ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনীতির নানা সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

অর্থনীতির নানা সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অর্থনীতি সমিতির সমাপনী দিনের সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, ব্যাংক, বীমাসহ অর্থনীতির নানা সূচকে বাংলাদেশ ক্রমাগত এগিয়ে চলছে। এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ব্যাংক কেলেঙ্কারি অন্যতম। এতকিছুর পরও আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে। মূল্যস্ফীতি কমে এসেছে, যা বর্তমানে সিঙ্গেল ডিজিটে অবস্থান করছে। এর সবই বর্তমান সরকারের সফলতা। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা ফিরে আসছে। নারী উন্নয়নে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ঊনবিংশতম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ২০১৫-এর সমাপনী দিনের বিশেষ প্ল্যানারি অধিবেশন : ‘রাজনৈতিক অর্থনীতি ও উন্নয়ন পুনর্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থনীতিবিদরা তাঁদের নিবন্ধ পাঠকালে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রফেসর হান্নান বেগম তাঁর ‘জেন্ডার সমতা : মহাজোট সরকারের অর্জন ও আগামীর কথা’ নিবন্ধে বলেছেন, আমরা ব্যাংক বীমাসহ নানা ক্ষেত্রে এগিয়েছি। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর লিঙ্গ বৈষম্যে অনেকটাই সমতা এসেছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে জেন্ডার সমতা এমনভাবে বাংলাদেশে আর দেখা যায়নি। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদসহ কর্মক্ষেত্রে নারীরা এখন সমান গুরুত্বপূর্ণ। হান্নান বেগম তাঁর নিবন্ধে বলেন, জেন্ডার সমতাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বর্তমান সরকার প্রথমেই জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট প্রদান এবং জেন্ডার সংবেদনশীল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। যা নারী অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রাথমিক সোপান। এ বাজেট ও কর্মসূচীর আওতায় অছে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুস্থ ভাতা, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের জন্য ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ আরও সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম। তিনি দাবি করেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে নারীদের অবদান বৃদ্ধি করতে প্রতিটি উপজেলার অন্তত ২টি ইউনিয়নে কন্যা শিশুদের জন্য ১টি করে মাঠ নির্বাচন করে খেলাধুলার সুবিধা প্রদান করা উচিত। বিকেএসপিতে কন্যাশিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত আসন এবং কোচ নিয়োগ করা প্রয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীর জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে। সরকারী সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হাসিনা বানু তাঁর ‘কৃষি উৎপাদনে নারী’ নিবন্ধে বলেন, ’৯৬-এর পর কৃষিক্ষেত্রে নারীর অবদানের প্রতিফলন সমাজে পড়তে শুরু করে। ২০০৫-০৬ শ্রম জরিপ অনুসারে মোট শ্রমশক্তির ৪১.৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৬৮.১ শতাংশ নারী সরাসরি কৃষির সঙ্গে যুক্ত। গত এক দশকে কৃষিখাতে পুরুষ শ্রমিকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ১০.৪ শতাংশ, যা নারীদের দ্বারা বর্তমানে সম্পাদিত হচ্ছে। নিবন্ধে আরও বলা হয়, এক সমীক্ষায় জানা গেছে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষী পরিবারের নারীরা নিজ উদ্যোগে বসতবাড়ির আঙিনায় বাগানে ফলানো সবজি চাহিদার ৯০-১০০ ভাগ মোটানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়ে অবদান রাখছে ১৫ থেকে ৩০ ভাগ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মোরশেদ হোসেন তাঁর ‘উন্নয়ন বৈষম্য ও বাজেটে রংপুর বিভাগে নারীর জন্য অধিক বরাদ্দ’ নিবন্ধে বলেন, বাজেট হলো জনগণের কল্যাণ চিন্তার একটি উপস্থাপনা। বাজেট হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। নারী-পুরুষ, গ্রাম-শহর, দরিদ্র-ধনী, সব জাতি-ধর্মমত, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সকলের প্রয়োজনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন অনুযায়ী অর্থনীতির অগ্রাধিকারভিত্তিক খাতগুলোকে নির্বাচন করবে এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ঊননিংশতম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের সমাপনী দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ভিন্ন ভিন্ন হলে এসব নিবন্ধ পঠিত হয়। যার প্রত্যেকটি নিবন্ধই কোন না কোন প্রয়াত অর্থনীতিবিদকে উৎসর্গ করা হয়। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার শান্তিপূর্ণভাবে অর্থনীতি সমিতির ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
×