ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্লাটারকে প্রিন্স আলীর চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৮ জানুয়ারি ২০১৫

ব্লাটারকে প্রিন্স আলীর চ্যালেঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৯৯৮ সালে জোয়াও হ্যাভেলাঞ্জ বিশ্বফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার সভাপতির দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এরপর থেকেই সেপ ব্লাটারের রাজত্ব। গত চার মেয়াদে ১৭ বছর ধরে সভাপতির পদটি দখল করে রাখছেন তিনি। আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে ফিফা সভাপতি পদের নির্বাচন। বরাবরের মতো এবারও ফিফার সভাপতির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ব্লাটার। আর সভাপতি নির্বাচনে এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়াইয়ে নামবেন জর্দানের যুবরাজ এবং ফিফার এশিয়া অঞ্চলের সহসভাপতি প্রিন্স আলী বিন আল হুসেইন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নিজের নাম ঘোষণা করেন তিনি। কেন তিনি সভাপতি হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। এ সময় প্রিন্স আলী বলেন, ‘আমি ফিফা সভাপতির পদটি অলঙ্কৃত করতে চাই। কারণ সংস্থাটির সব ধরনের প্রশাসনিক দুর্নীতি বন্ধ করে এখন খেলায় ফেরার সময় হয়েছে। সংবাপত্রগুলোর শিরোনামে ফুটবল থাকা উচিত, দুর্নীতি নয়।’ আর প্রিন্স আলীর এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সংগঠকরা। ২০১১ সালে এশিয়া অঞ্চল থেকে ফিফার সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হন প্রিন্স আলী। সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পরই নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যে বেশ সময় নিয়ে ভাবতে হয়েছে সেটাও জানিয়েছেন প্রিন্স আলী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্তটা মোটেও সহজ ছিল না। কয়েক মাস ধরে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার পর আমি এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এখন পরিবর্তনের সময়। বিশ্বের সেরা খেলাটির জন্য সেরা সংগঠক থাকা উচিত।’ তার এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন উয়েফা ইউরোপিয়ান ফুটবলের বর্তমান সভাপতি মিশেল প্লাতিনি। এ বিষয়ে ফ্রান্সের জীবন্ত এই কিংবদন্তি ফুটবলার বলেন, ‘আমি প্রিন্স আলীকে বেশ ভালভাবেই জানি। আমি মনে করি, ফিফার সভাপতি হওয়ার মতো সব যোগ্যতাই তার রয়েছে। ফুটবলের স্বার্থে ভবিষ্যতে কি রকম কর্মসূচী এবং প্রস্তাব গ্রহণ করেন আলী সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।’ শুধু সেপ ব্লাটারই নন। প্রিন্স আলীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফএর চেয়ারম্যান গ্রেগ ডাইকও। তার মতে, সেপ ব্লাটারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর এটাই সঠিক সময়। এ বিষয়ে গ্রেগ ডাইক বলেন, ‘ফিফার সভাপতি পদের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর প্রয়োজনীয়তা আবশ্যক। আর মিস্টার ব্লাটারের বিরুদ্ধে প্রিন্স আলীই যোগ্যপ্রার্থী।’ বিভিন্ন প্রতিবেদনের উপর ভিত্তিতে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা বলছেন আসন্ন নির্বাচনে সেপ ব্লাটারকে সহজেই পরাজিত করতে পারবেন প্রিন্স আলী। বিশেষ করে ইউরোপের যে ৫৪ ভোট রয়েছে। তার সবই পড়বে প্রিন্স আলী বিন আল হুসেইনের বক্সে। তবে ফিফার ২০৯ সদস্য দেশের থেকে প্রয়োজনীয় ১০৫ ভোটের জন্য তাকে ব্লাটারের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ে নামতে হবে। তবে সেই লড়াইয়ের প্রকৃত ফলাফল কি দাঁড়ায় তা জানার জন্য ভক্ত-অনুরাগীদের অপেক্ষা করতে হবে। ফিফার সভাপতির পদে সেপ ব্লাটারের নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে সংস্থাটির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। রাশিয়া ও কাতারের ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের স্বত্ব পাওয়া নিয়ে দুর্নীতির তীরে বিদ্ধ হয়েছেন ব্লাটার। বিশ্বকাপের সময়সূচী নিয়েও সৃষ্টি হয় চরম বিতর্ক। যা এখনও চলমান। আর সেপ ব্লাটার যে সব দুর্নীতির চক্রে আবদ্ধ। তা রোধ করার লক্ষ্যেই নির্বাচনি লড়াইয়ে নামবেন প্রিন্স আলী। এমনকি সেপ ব্লাটারের বিপক্ষে নির্বাচনে জয় পেতেও দারুণ আত্মবিশ্বাসী তিনি। তবে প্রিন্স আলীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের পর এখন পর্যন্ত কোন ধরনের বিবৃতি করেননি সেপ ব্লাটার। কৌশলগত দিক দিয়ে সেপ ব্লাটার বেশ অভিজ্ঞ। যা কাজে লাগিয়েই মূলত ফিফার সভাপতির পদে এককভাবে রাজত্ব করছেন তিনি। আর প্রিন্স আলীর বিপক্ষেও জিততে নিশ্চই কোন না কোন কৌশল আঁকছেন সেপ ব্লাটার।
×