্থ মনে করেন ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সরকারকে খুব সফল মনে করেন ৮ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ। সফল মনে করেন ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ। ৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক্ষেত্রে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। আর সরকারকে ব্যর্থ মনে করেন ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। একেবারেই ব্যর্থ মনে করেন ২ দশমিক ৪ শতাংশ। জানেন না ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। আইনশৃঙ্খলা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সরকারকে সফল মনে করেন ৬২ শতাংশ মানুষ। ১০ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক্ষেত্রে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। আর সরকারকে ব্যর্থ মনে করেন ২৬ দশমিক ১ শতাংশ। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণে সরকারকে সফল মনে করে ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। ৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক্ষেত্রে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণে সরকারকে সফল মনে করে ৬৩ শতাংশ মানুষ। ৮ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক্ষেত্রে সরকার সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। আর ব্যর্থ মনে করেন ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ। শিক্ষায়ই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ॥ এই মুহূর্তে শিক্ষাকে দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু মনে করেন অধিকাংশ মানুষ। ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ বলেছেন এই মুহূর্তে দেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে শিক্ষা। ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছেন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্র্ণ। আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নের কথা বলেছেন ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ব্যক্তিগত পর্যায়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলেছেন ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা বলেছেন ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বিদ্যুত উৎপাদনের কথা বলেছেন ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। কর্মসংস্থান ৫ দশমিক ২ শতাংশ, কৃষি উন্নয়ন ২ দশমিক ২ শতাংশ এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পক্ষে আছেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকেই পছন্দ ॥ বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি কাকে দেখতে চান? এমন প্রশ্নের উত্তরে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনার কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার কথা বলেছেন ২২ দশমিক ১ ভাগ। এইচএম এরশাদের কথা বলেছেন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আওয়ামী লীগের পক্ষেই বেশি ভোট পড়বে ॥ আজ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার কথা বলেছেন ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ। বিএনপির কথা বলেছেন ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ। জাতীয় পার্টিকে ভোট দেয়ার কথা বলেছেন ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। জামায়াতে ইসলামীর কথা বলেছেন ১ শতাংশ। বিএনপি জোটের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন ইসলামী দলগুলোর কথা বলেছেন দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর কথা বলেছেন ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। এখনও সিদ্ধান্ত নেননি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। না ভোটের কথা বলেছেন ২ দশমিক ৫ শতাংশ। নির্বাচনে কোন দল জিতবে ॥ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট বিজয়ী হবে বলে মনে করেন ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ মনে করেন নির্বাচনে বিজয়ী হবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। অন্যান্য দলের জোট বিজয়ী হবে বলে মনে করেন ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। ৭ শতাংশ বলেছেন তাদের জানা নেই। উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ১ দশমিক ৬ শতাংশ। বিএনপি ও জোটের পারফর্মেন্স ॥ সরকারের বৈধতার প্রশ্নে বিএনপি ও তার জোট সঙ্গীদের সফল মনে করেন ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ মনে করে তারা ব্যর্থ। ব্যর্থ বা সফল কিছুই মনে করে না ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। সাধারণ মানুষের সমস্যা তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিএনপি ও তার মিত্রদের সফল মনে করেন ৩৪ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ মনে করে এক্ষেত্রে বিএনপি ও তার মিত্ররা ব্যর্থ। ২ শতাংশ মনে করে এক্ষেত্রে তারা সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। জনগণের জন্য অধিকতর ভাল ভবিষ্যত রূপরেখা তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিএনপি ও তার মিত্রদের সফল মনে করেন ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ। ৫৮ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মনে করে এক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ। ১১ দশমিক ৮ শতাংশ মনে করে তারা সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয় আবার বর্তমান সরকারের অধিকতর ভাল বিকল্প হিসেবে নিজেদের উপস্থাপনে বিএনপি ও এর মিত্রদের সফল মনে করেন ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ। ব্যর্থ মনে করে ৬৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ মনে করে এক্ষেত্রে তারা সফলও নয় আবার ব্যর্থও নয়। সামগ্রিকভাবে বিএনপি ও মিত্রদের পারফর্মেন্সকে সফল মনে করে ৩২ শতাংশ মানুষ। ব্যর্থ কিংবা অত্যন্ত ব্যর্থ মনে করে ৬২ দশমিক ২ শতাংশ। সফল বা ব্যর্থ কিছুই মনে করে না ২ দশমিক ৭ শতাংশ। বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ॥ গত এক বছরে সংসদে বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির সামগ্রিক পারফর্মেন্সে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছে জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ। অসন্তুষ্ট ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ। মাঝামাঝি অবস্থানে আছে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ।
×