ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অর্থনীতি সমিতির সম্মেলন উদ্বোধন ৮ জানুয়ারি

রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে বদনাম ছড়ানো হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ৭ জানুয়ারি ২০১৫

রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে বদনাম ছড়ানো হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ’র কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বলেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে ষড়যন্ত্র চলছে। এক শ্রেণীর অর্থনীতিবিদ উন্নয়নের তত্ত্ব¡ আমদানির মাধ্যমে এই ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন এ অর্থনীতিবিদ। মঙ্গলবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ১৯তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে ড. আবুল বারকাত বলেন, দেশের অর্থনীতিবিদরা দুইভাবে বিভক্ত। একশ্রেণী গণমানুষ ও দেশের কথা বলে, আরেক শ্রেণী উন্নয়নের তত্ত্ব আমদানি করেন। তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদরা বছরে কবার বিদেশে যান, আর কতদিন দেশে থাকেন, কোথায় সেমিনার করেন? বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফর বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকেন? তাদের পাসপোর্ট খতিয়ে দেখলেই এসব তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তিনি জানান। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে আবুল বারকাত বলেন, এ ষড়যন্ত্রে মুষ্টিমেয় কিছু অর্থনীতিবিদ জড়িত রয়েছেন। যাঁরা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফর প্রেসক্রিপশনে চলেন। এ ষড়যন্ত্র থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে বাঁচানো প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেটের মধ্যে আইএমএফর অফিস রয়েছে, যা পৃথিবীর কোন দেশেই নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, যা পৃথিবীর অনেক দেশেই নেই। অথচ স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে অনেক সাদা চামড়ার অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশে এসে বলেছেন, এ দেশ কখনই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। কারণ এ দেশে সম্পদ কম, জনসংখ্যা বেশি। তিনি বলেন, আজ সেই জনসংখ্যাই সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৬ শতাংশ বেশি হলেই কি বা কম হলেই বা কি? সাধারণ মানুষের ওপর এই প্রবৃদ্ধি কতটা ভূমিকা রাখে। ক’জন ভাবেন সাধারণ মানুষের কথা। এসময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে নারী নির্যাতনের সংখ্যা ২ লাখ নয়, প্রকৃত সংখ্যা ১০ লাখ হবে বলেও উল্লেখ করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ১৯তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পুনর্ভাবনা’। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলন শুরু হবে আগামী ৮ জানুয়ারি। ওই দিন সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে ১২টি সেমিনারে ১১২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। অধিবেশনগুলো বিশিষ্ট ব্যক্তিকে উৎসর্গ করা হবে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া ১০ জানুয়ারি সম্মেলনের শেষ দিন সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন ও দ্বিবার্ষিক সাধারণসভা অনুষ্ঠিত হবে। দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য ৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে দেয়া হবে সম্মাননা স্বর্ণপদক। এরা হলেন-লুৎফুর রহমান সরকার (মরণোত্তর), প্রফেসর মোশাররফ হোসেন (মরণোত্তর), ড. অশোক মিত্র ও প্রফেসর নূরুল ইসলাম। এছাড়া ২জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আজীবন সদস্য পদ দেবে অর্থনীতি সমিতি।
×