ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই কিলোওয়াটের ওপরে প্রতি কিলোওয়াটে লাগবে ২ হাজার টাকা

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

দুই কিলোওয়াটের ওপরে প্রতি কিলোওয়াটে লাগবে ২ হাজার টাকা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংযোগের জন্য নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে যাচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ। দুই কিলোওয়াটের ওপর নতুন বিদ্যুত সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোওয়াটে দুই হাজার টাকা জমা দিতে হবে গ্রাহককে। তহবিল গঠনে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) অনুমোদনের পর রবিবার বিদ্যুত বিভাগের অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর আগামী মাস থেকে কার্যকর হতে পারে নতুন এই সিদ্ধান্ত। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) আইনের ১৯ এর ২ এর (জ) অনুযায়ী এ ধরনের একটি তহবিল গঠনের সুপারিশ করা হয়। এই অর্থে সরকার দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করবে। বিদ্যুত বিভাগের গৃহীত সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে নথি প্রেরণ করা হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সুপারিশের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিইআরসির অনুমোদন নিতে বলা হয়। বিদ্যুত বিভাগ এ সংক্রান্ত সুপারিশে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিইআরসির অনুমোদন চায়। অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিইআরসির সম্মতির পর রবিবার বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সুপারিশটি চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে বিইআরসি সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, স্রেডা চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায়, বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি এবং অর্থ বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্র জানায়, সংযোগ গ্রহণের সময় এই অর্থ গ্রাহককে জমা দিতে হবে। গ্রাহক অর্থ জমা দেবে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানিতে পরে তা স্রেডার তহবিলে জমা হবে। কিন্তু বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রতিটি কোম্পানির আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনা করা হয়। বৈঠকে এজন্য বিইআরসির অনুমোদন চাইলে সদস্য সেলিম মাহমুদ সম্মতির কথা জানান। একই সঙ্গে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ পর্যায়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তহবিল গঠন করা সম্ভব বলেও জানান বিইআরসির এই প্রতিনিধি। প্রসঙ্গত ইতোপূর্বেও গ্যাস এবং বিদ্যুত উন্নয়ন তহবিল গঠন করে বিইআরসি। দক্ষিণ এশিয়াতে যা মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সূত্র জানায়, শীঘ্র প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য নথি প্রেরণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই নতুন এই নিয়ম কার্যকর করা হবে। স্রেডা সূত্র বলছে আগামী মাস থেকেই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে। নতুন বিদ্যুত সংযোগের ক্ষেত্রে লোডের পরিমাণ দুই কিলোওয়াটের বেশি হলে আবাসিকে সর্বনিম্ন তিন শতাংশ, বাণিজ্যিকে সাত ও শিল্প-কারখানায় ১০ শতাংশ সৌরবিদ্যুত ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা জারি করে ২০১১ সালে আদেশ জারি করা হয়। গত বছর মে মাসে বিদ্যুত মন্ত্রণালয় নতুন বিদ্যুত সংযোগের ক্ষেত্রে সোলার স্থাপনের বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়। সংযোগের ক্ষেত্রে লোড বেশি হলে কিছু নগদ অর্থ জমা দেয়ার বিধান রাখার কথা ওই সময় আলোচনা হয়। প্রসঙ্গত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুত সঙ্কটের কারণে শিল্প আবাসিক সব খাতে দীর্ঘ সময় বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ রাখে। এর প্রায় দেড় বছর পর ২০১১ তে সংযোগ চালু করলেও সংযোগ প্রত্যাশীদের সৌর প্যানেল স্থাপনের শর্ত যোগ করে দেয়।
×