অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে আবারও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। কোম্পানিটির ২০১৪ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন যথাযথভাবে প্রস্তুত না করায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির উপ-পরিচালক মোল্লা মোঃ মিরাজ-উস-সুন্নাহ, সহকারী পরিচালক মোঃ শাহনেওয়াজ ও গৌর চাঁদ সরকার। গঠিত কমিটি প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২০১৪ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ইন্টারন্যাশনাল এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (আইএএস) ও বাংলাদেশে এ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করবে। আদেশে উল্লেখ রয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯-এর ২১ ধারা, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩-এর ১৭(ক) ধারা অনুযায়ী, গঠিত কমিটি এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আর গঠিত কমিটি এ আদেশ জারির ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবে।
এর আগেও একই কোম্পানিটির ঋণ সমন্বয়ের অভিযোগের বিষয়ে কমিটি গঠন করেছিল বিএসইসি। দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে কমিশনের নির্দেশনাও বলা হয়, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে নেয়া প্যারামাউন্ট স্পিনিং লিমিটেডের ঋণ গ্রহণ করেছে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল লিমিটেড। যা সন্দেহজনক বলে মনে করছে কমিশন। সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারা, সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক ও সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন রুলস, ১৯৮৭ এর বিধি ১২(২) ও ১২(৩) মোতাবেক এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ২০ কোটি ৯২ লাখ টাকার ঋণ প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের নামে ছিল কি না এবং ওই ঋণ প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের অনুকূলে সমন্বয় করা হয়েছিল কি না তা জানতে চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় বিএসইসি। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ জুলাই বিএসইসি প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলকে অভিহিত মূল্য ১০ টাকা এবং ইস্যু মূল্য ২৮ টাকায় (১৮ টাকা প্রিমিয়াম) প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে তিন কোটি সাধারণ শেয়ার বাজারে ছেড়ে মোট ৮৪ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহের অনুমতি দেয়। সেই মোতাবেক কোম্পানিটি মূলধন সংগ্রহ করে এবং কমিশনের কাছে আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত মূলধনের ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল কর্তৃক ২০১৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর দাখিলকৃত প্রতিবেদন থেকে দেখা যাচ্ছে, প্যারামাউন্ট স্পিনিং লিমিটেডের অনুকূলে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের ২০ কোটি ৯২ লাখ টাকার ঋণ সমন্বয় করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ১৯ ডিসেম্বর কোম্পানি কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনে, ওই ২০ কোটি ৯২ লাখ টাকা প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের অনুকূলে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। আর আগের দাখিলকৃত বিবরণী ভুল ছিল মর্মে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক থেকে একটি শুদ্ধিপত্রসহ সংশোধিত ব্যাংক বিবরণী দাখিল করা হয়।