ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স পর্যবেক্ষণসহ আপীলের নিষ্পত্তি

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৫

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স পর্যবেক্ষণসহ আপীলের নিষ্পত্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপুর্ণ পদসমূহের পদমর্যাদা নির্ণয়ে ১৯৮৬ সালে জারি করা পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপীল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ। সংক্ষিপ্ত রায়ে আপীল বিভাগ বলেন, ‘আপীল ডিসপোজড অফ উইথ এক্সপাংশন, মোডিফিকেশন, অবজারভেশন এ্যান্ড ফাইন্ডিংস।’ রবিবার প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপীল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংক্রান্ত আপীল নিষ্পত্তি করে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন সুপ্রীমকোর্ট। কিন্তু আইনজীবীর বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওই রায়ের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর আপীলটি অধিকতর শুনানির জন্য আবার সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের বৃহস্পতিবারের কার্যতালিকায় আসে। পরে আদালত রবিবার শুনানি শেষে রায় দেন। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও এ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান। রাষ্ট্র্রপক্ষে ছিলেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং এ্যাডভোকেট আব্দুর রব চৌধুরী। রায়ের পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, আপীল বিভাগ পর্যবেক্ষণসহ বেশ কিছু বিষয় সংযোজন ও বিয়োজন করে আপীল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। ফিরে দেখা ॥ বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে তৎকালীন মহাসচিব ও জেলা জজ মোঃ আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে ১৯৮৬ সালের পদমর্যাদাক্রমের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র্রের শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ নিয়ে তিনটি অঙ্গ রয়েছে। শাসন বিভাগ পদমর্যাদাক্রমে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রি- পরিষদসহ সংশ্লিষ্টরা থাকবেন। এছাড়া আইন বিভাগে থাকবেন সংসদের স্পিকার ও সংসদ সদস্যগণ। অন্য দিকে বিচার বিভাগকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ এক ভাগে থাকবেন উচ্চ আদালতের বিচারপতিগণ এবং অপরভাগে অধঃস্তন আদালতের বিচারপতিরা। কিন্তু ১৯৮৬ সালে প্রণীত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে সংবিধানের বর্ণিত এই বিধিমালা অনুসরণ করা হয়নি। এতে সংবিধানের মূল চেতনা লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই ১৯৮৬ সালে প্রনীত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বাতিলের জন্য রিটে বলা হয়। ওই রিটে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২০০৬ সালের ১০ ডিসেম্বর সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করে রায় দেন। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি আপীল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরদিন আপীল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। দীর্ঘদিন পর শুনানি নিয়ে ৬ জানুয়ারি আপীল বিভাগ পর্যবেক্ষণসহ কিছু বিষয় সংযোজন ও বিয়োজন করে রায় ঘোষণা করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষে গত বৃহস্পতিবার ফের অধিকতর শুনানির জন্য আবেদন করা হলে রবিবার ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হলে রায় দেন আদালত।
×