ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

নাসিরউদ্দিন ও শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১০ ফেব্রুয়ারি দেয়ার নির

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৭ জানুয়ারি ২০১৫

নাসিরউদ্দিন ও শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ১০ ফেব্রুয়ারি দেয়ার নির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোরগঞ্জের দুই সহোদর ক্যাপ্টেন নাসির উদ্দিন আহম্মেদ ও আইনজীবী শামসুদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন বা অগ্রগতি প্রতিবেদন ১০ ফেব্রুয়ারি জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ্যাডভোকেট শামসুদ্দিনের জামিন আবেদনের ওপর ঐ দিন পুনরায় শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। আরেকটি মামলায় একই জেলার রাজাকার কমান্ডার হাসান আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী জবানবন্দীতে বলেছেন, হাসান আলী গুলি করে তার বাবাকে হত্যা করেছে। এরপর রাজাকার বাহিনী আমাদের বাড়িতে লুটপাট করে বাড়িতে বিভিন্ন দলিলাদিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। জবানবন্দী শেষে রাষ্ট্রকর্তৃক নিয়োজিত আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ১৮ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। কিশোরগঞ্জের দুই সহোদরের বিরুদ্ধে ১০ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন অথবা অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। মঙ্গলবার গ্রেফতারকৃত এ্যাডভোকেট শামসুদ্দিনের জামিনের ওপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। আসামিপক্ষে শুনানী করেন ব্যারিস্টার আতিকুর রহমান। অন্যদিকে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানী করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে ট্রাইব্যুনাল অধিকতর শুনানীর জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি পুনরায় দিন নির্ধারণ করেছেন। একই সঙ্গে ঐ দিন আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন বা অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, দুই ভাইয়ের মধ্যে নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পলাতক রয়েছেন। পুলিশ শামসুদ্দিন আহম্মেদকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়েছেন। হাসান আলী ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হাসান আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের অষ্টম সাক্ষী মোঃ শাহজাহান ভুইয়া জবানবন্দীতে বলেন আমার নাম মোঃ শাহজাহান ভুইয়া। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৭০/৭১ বছর। আমার ঠিকানা গ্রাম- কোনাভাওয়াল, থানা- তাড়াইল, জেলা কিশোরগজ্ঞ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স আনুমানিক ২৭/২৮ বছর। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত রাজারবাগ পুলিশ লাইনে পুলিশে চাকরি করতাম। ভারতে গিয়ে ১১ নম্বর সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। সাক্ষীর জবানবন্দীতে সহায়তা করেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম। আর সাক্ষীকে জেরা করেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী আব্দুস শুকুর। সাক্ষী জবানবন্দীতে বলেন, একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দুয়েক দিন পর বাড়ি ফিরে আসি। কিশোরগঞ্জের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মুসলেম উদ্দিন সাহেবের ছেলে আসামি রাজাকার হাসান আলী দারোগা ও অন্যান্য রাজাকার আমাদের বাড়িতে আক্রমণ চালায়। রাজাকার হাসান আলী পেছন দিক থেকে আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করে। বাবাকে হত্যার পর তারা আবার আমাদের বাড়িতে ফিরে আসে। ঘরে ঢুকে টাকা পয়সা, সোনা দানাসহ বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট করে। পরে বাড়িতে রক্ষিত বিভিন্ন দলিলাদিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর আসামি হাসান আলী ও অন্যান্য রাজাকাররা আমার দাদা ও দাদিকে ধরে নিয়ে প্রথমে তাড়াইল থানায় নিয়ে যায়। পর কিশোরগঞ্জের আর্মি ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করে।
×