ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির সামর্থ্য কাজে লাগাবে সরকার

শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে অস্ত্র বিক্রির পথে জাপান

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে অস্ত্র বিক্রির পথে জাপান

বহু যুগের শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট করল জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ৭০ বছর পার হলেও এখনও দেশটিতে যে কোন ধরনের সামরিক উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তা সত্ত্বেও জাপান এখন সামরিক সরঞ্জামাদি রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট অনলাইনের। জাপানের টামাগাওয়া ট্রেডিং কোম্পানি বহু বছর ধরে জিরোস্কোপের মতো ক্ষুদ্র প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করে আসছে। টর্পেডো ও মিসাইল দিক নির্দেশনার কাজে ব্যবহৃত হয় যন্ত্রটি। কোম্পানিটির বাজার জাপানে সীমাবদ্ধ ছিল। মিৎসুবিশি ও ফুজির গুটি কয়েক কোম্পানি ছিল এর কাস্টমার। কোম্পানিটির প্রধান আকিফুমি আরাই এখন বলছেন যে, তাঁরা তাঁদের ব্যবসা দেশের বাইরেও সম্প্রসারিত হচ্ছে। শিনজো আবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বহু বছরের পুরানো শান্তিবাদী নীতি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শান্তিবাদী নীতি থেকে সরলেও শান্তিকামী দেশ হিসেবে অবস্থান ধরে রাখতে চায় জাপান। আবে সরকার চায় ইতিহাসের পুরানো অধ্যায় পেছনে ফেলে দেশ স্বাভাবিক পথে চলুক। তার কথা হলো জাপানের প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি তৈরির সামর্থ আছে, তাই সেটি তাঁরা করবে না কেন। যুদ্ধকালীন কর্মকা-ের জন্য পরবর্তী সময়ে যেসব নিয়ম নীতি চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল তা দশকের পর দশক নির্দ্বিধায় সেটি অনুসরণ করে আসায় তাঁকে পুরোপুরি উপেক্ষা করা জাপানের জন্য কঠিন। আরাই বলছেন যে, ‘একদেশের সঙ্গে অন্য দেশের লড়াই করার জন্য প্রয়োজন অস্ত্রের। কিন্তু আমাদের জন্য যুদ্ধ না করাটাই শ্রেয়।’ আরাইয়ের এ বক্তব্য পশ্চিমা প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিভঙ্গির অনুরূপ নয়। জেট প্লেনগুলোর জ্বালানি নির্দেশক যন্ত্র তৈরি করার মধ্য দিয়ে টামাগাওয়া যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দখলদার মার্কিন বাহিনী জাপানের জন্য জঙ্গী বিমান নির্মাণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে দেয়ার পর ওই কোম্পানির ব্যবসা মার খায়। সাত দশক পর এখনও জাপানের প্রতিরক্ষা শিল্প কর্মকর্তারা এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করতে আগ্রহী নন। আবের একক প্রচেষ্টায় পুরানো ইতিহাস পেছনে রেখে দেশটি এখন সামনে এগোতে চায়। যুদ্ধকালীন স্মৃতি থেকে জাপানকে বের করে আনতে চান আবে। এর জন্য প্রতিবেশী চীন ও কোরিয়ার সঙ্গে দেশটির প্রায় দ্বন্দ্ব তৈরি হয়ে থাকে। অস্ত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া বা ইরানের মতো যে সব দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেখানে অস্ত্র বিক্রি করা হবে না। যুদ্ধে লিপ্ত দেশগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করা হবে না। জাপান সরকার ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রের উপযোগী জিরোস্কোপ বিক্রি অনুমোদন করেছে। এছাড়া জাপান ব্রিটেনের সঙ্গে জঙ্গী বিমানের জন্য আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন গবেষণা শুরু করেছে। অস্ট্রেলিয়ার জন্য সরিউ শ্রেণীর সাবমেরিন তৈরি নিয়ে ২ হাজার কোটি ডলারের একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। এই সাবমেরিনগুলো মার্কিন সামরিক ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্র্ণ।
×