ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্যপণ্যের দাম কমায় মূল্যস্ফীতি আরেক দফা হ্রাস

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

খাদ্যপণ্যের দাম কমায় মূল্যস্ফীতি আরেক দফা হ্রাস

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ খাদ্যপণ্যের দাম কমে আসায় মূল্যস্ফীতি আরও এক দফা হ্রাস পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে এসে গড় এবং পয়েন্ট টু পয়েন্ট উভয় মূল্যস্ফীতি-ই হ্রাস পেয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ডিসেম্বরে জাতীয় মূল্যস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। যা নবেম্বরে ছিল ৬.২১ শতাংশ। আর গত বছর ডিসেম্বরে এ মূল্যস্ফীতি হার ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। পয়েন্ট টু পয়েন্টের সঙ্গে সঙ্গে গড় মূল্যস্ফীতিও দীর্ঘদিন পর সাত শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৬.৯৯ শতাংশ। আগের বছর ২০১৩ সালের গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৬০ শতাংশ। অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ সূচক গত সাত মাস ধরেই নিম্নমুখী। অর্থাৎ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে যে পণ্য বা সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ হতো ২০১৪ সালের শেষ মাসে সেই পণ্য বা সেবার জন্য খরচ হয়েছে ১০৬ টাকা ১১ পয়সা। আগের মাস নবেম্বরে এ হার ৬ দশমিক ২১ শতাংশ ছিল। আর সাত মাস আগে জুন মাসে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে সেটাই শেষ পর্যন্ত সম্ভব হলো। চলতি ২০১৪Ñ১৫ অর্থবছরের বাজেটে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মূলত ডিসেম্বরে খাদ্যপণ্যের দাম আরও কমে আসায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। এটা কমে দাঁড়িয়েছে ৫.৮৬ শতাংশ, যা নবেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৪৪। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। এটা ডিসেম্বর মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। যা নবেম্বর মাসে ছিল ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনে কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতি ঘোষণা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি জানান, গ্রামীণ পর্যায়ে পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে শতকরা ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। যা নবেম্বরে ছিল শতকরা ৬ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে শতকরা ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা নবেম্বরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তিনি বলেন, শহর পর্যায়ে সাধারণ পয়েন্ট টু পয়েন্টের ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা নবেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। শহরাঞ্চলে ডিসেম্বরে খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ। যা নবেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ ও ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধির পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চাল, ডাল, মাংস, ফল অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ও তামাক জাতীয় দ্রব্যাদির মূল্য কমায় (গত মাসের তুলনায়) মাসিক ভিত্তিতে অর্থাৎ নবেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে এ খাদ্য সামগ্রী উপখাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে শতকরা শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ। অন্যদিকে বস্ত্রাদি, বাড়ি ভাড়া, আসবাবপত্র ও গৃহস্থালী, চিকিৎসা সেবা পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ ও বিবিধ দ্রব্য সেবা খাতে মূল্য বৃদ্ধির (গত মাসের তুলনায়) কারণে মাসিক ভিত্তিতে খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে শতকরা শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার কারণ হিসেবে মন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে। তাই এ খাতে ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
×