ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্লজ্জ মিথ্যাচার

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

নির্লজ্জ মিথ্যাচার

রাজনীতিতে মিথ্যাচার কারোরই কাম্য হতে পারে না। তারপরও মিথ্যাচারের এই বিষয়টি যদি কোন রাজনৈতিক দল চালিয়ে থাকে তবে তা দুঃখজনক। এই সংস্কৃতি শুধু রাজনৈতিক দলেই নয়, দেশবাসীর মধ্যেও অশুভ চিন্তাচেতনার জন্ম দেয় এবং তা সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। বর্তমানে বিএনপি আন্দোলন সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যাচারের গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নেমেছে এই অভিযোগ অনেকেরই। দেশের মানুষ বিএনপির এসব অরাজক পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্র প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপির মিথ্যাচারের বিষয়টিতে মানুষের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার জনকণ্ঠে প্রকাশিত ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ শিরোনামে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন নির্লজ্জ মিথ্যাচারের কূটনীতি শুরু করেছে। বিএনপির চেয়ারপার্সনের প্রেস সেক্রেটারির বরাত দিয়ে বলা হয়, ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সভাপতি অমিত শাহ ফোন করে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যান বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। অধিকতর তদন্তে দেখা যায় বিএনপির উল্লিখিত ঘটনা দুটিই ভিত্তিহীন, অসত্য। সংবাদ মাধ্যমে এটি প্রকাশিত হলে খোদ বিএনপির মধ্যেই মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সমসাময়িক রাজনীতিতে এই দুটি ঘটনা সুস্থ রাজনীতির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। জানা যায়, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে খালেদার টেলিফোনে কথা বলার বিষয়টি একেবারেই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বিজেপির সভাপতি ফোনই করেননি বরং খালেদা জিয়ার অফিস থেকে নয়াদিল্লির বিজেপি অফিসে দু’দফা ফোন করা হলেও কেউ তা রিসিভ করেনি। অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ ও তারেক রহমানের ধারাবাহিক অনৈতিক, বিকৃত তথ্য সংবলিত বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নিন্দা জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মিথ্যা বিবৃতি প্রকাশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কংগ্রেসের দুই সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এড রয়েস ও কমিটির সদস্য এলিয়ট এ্যাঙ্গেল এ ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, কোনপক্ষের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নামে ভুয়া বিবৃতি ব্যবহার কোন মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক দুটি অনলাইন সংবাদ পোর্টালে তাঁরা তাঁদের এ বিবৃতি প্রকাশ করেন। ঘটনা দুটি রাজনীতিতে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জাল করে মিথ্যা বিবৃতি প্রকাশ করায় সে দেশের শীর্ষমহলেও তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এসব ঘটনার ফলে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের মানুষ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সুস্থ ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা আশা করে। উল্লেখিত মিথ্যাচার দেশের মানুষের কাছে কোনভাবেই কাম্য হবে না-এটা বলাই বাহুল্য।
×