ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রেন চলাচল ঠিক রাখতে সব রকম ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

ট্রেন চলাচল ঠিক রাখতে সব রকম ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির ডাকা টানা অবরোধ সত্ত্বেও কোন অবস্থাতেই ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের রেল চলাচল বন্ধ হবে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া যত প্রকার উস্কানিই দেন না কেন সব উস্কানি ও নির্দেশ প্রতিরোধ করে রেললাইনকে নিরাপদ রাখার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচী চলাকালীন রেললাইন, ট্রেন ও রেল স্থাপনাতে সব প্রকার নাশকতামূলক কর্মকা- প্রতিরোধে অতি দ্রুত ৮ হাজারের বেশি আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। এক মুহূর্তের জন্যও রেল চলাচল বন্ধ হবে না। পাশাপাশি রেলের ৪ হাজার নিয়মিত নিরাপত্তা সদস্য কাজ করবে। রবিবার রাজধানীর রেলভবনে সারাদেশে রেলের নিরাপত্তা রক্ষায় রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক এসব কথা বলেন। রেলভবনে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচী চলার সময়ে রেললাইন, ট্রেন ও রেল স্থাপনাতে নাশকতামূলক কর্মকা- প্রতিরোধ ও রেল যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে রেল কর্তৃপক্ষের কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমল কৃষ্ণ ভট্টাচার্যকে প্রধান করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট রেল নিরাপত্তা ও মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে পুলিশ, আনসার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। উক্ত কমিটি সারাদেশের রেল নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বক্ষণিক মনিটর করবে। সারাদেশের ২ হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথে আমাদের ৩৩৪টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে নিয়মিত চলাচল করছে। ভবিষ্যতে যত রকমের ক্রাইসিস বা বাধাই আসুক না কেন, ধ্বংসাত্মক ও নাশকতামূলক সব কর্মকা- প্রতিরোধ করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে। তাছাড়া আমরা গতবারের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করে ৮ হাজারের উর্ধে আনসার নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উল্লেখ্য, বিএনপির ডাকা অবরোধের শুরু থেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে, রেললাইনে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাশকতার ঘটনাও ঘটেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ‘উস্কানিতে’ রেলের সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত ও হত্যাকা-ের মতো ঘটনা ঘটে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সে সময় দুই হাজার ৮৭৭ কিলোমিটার রেলপথের নিরাপত্তায় প্রায় ৮ হাজার আনসার নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। মন্ত্রী দেশের সব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের জাতীয় সম্পদ রেললাইন রক্ষার্থে একযোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। রেললাইনে যেসব স্থানে নাশকতা হচ্ছে সেখানে মামলার পাশাপাশি এর জন্য দায়ীরা গ্রেফতারও করা হচ্ছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। গত বছরের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে রেললাইনে নাশকতার ঘটনায় যে ৪৪টি মামলা করা হয়েছিল তাদেরও গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে অনেক আসামি গ্রেফতার হয়েছে, আবার অনেকে পলাতকও রয়েছে। তাছাড়া রেললাইন নিরাপত্তায় ও নাশকতা ঠেকাতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে পেট্রোল কার রেকি করছে। প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হচ্ছে এবং এটি আরও জোরদার করা হবে। ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। গত কয়েকদিনের অবরোধে রেললাইনে নাশকতা চালিয়ে ফিশপ্লেট খুলে ফেলায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বারবার রেল চলাচলের সময়সূচীতে এর প্রভাব পড়েছে এ বিষয়ে পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় সম্পদ রক্ষায় দেখে শুনে ট্রেন চলাচল করতে হচ্ছে, এজন্য সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই নিরাপদে যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। তাই কিছুটা বিলম্ব হলেও নিরাপদে ট্রেন পৌঁছাতে পারছে। সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত রেলপথ সচিব মোঃ মনসুর আলী সিকদার, রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আমজাদ হোসেন, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ নাজিম উদ্দীন, অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি ও রেলওয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×