ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জেল ভেঙ্গে ফাঁসির আসামি মুক্ত করার নীলনক্সা জামায়াত-শিবিরের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৯ জানুয়ারি ২০১৫

জেল ভেঙ্গে ফাঁসির আসামি মুক্ত করার নীলনক্সা জামায়াত-শিবিরের

শংকর কুমার দে ॥ যুদ্ধাপরাধীর মামলায় বন্দী জামায়াতের নেতাদের কারাগার ভেঙ্গে মুক্ত করার নীল নক্সা তৈরি করেছে জামায়াতÑশিবির। এ জন্য আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদা ও তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারা। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে একত্রে আন্দোলনে যুক্ত থেকে তাদের অজ্ঞাতসারেই যুদ্ধাপরাধীদের কারাগার ভেঙ্গে মুক্ত করতে এই ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছে জামায়াতÑশিবির। এই ধরনের পরিকল্পনার কথা ফাঁস হয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) পলাতক নেতা তামিম আল-আদনানীর এক ভিডিও বার্তায়। গত ৬ জানুয়ারিতে ১১ মিনিটের এক ভিডিও বার্তায় এই ধরনের পরিকল্পনার কথা ফাঁস হয়েছে। বন্দী যুদ্ধাপরাধীদেরকে ইসলামী আন্দোলনের নেতা আখ্যায়িত করে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আন্দোলন দিয়ে তাদের মুক্ত করা সম্ভবপর নয় বলে ভিডিও বার্তায় বলেছেন পলাতক জঙ্গী নেতা তামিম আল-আদনানী। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে থেকে আন্দোলন করা হলেও তাদের অজ্ঞাতসারে আন্দোলনের সঙ্গে মিশে গিয়ে জিহাদে যোগদানের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে বিএনপির কাঁধে ভর করে আন্দোলনের মাঝেই জিহাদরতদের কারাগার ভেঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করতে হবে। আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বে খুরাশান নামক স্থানে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার একটি ইউনিট খোলা হয়েছে। আল কায়েদার এই ইউনিটে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশীদের একটি দলকে পাঠিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম(এবিটি)। বিএনপির ভোটের রাজনীতি অর্থাৎ গণতান্ত্রিক রাজনীতির কাছে জিহাদ কতক্ষণ টিকে থাকবে প্রশ্ন তোলা হয়েছে ভিডিও বার্তায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না এমন পাকিস্তানপন্থী জামায়াত নেতারা গত ২০১৩ সাল থেকে সহিংস সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছেন। আফগানিস্তানে খোলা আল কায়েদার ইউনিটে জামায়াতের ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র শিবিরের কর্মী-ক্যাডারদের যোগদানের আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতের প্রভাবশালী পত্রিকা হিন্দুস্থান টাইমস্ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ্ বাংলা টিমের (এবিটি) পলাতক নেতা তামিম আল-আদনানীর ভিডিও বার্তাটি ফাঁস করেছে। এই সংবাদ মাধ্যমে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবিরকে আল কায়েদার ইউনিটে যোগদানের আহ্বানের ভিডিও বার্তাটিকে একটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ওয়াল স্ট্রীট জার্নালে যা বলা হয়েছে ॥ বাংলাদেশের পুলিশ অবরোধ আন্দোলনকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। দি ওয়াল স্ট্রীট জার্নাল পত্রিকায় এই ধরনের সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, গত বুধবার থেকে পুলিশের গুলিতে এ পর্যন্ত ২ জন নিহত, শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত থেকে বিরোধী দলের এক নেতার বক্তব্য প্রকাশ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর পুলিশ প্রতিবাদকারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচনটিতে অংশ না নিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। পুুলিশের বক্তব্য ॥ পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বে যে অবরোধের ডাক দেয়া হয়েছে তা এখন চোরাগুপ্তা হামলার মাধ্যমে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ জন্য জামায়াতÑশিবিরের ক্যাডারদের সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠনের জঙ্গীদের মাঠে নামানো হয়েছে। তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেদর ওপর আক্রমণ, গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড, রেলপথ উৎপাটনসহ সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলায় মেতে উঠেছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, ভিডিপি সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। অবরোধের ডাক দেয়া হলেও পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হয়ে আসছে বলে পুলিশের দাবি।
×