ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নরেন্দ্র মোদি মার্চে ঢাকায় আসতে পারেন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

নরেন্দ্র মোদি মার্চে ঢাকায় আসতে পারেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মার্চ মাসে ঢাকা সফরে আসতে পারেন। আর তাঁর ঢাকা সফরের আগেই দুই দেশের মধ্যে স্থল সীমানা চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ নেবে। এদিকে মোদির ঢাকা সফরের আগেই ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ভারতীয় সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে বাংলাদেশের সঙ্গে স্থল সীমানা চুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরের বিষয়ে আগ্রহী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নিমন্ত্রণও যথা সময়ে পাঠানো হয়েছে। ক্ষমতায় বসার পর থেকেই সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ হিসেবে প্রতিবেশী সকল দেশ সফর শুরু করেন নরেন্দ্র মোদি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের সফরের পথ খানিকটা আটকে আছে বাংলাদেশকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বিশেষ করে তিস্তা চুক্তি ও স্থল সীমানা চুক্তির বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই। তবে সম্প্রতি স্থল সীমানা চুক্তি বাস্তবায়নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মতি সে বাধা কিছুটা দূর করেছে। ধারণা করা হচ্ছে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনে সংবিধান সংশোধন হলেই খানিকটা নির্বিঘœ হবে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর। এদিকে ফেব্রুয়ারিতেই ঢাকা সফরে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শুভেচ্ছা সফরে ঢাকা আসলেও মমতার ওই সফরকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবেই নিচ্ছে কূটনীতিকরা। ওই সফরে তিস্তা ও ছিটমহল বিনিময় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মমতার তৈরি হওয়া দূরত্ব কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্রগুলো বলছে, তিস্তার বিষয়ে আগের সংকল্পে অটুট থাকলেও ছিটমহল বিনিময়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন মমতা। তবে কোন কোন ছিটমহল ছাড়বে ভারত তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা ও কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ভাগাভাগিটাও বেশ জটিল বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে ভারতের কংগ্রেস সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদ ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভারতীয় সংবিধান সংশোধনীর জন্য একটি বিল রাজ্যসভায় পেশ করেন। কিন্তু বিরোধী পক্ষ হট্টগোল সৃষ্টি করলে বাধ্য হয়ে রাজ্যসভা অধিবেশন মুলতবি করে। সে পর্যন্তই থেমে যায় বিষয়টি। নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে কূটনৈতিক দেনদরবার শুরু হয়। খবর আসতে থাকে, মোদি সম্মতি জানালেও রাজি ছিলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তবে কৌশলে হলেও মমতার কাছ থেকে সম্মতি আদায় করেছে মোদি সরকার। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তা চুক্তি সইয়ের কথা ছিল। কিন্তু সফরের ঠিক আগের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় ঝুলে যায় তিস্তা চুক্তিটি। যাতে আজও সম্মতি দেননি মমতা। তারপর থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগ চললেও বিষয়টি আর এগোয়নি। তবে এবার আশা করা হচ্ছে মমতার স্থল সীমানা চুক্তির বিয়টির মতো তিস্তাতেও সম্মত হবেন মমতা। এছাড়া ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবরুম এলাকায় খাবারের পানির জন্য ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলনের একটি চুক্তি তিস্তার সঙ্গে সম্পর্কিত রয়েছে। ত্রিপুরা এ চুক্তিটিরও দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। এ বিষয়ে ত্রিপুরার রাজ্য সরকারের সঙ্গে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনা চলছে বলেই গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
×