ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাজপথে গান গেয়ে অবস্থান নিয়ে সরব ছিল ১৪ দল

প্রকাশিত: ০৫:০০, ৭ জানুয়ারি ২০১৫

রাজপথে গান গেয়ে অবস্থান নিয়ে সরব ছিল ১৪ দল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি ডাকা অবরোধ কর্মসূচী প্রতিহতে মঙ্গলবার রাজপথে সরব ছিল আওয়ামী লীগ। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে অবরোধের বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কোথাও কোথাও মিছিল ও সমাবেশও করেছে সরকার সমর্থকরা। এসব অবস্থান কর্মসূচী থেকে দলটির নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আন্দোলনের নামে কোন ধরনের নাশকতা বরদাস্ত করা হবে না। যেখানেই নাশকতা সেখানেই গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। এদিন সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করে। কোথাও কোথাও ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীর অবস্থানও দেখা গেছে। এসব অবস্থানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক ও এর আশপাশের এলাকায়। তবে দলের পক্ষ থেকে আগের দিন প্রেসবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নগরীর ১৬টি স্পটে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দেয়া হলেও কার্যত এসব স্পটে কোন তৎপরতাই চোখে পড়েনি। রাজপথে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীশূন্য ঢিলেঢালা অবরোধ চলাকালে আওয়ামী লীগের অবস্থান কর্মসূচীগুলোতেও সরকার সমর্থক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণও ছিল আগের দিনের তুলনায় অনেক কম। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার অবরোধ কর্মসূচীতে তাঁর দলের নেতাকর্মীরাই মাঠে নামেননি। এই ক্ষোভে তাঁর নির্দেশে বিএনপির সন্ত্রাসীরা গাড়ি পুড়িয়েছে। এভাবে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। জনগণ ঘৃণাভরে অবরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে দাবি করে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের ডাকা এই অবরোধ জনগণ মানেনি। জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থান নেয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে ‘ফেরারি ওয়ান্টেড আসামি’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান আওয়ামী লীগের এই নেতা। এ সময় সেখানে দল ও সহযোগী সংগঠন নেতাদের মধ্যে ড. হাছান মাহমুদ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, শাহে আলম মুরাদ, আবদুল হক সবুজ, এ্যাডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছার, পংকজ দেবনাথ এমপি, হারুনুর রশীদ, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, লিয়াকত সিকদার, গোলাম সারোয়ার কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেকক লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন মিছিল করেছে। কৃষক লীগ অবরোধবিরোধী মানববন্ধন করেছে। মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ শহীদ নূর হোসেন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। এই এলাকায় শতাধিক মোটরসাইকেল বহর নিয়েও শোডাউন করতে দেখা গেছে। ধানম-িতে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি সাংবাদিকদের বলেন, দেশের জনগণ খালেদা জিয়ার অবরোধের ডাকে সাড়া না দিয়ে যানবাহন নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছে। তারা শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রগতির অংশীদার হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, আওয়ামী লীগের আর তাদের প্রতিহত করার দরকার কী? এর আগে দিনভরই ধানম-ির কার্যালয়ের সামনে দল ও সহযোগী সংগঠনগুলো অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। নাজমা আখতার ও অপু উকিলের নেতৃত্বে যুব মহিলা লীগ কর্মীরা সেখানে গান গেয়ে কর্মসূচী পালন করেন। কিছু সময়ের জন্য এই কর্মসূচীতে যোগ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ধানমণ্ডি কার্যালয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন ডাঃ দীপু মনি, বিএম মোজাম্মেল হক, ড. হাছান মাহমুদ, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মুজিবুল হক, সুজিত রায় নন্দী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, রফিক কোতোয়াল, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ। জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে। কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবীর দিন বিএনপি ঢাকায় বিশৃঙ্খলা করেছে। এখন বিশ্ব এজতেমা সত্ত্বেও লাগাতার অবরোধের ডাক দিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা ইসলামের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এ সময় সেখানে সাবেক ছাত্রনেতা এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, বদিউল আলম, আসাদুজ্জামান দুর্জয় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×