ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তিন দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা

রাজশাহী কলেজের আদিবাসী ছাত্রনেতা বাবলুকে জবাই করে হত্যা

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১০ জানুয়ারি ২০১৫

রাজশাহী কলেজের আদিবাসী ছাত্রনেতা বাবলুকে জবাই করে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার ময়েনপুর গ্রামে বাবলু হেম্রন (২৭) নামের এক আদিবাসী ছাত্র নেতাকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নিজ বাড়ির শয়ন কক্ষে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তাকে জবাইয়ের পর মাথা আলাদা করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। বাবলু হেম্রনের বাবার নাম মহেশ্বর হেম্রন। সে রাজশাহী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। এ বছর স্নাতকোত্তর ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে। পরীক্ষার ফল এখনও প্রকাশ হয়নি। বাবলু রাজশাহী কলেজ আদিবাসী ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ও সান্তাল স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (সাসু) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে বাবলু হত্যাকা-ের প্রতিবাদে ও খুনীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শান্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে ময়েনপুর গ্রামে বিক্ষোভ করে তিন দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ। তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বাবলু হেম্রন দুই মাস আগে স্নাতকোত্তর ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতেই ছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তার বাবা-মা গোঙ্গানির শব্দ শুনে তার ঘরে গিয়ে মাথা বিছিন্ন মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে তাকে জবাই করা হয়েছে বলে জানান ওসি। তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ও রাজশাহী সিআইডি বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রাজশাহী জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেন, সদর সার্কেল আব্দুর রশিদ ও তানোর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওসি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ক্লু পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। নিহতের পরিবারের সদস্য ছাড়াও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বাবলুর পিতা মহেশ্বর হেম্রন বলেন, বাবলু ভাল ফুটবল খেলোয়াড় ছিল। গ্রামে তাদের পরিবার বা তার ছেলের সঙ্গে কারও কোন বিরোধ ছিল না। রাজশাহী কলেজে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। রাজনৈতিক কারণে তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে বাবলুর পিতা মহেশ্বরের ধারণা। নিহতের মা শান্তি টুডু বলেন, গ্রামে তাদেও কোন শত্রু ছিল না। বাবলু রাজশাহী কলেজের আদিবাসী ছাত্র ফ্রন্টের সঙ্গে জড়িত। লেখাপড়ার সুবাদে সে রাজশাহী শহরে থাকত। বড়দিনের (২৫ ডিসেম্বর) আগে বাড়িতে এসে তার এ করুণ পরিণতি হবে তা ভাবিনি।
×