ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওরা নাশকতা চালাচ্ছে রাজপথে থাকুন ॥ নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৫

ওরা নাশকতা চালাচ্ছে রাজপথে থাকুন ॥ নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ চলমান অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের সম্ভাব্য নাশকতার আশঙ্কায় দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকা-ে সাধারণ মানুষের জানমাল; বিশেষ করে বিশ্ব এজতেমার মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে আসা-যাওয়া নিয়ে দলটি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। এই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থেকেই যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে নেতাকর্মীদের রাজপথে সতর্ক প্রহরায় থাকার এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকার উপকণ্ঠের চারটি জেলা গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার নেতৃবৃন্দ, সকল সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় এমন নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে। আগামীকাল সোমবার বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাকে সফল করতেই এই যৌথসভার আয়োজন করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করে সরকারের প্রথম বর্ষপূতি দিবসে রাজধানীতে বড় ধরনের সাংগঠনিক শক্তির মহড়া দেবে আওয়ামী লীগ। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের সিনিয়র নেতারা জানান, তাঁদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে বিশ্ব এজতেমা শেষে ফেরার পথে মুসল্লি সেজে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা রাজধানীসহ আশপাশের জেলায় নাশকতা চালাতে পারে। জামায়াত-শিবিরের জঙ্গী ক্যাডাররা নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। এদেরই একটি অংশ বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের কার্যালয় এবং দলটির নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনেও সমবেত হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ কারণে রাজধানীর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই সম্ভাব্য সব ধরনের নাশকতা প্রতিরোধে এয়ারপোর্ট, গুলশান, গুলিস্তান, টঙ্গীসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। প্রায় দু’ঘণ্টার যৌথসভা শেষে দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত সাংবাদিকদের কিছুই বলা হয়নি। অনেকদিন পর বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও কোন কথা বলেননি দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তবে ধানম-ির কার্যালয় ত্যাগ করার আগে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকা-ে সাধারণ মানুষের জানমাল; বিশেষ করে বিশ্ব এজতেমার মুসল্লিদের সুষ্ঠুভাবে আসা-যাওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করছেন এজতেমা ময়দানের পাশ থেকে কিছু জিহাদী প্রচারপত্র ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র করছে তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। তারা এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জাল করে ও ভারতের জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রধানের নাম ব্যবহার করে মিথ্যাচার শুরু করেছে। এই নতুন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও শুরু করেছে। যৌথসভা প্রসঙ্গে নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার বিরুদ্ধে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বলেছি। বিএনপি-জামায়াত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা ষড়যন্ত্র মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত আছি। যৌথসভায় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছাড়াও ডাঃ দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, মোল্লা মোঃ আবু কাউছার, পংকজ দেবনাথ, এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ ছাড়াও গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি পালানোর পথ পাবে না- নানক ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দেশে গণতন্ত্র উদ্ধারের নামে মানুষ হত্যার মহড়া চালাচ্ছেন। তবে তাদের এই হত্যা, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলার পথ দ্রুত বন্ধ করা না হলে সারাদেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। আর তখন তারা পালানোর খুঁজে পাবে না। শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আগামীকাল ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ এ প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে। ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহসম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম প্রমুখ।
×